এমটি নিউজ২৪ ডেস্ক : দিনাজপুরে আগাম জাতের নতুন আলু বাজারে উঠতে শুরু করেছে। রেল ও বাহাদুর বাজারে নতুন আলু বিক্রি করতে দেখা গেছে। খুচরা সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে নতুন আলু।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) সদর উপজেলার ১ নম্বর চেহেলগাজী ইউনিয়নের মাঝাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেনসহ কয়েকজন চাষি তাদের ক্ষেতে চাষ করা আগাম জাতের আলু বিক্রি করেন।
নতুন গেনলা জাতের আলু খুচরা বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা কেজি। আর সর্বনিম্ন বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা। বছরের নতুন সবজি ও নবান্ন উৎসবকে সামনে রেখে আলুর দাম বেশি বলে ক্রেতা ও বিক্রেতারা জানিয়েছেন।
কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি এক একর জমিতে আগাম জাতের গেনলা আলু চাষ করেছেন। বৃহস্পতিবার প্রথম বাজারে তোলেন। ১৩টি সারিতে ১৩ কেজি আলু পেয়েছেন। তবে এখনো ভালোভাবে পরিপক্ক হয়নি। আরও সাত দিন সময় লাগবে।
তিনি আরও জানান, ১৩ কেজি আলু বাহাদুর বাজারে এক কাঁচামাল ব্যবসায়ীর কাছে ১৫০ টাকা কেজি দরে ১৯৫০ টাকায় বিক্রি করেছেন। বাকি আলু পরিপক্ক ও বড় হলে তুলবেন। নতুন দামে তিনি খুশি।
কৃষক আনোয়ার হোসেনের কাছে থেকে আলু কেনা কাঁচামাল ব্যবসায়ী এনামুল হক বলেন, তিনি ১৩ কেজি আলু ১৫০ টাকা দরে কিনে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। নতুন আলুর বেশ চাহিদা রয়েছে বলে জানান তিনি।
আরেক কাঁচামাল ব্যবসায়ী মোমিনুল ইসলাম বলেন, বাহাদুর বাজারে আজই প্রথম একজন কৃষক নতুন আলু নিয়ে এসেছিলেন। তিনি ১০ কেজির মতো নতুন আলু পেয়েছিলেন। আলুগুলো ২০০ থেকে ২৮০ টাকা পর্যন্ত কেজি বিক্রি করেছেন।
তিনি আরও বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাজারে আগাম জাতের নতুন আলু পাওয়া যাবে। তখন দামও কমে যাবে। শহরের আরেকটি পরিচিত বাজার রেল বাজার হাটে নতুন জাতের আলু বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন টিয়া ও সূর্য নামের দুই চাষি (ডাকনাম, তাদের পূর্ণাঙ্গ নাম জানা সম্ভব হয়নি)। এর মধ্যে চাষি সূর্য ১০ কেজি ও টিয়া পাঁচ কেজি আলু নিয়ে আসেন।
দিনাজপুর রেল বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে নতুন আলু এসেছে মাত্র ১৫ কেজি। নতুন আলু কিনতে ক্রেতাদের প্রচণ্ড ভিড়। দাম বেশি হওয়ায় কেউ ১০০ গ্রাম আবার কেউ ৫০০ গ্রাম কেনেন।
বাজার করতে আসা প্রকাশ সরকার বলেন, ‘শুক্রবার আমাদের নবান্ন। তাই নতুন নতুন বাজারে কী উঠছে তা কিনতে এসেছি। বাজারে দেখলাম নতুন আলু উঠছে। কেজি ৩০০ টাকা। সকালে নাকি ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হইছে।’
মানিক বসাক নামের আরেক ক্রেতা বলেন, ‘সবজি হিসেবে আমাদের নতুন আলুর দরকার। সেই আলুর দাম নাকি ৪০০ টাকা! যাই হোক আমাদের প্রয়োজন নিতেই হবে, তাই বাধ্য হয়ে নিলাম। দোকানি তো ৪০০ টাকার নিচে দেবেই না, সবশেষে ৩০০ দিয়ে কিনতে পারলাম। এক কেজি নিতে পারিনি, তাই হাফ কেজি (৫০০ গ্রাম) কিনেছি।’
টিয়া নামের আলু বিক্রেতা বলেন, ‘ওল বিক্রি করছি কেজি ২৫০ টাকা আর নতুন আলু ৪০০। সজনে বিক্রি করছি ২৬০ টাকা করে।’
তিনি বলেন, ‘এখনো ওভাবে নতুন আলু উঠিনি। সজনে গাছে নেই, ওলও কম পাওয়া যাচ্ছে। তাই বাজারের দামটা বেশি। আবার কাল (শুক্রবার) নবান্ন। যারা নবান্ন করেন তাদের নতুন নতুন শাকসবজি কিনতেই হবে। তাই বাজার এত চড়া।’
আলু বিক্রেতা সূর্য বলেন, ‘আমি মাত্র ১০ কেজি আলু আনছি। বাহাদুর বাজার থেকে ২৪০ টাকা দিরে কিনেছি। বিক্রি করছি ৩০০ টাকা করে। ৩০০ টাকা দরে ক্রেতারা খাচ্ছে। কেউ ১০০ গ্রাম, কেউ ২০০ গ্রাম করে কিনছেন।’