মঙ্গলবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৬:২২:৪৭

রেশমার পর এবার গাভীকে নিয়ে তোলপাড়!

রেশমার পর এবার গাভীকে নিয়ে তোলপাড়!

দিনাজপুর : দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের সিঙড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজার রহমান।  একটি গাভি আছে তার।  প্রতিদিন সকালে মাঠে চরাতে নিয়ে গিয়ে খুঁটি দিয়ে মাঠের এক জায়গায় বেধে রাখেন গাভিটিকে।  আবার সন্ধ্যা হলে খুঁটি খুলে দিলে নিজেই আজিজারের বাড়িতে ফিরে যায় গাভিটি।

প্রতিদিনের মতো ৬ আগস্ট আজিজার মাঠ থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে ছেড়ে দেন গাভিটিকে।  কিন্তু পরে বাড়িতে এসে দেখেন গাভিটি বাড়ি ফেরেনি।  অনেক খোঁজাখুঁজির পরও কোনোও হদিস না পেয়ে এক সময় গাভিটি চুরি হয়েছে বা হারিয়ে গেছে ভেবে গাভিটি পাওয়ার আশা ছেড়ে দেন আজিজার।

গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার রামেশ্বরপুর গ্রামের নুরু মিয়া নামের এক ব্যক্তি বেত কাটার জন্য পাশের একটি জঙ্গলে যান।  জঙ্গলটি কবরস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়।  এ সময় নুরু মিয়া একটি গোঙ্গানির শব্দ শুনে এগিয়ে যান একটি কবরের দিকে।  

তিনি দেখতে পান কবরে জমে থাকা পানির মধ্যে একটি গাভি দাঁড়িয়ে আছে মুখ বাধা অবস্থায়।  নুরু মিয়া সঙ্গে সঙ্গে সিংড়া গ্রামে সংবাদ দিলে গ্রামের লোকজন ও গাভিটির মালিক আজিজার রহমান কবরস্থানে যান।  আজিজার গাভিটিকে তার সেই হারিয়ে যাওয়া গাভি বলে শনাক্ত করে।

১৯ দিন পর একটি কবরের ভেতর থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে আজিজারের সেই গাভি।  তাকে দেখতে শত শত লোক ভিড় করছে আজিজার রহমানের বাড়িতে।

গাভিটির মুখ বাধা থাকার কারণ হিসেবে আজিজার বলেন, গ্রামে এখন ফসল তোলার মৌসুম।  গ্রামের মাঠগুলোতে কৃষকের ফসল তুলে রেখেছে।  সেই ফসলের মাঠ দিয়ে যাওয়ার সময় গাভিটি অন্যের ফসল নষ্ট করবে বলে এভাবেই গাভিকে বেধে রাখার দড়ি ও খুঁটিটি দিয়ে প্রতিদিনই বাড়িতে যাওয়ার আগে গাভিটির মুখ বেধে দেন আজিজার।

১৯ দিন পর্যন্ত কিছু না খেয়ে গাভিটির বেঁচে থাকা সম্পর্কে ঘোড়াঘাট প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সামছুজ্জামান বলেন, গাভিটি জাবরকাটা শ্রেণির প্রাণী।  এ ধরনের প্রাণী এ রকম প্রতিকূল অবস্থায় খুব বেশি হলে চার থেকে পাঁচ দিন বেঁচে থাকতে পারে।  আজিজার রহমানের গাভিটির ঘটনা ব্যতিক্রম।  দুই দিন চিকিৎসা দেয়ার পর গাভিটি বর্তমানে সুস্থ রয়েছে বলে ডা. সামছুজ্জামান জানান।

এর আগে রানা প্লাজা ধসে যাওয়ার ১৭ দিন পর ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত উদ্ধার হয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছিলেন রেশমা খাতুন।  রেশমা খাতুনের বাড়িও একই জায়গায়, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে। - প্রথম আলো
২৫ আগস্ট,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে