নিউজ ডেস্ক : সম্প্রতি চাঞ্চল্যকর ঘটনা রাজধানীর কলাবাগানে আনুশকা নূর আমিন ধর্ষণ ও হত্যা মামলা। মাস্টার মাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের এই ছাত্রীর রেক্টাম ও যৌনাঙ্গে মিলেছে অস্বাভাবিক ‘ফরেন বডি’র আঘাত। কি ছিল সেই ‘ফরেন বডি’? সেই রহস্যকে কেন্দ্র করে চলছে গভীর অনুসন্ধান।
আনুশকার মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে সংশ্লিষ্ট একাধিক প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যেই মেডিকেল ফরেনসিক টিম ময়নাতদন্তের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে কাজ করে যাচ্ছে সিআইডিসহ আইন প্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
এরইমধ্য থেকে তদন্ত সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্র প্রত্যক্ষ আলামত ও চিহ্নের ভিত্তিতে ধারণা করছে যে- দেশীয় আকৃতির পুরুষাঙ্গ নয়, বরং ফরেন বা বিদেশি বড় পুরুষাঙ্গ আকৃতির কিছু একটা ভিক্টিমের রেক্টামে পুশ করানো হয়েছে। যে কারণে যৌনাঙ্গ ও রেক্টাম ফেটে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়।
সংশ্লিষ্ট ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান বলেন, গত বছরের নভেম্বর থেকে দিহানের সাথে ওই ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক চলমান ছিল বলে প্রমাণ মিলেছে। আমরা দিহানের বাসা থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছি। তবে, তদন্তের স্বার্থে সকল বিষয়ে এখনই বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্ত রিপোর্টসহ অন্যান্য পরীক্ষা নিরীক্ষার ডকুমেন্ট আমাদের হাতে আসলেই এই ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছি। ফরেনসিক চিকিৎসক অভিমত দিয়েছেন- ‘বিকৃত’ যৌনাচারের কারণে ওই মেয়েটির যৌনাঙ্গ এবং রেক্টাম থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে।
আনুশকা নূরের ময়নাতদন্ত হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বাভাবিক পেনিস দ্বারা রেক্টাম ও যৌনাঙ্গ ব্যবহার করলে এতোটা ভয়াবহ পরিণতি হওয়া কথা নয়। শরীরের নিম্নাঙ্গে ‘কোন ফরেন বডি সাইজ’ কিছু একটা ব্যবহার করা হয়েছে। এক কথায় সেখানে বিকৃত যৌনাচার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি আমার পোস্টমর্টেম জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে পারি, পেনিস (পুরুষাঙ্গ) দ্বারা এই ইনজুরি মোটেও সম্ভব না। ওটা পেনিসের বাইরে অন্য কিছু ছিল।
ডা. সোহেল মাহমুদ আরও বলেন, যোনিপথ ও পায়ুপথ থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ তার (আনুশকার) মৃত্যুর কারণ হতে পারে। এই প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় সে ‘হাইপো ভোলেমিক’ শকে মারা গেছে। মানুষের মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বা দেহ থেকে অতিরিক্ত তরল বের হয়ে গেলে হৃদপিণ্ড স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারায়। এ কারণে হৃদযন্ত্র শরীরে রক্ত সরবরাহ করতে পারে না, মানুষ মারা যেতে পারে।
বিকৃত যৌনাচারের তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়ে এই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ বলেন, যোনিপথ ও পায়ুপথ দুই রাস্তা থেকেই আমরা রক্তক্ষরণের আলামত পেয়েছি। আমরা জোর জবরদস্তির কোনো আলামত পাইনি। তবে যোনিপথ ও পায়ুপথে কিছু ইনজুরি আমরা পেয়েছি। মূলত সেই ইনজুরিগুলোর জন্যই সেখান থেকে রক্তক্ষরণ হয়েছে। কিন্তু বডির অন্য কোথাও জোরাজুরির কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
যৌনাচার দলগত ছিল কি না? এমন প্রশ্নে সোহেল মাহমুদ বলেন, তার (মেয়েটি) বডি থেকে আমরা ডিএনএ সংগ্রহ করেছি। সেটি আমরা ল্যাবে পাঠিয়েছি। তার রিপোর্ট আসলে আমরা জানতে পারব এটা গ্যাং রেপ ছিল কি না।