নিউজ ডেস্ক : নির্মম, ভয়াবহ পাশবিকতা। যে গৃহকর্মীর দায়িত্বে বৃদ্ধা মাকে রেখে সন্তানরা জীবিকার প্রয়োজনে বাইরে, তার কারণেই এখন জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে সেই মা। রাজধানীর মালিবাগে ফাঁকা বাসায় গৃহকর্মীর হাতে, নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সত্তরোর্ধ্ব বিলকিস বেগম। পরে নগদ টাকা, স্বর্ণসহ সটকে পড়ে ওই গৃহকর্মী।
সোমবার সকাল সোয়া দশটা। বছর তিনকে ধরে কিডনীসহ নানা সমস্যায় ভোগা বিলকিস বেগম শুয়ে আছেন বিছানায়। পরম যত্নে তার সেবা করছেন রেখা নামের গৃহকর্মী। প্রথম দেখায় যে কেউ দেখবেন, এমন চোখেই। কিন্তু না, পরম মমতার পেছনে যে কত ভয়ংকর পরিকল্পনা লুকিয়ে ছিলো তা ভাবলে শিউরে উঠবে যে কেউ।
জোর করে বিলকিস বেগমকে বাথরুমে ঢোকায় রেখা। এরই মাঝে খুলে ফেলে তার শরীরের সব কাপড়। শীতের সকালে বৃদ্ধার গায়ে ইচ্ছেমতো ঢালা হয় ঠাণ্ডা পানি। কিন্তু ভেতরে গৃহকত্রীকে আটকাতে না পেরে বেরিয়ে আসে রেখার আসল চেহারা।
যে লাঠি বৃদ্ধ বয়সে ছিলো ভরসা, তা দিয়েই শুরু। মার খেয়ে ফ্লোরে পড়ে গেলেও ক্ষান্ত হননি একের পর এক আঘাত করা হয় মাথায়। একপর্যায়ে হাতের কাছে যা পেয়েছে তা দিয়েই চালিয়েছে নির্যাতন। আলমারির চাবির জন্য বুকে উপর চেপে বসে। বটি হাতেও তেড়ে আসেন রেখা। এসব কিছুর মাঝে তার লক্ষ্য আলমারি। একসময় অসহায়ের মতো আত্মসমর্পণ করেন বিলকিস বেগম। গলা থেকে চেইন খুলে পরে নেয় আয়েশি ভঙ্গিতে পরখ করে নেন হাতের বালা।
তারপর চাবির সন্ধান পায় নিষ্ঠুর এই গৃহকর্মী। কিন্তু খুলতে না পেরে রক্তাক্ত, অসুস্থ বৃদ্ধাকে টেনে নিয়ে বাধ্য করেন আলমারি খুলে দিতে। ড্রয়ার খুলে স্বর্ণ, নগদ টাকা, মোবাইল সবই হস্তগত করে রেখা।
পুরোটা সময় বিবস্ত্র বৃদ্ধা, নিজের হাতেই রক্ত থামাতে মাথায় বাঁধেন কাপড়। সব হাতানোর পর কক্ষে তালা দেয় রেখা। তারপর খুলে আনে টিভি। জোগাড় করে ব্যাগ। সবকিছু গুছিয়ে ফাকা বাসায় আহত বৃদ্ধাকে ফেলে বেরিয়ে যায় ভয়ংকর গৃহকর্মী।
মালিবাগের এই বাসাটি বেশপুরনো। স্বামী মৃত্যুর পর দুই ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে দুজনকে নিয়ে এতোদিন নিরাপদেই বসবাস করে আসছিলেন বিলকিস বেগম।
ব্যবসায়ীক কাজে বাসা ফাঁকা রেখে ঢাকার বাইরে যাওয়াকে দুষছেন মেয়ে মেহবুবা। মাকে হাসপাতালে ভর্তির পর মঙ্গলবার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান।
শাহজাহানপুর থানা পুলিশ বলছে, গৃহকর্মীদের নামে ছদ্মবেশে পেশাদার অপরাধীরা ঢুকে যাচ্ছে মানুষের বাসাবাড়িতে। সূত্র- চ্যানেল২৪