মঙ্গলবার, ০২ আগস্ট, ২০১৬, ১২:২৮:৫২

এসি রবিউলের ঘরে এলো ফুটফুটে কন্যা সন্তান

এসি রবিউলের ঘরে এলো ফুটফুটে কন্যা সন্তান

নিউজ ডেস্ক: সন্তানের আগমনের খবরে সবচেয়ে বেশি খুশি হওয়ার কথা ছিল যে বাবার, সে বাবাই আজ পৃথিবীতে নেই। জিম্মিদের জীবন বাঁচাতে গিয়ে এক মাস আগে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হন ডিবি পুলিশের এসি রবিউল ইসলাম।

রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রবিউলের স্ত্রী উম্মে সালমা জন্ম দিয়েছেন একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান। তার চোখেমুখে এখনও বেদনার ছাপ। অথচ এই দিনে অনেক আনন্দে থাকার কথা ছিলো তার। বর্তমানে মা সুস্থ রয়েছেন তবে চিকিৎসকদের পরামর্শে মাকে হাসপাতালের ৩য় তলায় আইসিওতে এবং শিশু কন্যাকে রাখা হয়েছে ৭ম তলার শিশু নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (এনআইসিইউ) ইনকিউবিটরের ভিতরে।

এ ব্যাপারে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চর্ম রোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. রোকন উদ্দিন জানান, শিশুটি চর্ম রোগে আক্রান্ত। বিসিএস পুলিশের ৩০তম ব্যাচের সদস্য রবিউল মারা যাওয়ার আগে ডিবি পুলিশের উত্তর-মাদক টিমে কর্মরত ছিলেন।

রবিউল পরিবার নিয়ে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে থাকতেন। নিহত রবিউলের ভাই শামস জানান, ১২টা ২৮ মিনিটে এনাম মেডিকেলে রবিউলের স্ত্রী একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার খবরে সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন রবিউল। শিশুকন্যা জন্ম হওয়ার আগেই তিনি পৃথিবী ছেড়ে  চলে গেলেন। এমন আনন্দের দিনে রবিউলের কথা বেশি বেশি মনে পড়ছে।

হাসপাতালের বেডে উম্মে সালমা জানান, দেশের জন্য আমার স্বামী আত্মত্যাগ করেছেন। স্বামীকে হারিয়ে আমাদের যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। আমার যে সন্তান আজ পৃথিবীতে এসেছে সবাই তার জন্য দোয়া করবেন। যেন সে মানুষের মতো মানুষ হয়ে দেশ ও জাতির সেবা করতে পারে।

তাদের প্রথম সন্তান সাজিদুল করিমের বয়স এখন সাত বছর। সব সময় অপেক্ষা করে বাবার জন্য। কিন্তু শেষ হয় না সাজিদুলের অপেক্ষার পালা। নিহত রবিউলের ছোট ভাই শামসুজ্জামান সামস নিজেই ভাবীকে নিয়ে এসেছেন হাসপাতালে। ভর্তি করিয়েছেন ৫০১ নম্বর বেডে। তার পরিবার সব সময়ই রয়েছে তার পাশে।

এ ছাড়াও রয়েছে রবিউলের সহকর্মীরা ও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বড় ভাইয়েরা। এ ছাড়া মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক রাশিদা ফেরদৌস শুরু থেকেই সব ধরনের খোঁজ খবর নেয়ার পাশাপাশি যাবতীয় খরচ বহনের দায়িত্ব নিয়েছেন।

এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক রাশিদা ফেরদৌস জানান, রবিউল দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন। তার পরিবারের যাবতীয় দায়িত্ব এখন রাষ্ট্রের। তাই আমি ব্যক্তিগত এবং রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক হিসেবে তাদের সকল দায় দায়িত্ব নিজেই বহন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এদিকে দেশের জন্য আত্মত্যাগী পুলিশ সদস্য নিহত রবিউল করিমের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তার স্ত্রী ও সন্তানের চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয় বহনের কথা জানিয়েছেন এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও ঢাকা-১৯ এর এমপি ডা. এনামুর রহমান।-এমজমিন

২ আগস্ট, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে