এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: একটি গাছে একটি প্রজাতির ফল হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু একটি গাছে যদি ২৫০ জাতের ফল হয়, তাহলে বিষয়টি সত্যিই অবাক হওয়ার মতো। আজব এই আপেল গাছটি ইংল্যান্ডের পশ্চিম সাসেক্স শাইচেস্টারের কাছে উদ্যানপালনবিদ মিস্টার পল বার্নেটের বাগান বাড়িতে রয়েছে।
পল নিখুঁতভাবে এই গাছটিকে বড় করার জন্য দক্ষিণ ইংল্যান্ডের ওয়েস্ট সাসেক্সে শাইচেস্টারের কাছেই অবস্থিত শিডহ্যামে নিজের বাগানের পেছনে ব্যয় করেছেন দুই দশকেরও বেশি দীর্ঘ সময়, প্রায় ২৬টি বছর। আর এখন প্রতি শীতে নতুন নতুন বৈচিত্র্যের আপেল ফলান তিনি গাছটিতে। কাঁচা ফল হিসেবে খাওয়ার আপেলের পাশাপাশি এই গাছটিতে বর্তমানে রান্না করে খাওয়ার উপযোগী দুর্লভ সব আপেলও ফলছে।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৮৮৩ সালে প্রথম সন্ধান পাওয়া ‘উইদিংটন ফিলবাস্কেট’ এবং ১৯০৮ সালে সন্ধান পাওয়া ‘এডি’স ম্যাগনাম’র মতো আপেলও। এছাড়াও রয়েছে আরো অসংখ্য জনপ্রিয় হিসেবে স্বীকৃত বিচিত্র সব নাম ও রঙের আপেল।
বর্তমানে ৪২ বছরের বার্নেট জানান, কয়েক একরের জমির ওপর একটি নার্সারি বাগানে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। সেখানে তিনি প্রায় ৯০ রকমের আপেল গাছ নিয়ে সময় কাটিয়েছেন। তিনি নিজের আপেল গাছ চাইতেন, কিন্তু এত বিপুলসংখ্যক ধরনের আপেলের জন্য বিপুল পরিমাণ আলাদা আলাদা গাছ লাগানোর মতো জায়গা তার ছিল না।
তাই অল্প জায়গায় অনেক রকমের আপেল ফলানোর উদ্দেশ্য নিয়ে একটি ‘ফ্যামিলি ট্রি’ রোপণের কাজ শুরু করেন তিনি। প্রতি গ্রীষ্মে নতুন নতুন ধরনের এক-একটি জাতের আপেলের মুকুল ফোটানোর কাজ করতেন তিনি এবং শাখা বা কলম সংযোজনের কাজ করতেন শীতে।
নিজের গাছটিতে মুকুল ধরানোর জন্য অন্য একটি আপেল গাছে ধরা মুকুল কেটে আনতেন বার্নেট। এরপর নিজের ‘ফ্যামিলি ট্রি’ গাছটির ছালবাকলের মধ্যে তা ঢুকিয়ে দিতেন। এক্ষেত্রে পদ্ধতি হিসেবে তিনি কলমচারা রোপণের কৌশলই অনুসরণ করতেন, তবে এর জন্য ব্যবহার করতেন একাধিক মুকুল ধারণকারী ছোট ছোট শাখা।
সময়ের সাথে সাথে এই মুকুল ও শাখাগুলো মূল গাছেরই অংশ হয়ে গেছে এবং অবশেষে গাছটিতে নানারকম বিচিত্র ধরনের আপেল ফলতেও শুরু করেছে নিয়মিত।
বার্নেট জানান, গাছটিতে কাঁচা খাওয়ার উপযোগী, রান্না করার উপযোগী এবং রস তৈরির উপযোগী প্রায় সব ধরনের আপেলই ফলে। কিন্তু প্রতি বছর কেবল সবগুলো জাতের আপেলের কয়েকটি কয়েকটি করেই ফলে গাছটিতে।
ভিন্ন রঙ ও আকৃতির সবগুলো আপেল একইসাথে গাছটিতে ধরলে সে দৃশ্য হয় দেখার মতো! গাছে এত ধরনের বিপুল পরিমাণ আপেলের ভার বহনে গাছটিকে সহ্যক্ষমতার উপযোগী রাখতে মাঝেমধ্যেই কিছু ডাল ছেঁটে ফেলতে হয় তাকে, কারণ গাছটির উচ্চতা প্রায় ২০ ফুট।
কেন্টের ন্যাশনাল ফ্রুট কালেকশন থেকে আপেল কিনে নিজের ভাণ্ডার দিন দিন সমৃদ্ধ করেই চলেছেন তিনি। ন্যাশনাল ফ্রুট কালেকশনে রয়েছে প্রায় দুই হাজার দুইশ’ থেকে ছয় হাজার পর্যন্ত নানা রকমের পরিচিত ফল রয়েছে।
সূত্র: ডেইলি মেইল
১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/এমআর