আলী আজম: পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের ছুটি শেষ কবে, তিনি ছুটিতে আছেন, কি নেই তা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু খুন হওয়ার পর থেকে বাবুল কর্মস্থলে যাননি। কর্তৃপক্ষও তাকে চাকরিতে যোগদান করার জন্য কিছু বলেননি। তার কর্মস্থলে ফেরা নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে দ্বিধাবিভক্তির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে বাবুল নিজে এ প্রসঙ্গে কিছু বলছেন না।
ঘটনার পর থেকেই এসপি বাবুল রাজধানীর খিলগাঁও এলাকার মেরাদিয়া ২২০/এ নম্বর ভুঁইয়া পাড়ায় শ্বশুরের বাসায় থাকছেন। তার শ্বশুর মোশাররফ হোসেন বলেন, বাবুল কর্মস্থলে ফিরবেন কিনা তা এখনো নিশ্চিত হয়নি। তবে কর্মস্থলে ফেরা-না ফেরা বাবুলের ওপর নির্ভর করছে না। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত এলেই তিনি কর্মস্থলে যোগ দেবেন।
তিনি বলেন, বাবুল চাকরিতে আছেন। এটা কর্তৃপক্ষ অনডিউটি হিসেবে ধরতে পারে। এ ছাড়া তিনি ইচ্ছা করে ছুটি কাটাচ্ছেন না। পুলিশ বিভাগের কেউ ফিজিক্যালি বা মোবাইল ফোনে বাবুল ও তার দুই সন্তান আক্তার মাহমুদা মাহির (৮) ও তাবাসসুম তাজমিন টাপুরের (৫) খোঁজখবর নিচ্ছে না। যা সত্যিই হতাশার বিষয়। বাবুল বাসা থেকে বের হচ্ছেন না। সন্তানদের নিয়েই সময় কাটাচ্ছেন।
জানা গেছে, এসপি বাবুলের চাকরিতে যোগদান নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে পক্ষ-বিপক্ষ তৈরি হয়েছে। একপক্ষ বলছে, বাবুল দ্রুত কর্মস্থলে ফিরে আসুক এবং সন্ত্রাসী ও জঙ্গি দমনে আগের মতো ভূমিকা রাখুক। অন্যপক্ষ চাচ্ছে, বাবুল আর কর্মস্থলে না ফিরুক। বাবুল তার কর্মের মাধ্যমে দ্রুত প্রমোশন পেয়েছেন। এটা তারা ভালো চোখে দেখছেন না।
এ ছাড়া বাবুল তার মেধা, যোগ্যতা ও চৌকস নেতৃত্বে জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে প্রশংসিত হয়েছেন। বাবুলের কর্মস্থলে ফেরার বিষয়ে পক্ষ-বিপক্ষ তৈরি হওয়ায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি।
সম্প্রতি চট্টগ্রামে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন, এসপি বাবুল আক্তার এখনো চাকরিতে বহাল আছে। তবে সে অফিস করছে না। বাবুল বলছে সে মেন্টালি ডিপ্রেসড (মানসিকভাবে বিপর্যস্ত), চাকরি করার মানসিক অবস্থায় নেই।
গত ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ের অদূরে এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে গুলি ও ছুরিকাঘাতে নির্মমভাবে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পরদিন পাঁচলাইশ থানায় বাবুল নিজেই বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। এতে অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করা হয়।
ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে ডিবি, র্যাব, সিআইডি, পিবিআই ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটি)। ২৪ জুন রাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবুলকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, বাবুলকে ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় পদত্যাগপত্রে সই নেওয়া হয়। যদিও পদত্যাগপত্রটি গ্রহণ করা না করা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি পুলিশ সদর দফতর। ওই ঘটনার পর থেকে এসপি বাবুল গণমাধ্যম কর্মীদের এড়িয়ে চলছেন।-বিডি প্রতিদিন
৩১ জুলাই, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ