সাভার ও আশুলিয়া: ঢাকার আশুলিয়ার গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের দুই পক্ষের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় দফায় দফায় গুলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
ধামসোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আবু সাদেক ভুঁইয়া ও আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবির হোসেন সরকারের লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয় বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার সকালে আশুলিয়ার ভাদাইল এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ দুজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আহতরা হলেন- সেলিম, শাহিন, কবির ও ফারুক।
ধামসোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সাদেক ভুঁইয়া বলেন, ডিইপিজেডের এক্সপেরিয়েন্স ক্লোথিং কোম্পানি লি. নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানার ঝুট বিক্রয়ের বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ব্যবসা করতেন কবির হোসেন সরকার। তবে সম্প্রতি তার সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কারখানা কর্তৃপক্ষ আমার ছেলে মনির হোসেন ভুঁইয়ার সঙ্গে নতুন করে চুক্তি করে। ওই কারখানা থেকে ঝুট আনার জন্য সোমবার সকালে লেবার পাঠানো হয়। হঠাৎ কবির হোসেনের লোকজন কারখানায় প্রবেশ করে আমাদের লেবার কারখানা থেকে বের করে দেয়।
কারখানার সঙ্গে নতুন চুক্তি করার জেরে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে প্রায় ২ থেকে ৩শ সশস্ত্র লোক নিয়ে কবির সরকারের লোকজন আমার বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তারা আমার বাড়ি লক্ষ্য করে অন্তত ৫ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা ১৭টি মোটরসাইকেল ও একটি পিকআপ রেখে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে পিকআপ ও মোটরসাইকেলগুলো উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবির হোসেন সরকার বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবত ওই কারখানার সাঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ঝুট ব্যবসা করে আসছি। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি। এর মধ্যে সোমবার সাদেক ভুঁইয়ার লোকজন ওই কারখানা থেকে গাড়িভর্তি করে ঝুট আনার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় আমি আশুলিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকালে আমার ম্যানেজার সেলিম ১৬-১৭টা মোটরসাইকেলে লোকজন নিয়ে ইপিজেডের দিকে যাওয়ার সময় সাদেক মেম্বারের বাড়ির সামনে পৌঁছলে তার লোকজন হামলা চালায়। আমার দুইজন লোককে কুপিয়ে আহত করেছে।
এক্সপেরিয়েন্স ক্লোথিং লিমিটেডের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আসলাম বলেন, আমাদের কোম্পানির ঝুট বিক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে কবির হোসেন সরকারের সঙ্গে চুক্তি ছিল। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আবু সাদেক ভুঁইয়ার ছেলে মনিরের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। তবে সংঘর্ষের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।
আশুলিয়া থানা পুলিশের এসআই সামিউল ইসলাম বলেন, কবির হোসেন সরকারের লোকজন ভাদাইলে সাদেক ভুঁইয়ার বাড়ির সামনে আসলে সাদেক ভুঁইয়ার লোকজন এলাকায় ডাকাত এসেছে উল্লেখ করে মাইকিং করে লোকজন জড়ো করে পাল্টা হামলায় জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উভয়পক্ষের চারজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় পুলিশ দুজনকে আটক করেছে। ঘটনাস্থল থেকে ভাংচুর করা প্রায় ১৫-১৬টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।