রফিক মজুমদার: মালয়েশিয়াগামী ফ্লাইট ধরতে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের দিকে ছুটছিলেন কুড়িগ্রামের আকবর আলী (২৮)। রোববার দুপুরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বিমানবন্দরের ভেতরে প্রবেশ করতে গিয়ে নিরাপত্তারক্ষীদের বাধার মুখে পড়েন তিনি। নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে জানান, সম্প্রতি গুলশানে জঙ্গি হামলার পর বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিমানবন্দরে প্রবেশাধিকার সংরক্ষণ করা হয়েছে। তাই সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করা যাবে না।
পাসপোর্ট, ভিসা ও প্লেনের টিকিট দেখিয়েও প্রবেশ করতে না পেরে নিরুপায় আকবার আলী একটি লাগেজ মাথায় আরেকটি ব্যাগ হাতে নিয়ে হেঁটেই রওয়ানা হন। এ সময় তিনি নিরাপত্তারক্ষীদের উদ্দেশ্যে বলছিলেন, ‘আমি কি জঙ্গি, আমাকে এত কষ্ট দেয়ার কারণ কি?’ জন্মভূমি বাংলাদেশ থেকে বিদায়ের প্রাক্কালে আকবর আলী এভাবেই মনোকষ্টের কথা বলছিলেন।
এ সময় তিনি বলেন, জঙ্গির ব্যাগে থাকে বোমা আর তল্লাশি করা হয় আমাদের মতো সাধারণ মানুষের ব্যাগ। এসব ভাবতে কষ্ট হচ্ছে। জানি না আবার কবে দেশে ফিরবো। জঙ্গিদের হামলার খেসারত দিয়ে দেশে থেকে বিদায় নিচ্ছি। আবার দেশে এসে জানি কি অবস্থা দেখি আল্লাহই জানেন। তিনি জানান, কুড়িগ্রাম থেকে বাবা, ছোট ভাই ও ভাগ্নে আমাকে বিদায় জানাতে এসেছিলেন। বাস থেকে নেমে গাবতলী থেকে সিএনজি করে বিমানবন্দর আসি। বিমানবন্দর অভিমুখে প্রধান সড়ক থেকে বা দিকে টার্ন নিতেই নিরাপত্তায় কর্তব্যরত আর্মড পুলিশের কড়া তল্লাশির সম্মুখীন হন তিনি।
একজন পুলিশ সদস্য জানতে চান যাত্রী কজন।উত্তরে একজন বলা মাত্র ওই পুলিশ সদস্য পাসপোর্ট টিকিট দেখে বলেন, যাত্রী ছাড়া দর্শনার্থীরা সবাই চলে যান। একথা বলতেই পিছু হটেন স্বজনরা। আকবর আলী অভিযোগ করে বলেন, জীবনে এই প্রথম ত্রিশ কেজি ওজনের লাগেজটা মাথায় আর হাতে সাত কেজির একটি সাইড ব্যাগ নিয়ে দোতালার বহির্গমন গেট পর্যন্ত হেঁটে উঠতে হলো। বোঝা টানতে কষ্ট হলেও দুঃখ পাননি তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাছ থেকে দুর্ব্যবহার পেয়ে দুঃখ পেয়েছেন বলে জানান তিনি। এক কথার বদলে দুই কথা বলতেই দুর্ব্যবহার শুরু করেন তারা।
বাড়তি নিরাপত্তার নামে কেন নিরপরাধ বিদেশগামীদের কষ্ট দেয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে বিমানবন্দরে কর্মরত আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ান সদস্য সেলিম বলেন, দেশ ও জনগণের জানমাল রক্ষায় আমরা কাজ করি। যে কারণে দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে নেয়া সব সিদ্ধান্ত আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করে যাচ্ছি। এতে কেউ যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন আমরা তার জন্যে দুঃক্ষিত।-জাগোনিউজ
১২জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ