এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : টমি জি থমসন। আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম নামকরা গুপ্তধন আহরণকারী। সমুদ্রের গভীর থেকে ৩ টন স্বর্ণ আহরণ করেছেন। স্বর্ণোদ্ধার অভিযানে বিনিয়োগকারীদের তাতে ভাগ দেননি। এর জের ধরে এখন বন্দি আছেন যুক্তরাষ্ট্রের জেলে। তবে তার উদ্ধার করা স্বর্ণ কোথায় আছে- তা এখনও জানা যায়নি। স্বর্ণের সন্ধান না দেয়া পর্যন্ত তার মুক্তিও মিলছে না।
ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৮৫৭ সালে আটলান্টিক মহাসাগরে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে এসএস সেন্ট্রাল আমেরিকা নামের জাহাজটি। সাউথ ক্যারোলিনার উপকূলে জাহাজটি ডুবে যায়। মৃত্যু হয় অন্তত ৪২৫ জন মানুষের। কিন্তু ওই জাহাজে থাকা ৩ টনের বেশি স্বর্ণের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। উদ্ধার হয়নি জাহাজের ধ্বংসাবশেষও। ঘটনার ১৩০ বছর পর গুপ্তধনভর্তি ওই জাহাজের সন্ধানে নামেন টমি থমসন।
জাহাজভাঙা শিল্পের তরুণ ইঞ্জিনিয়ার থমসন তান সন্ধান অভিযানের সুবিধার্থে ‘নেমো’ নামের একটি রোবট তৈরি করেন। সেই রোবট সমুদ্রের ৮ হাজার ফুট গভীরে নেমে খুঁজে বেড়ায় গুপ্তধনভর্তি ডুবে যাওয়া জাহাজের। কয়েক বছর ধরে চলে এই অভিযান। সন্ধান অভিযানের ব্যয় মেটাতে অর্থ সাহায্য নেয়া হয় অন্তত ১৬০ জন বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে। ১৯৮৯ সালের থমসনের ডুবুরিরা ঊনবিংশ শতাব্দীর বিরল স্বর্ণমুদ্রার খোঁজ পায়। এর আকার ছিল তৎকালীন ইতিহাসের সর্ববৃহৎ স্বর্ণখণ্ডের ১৫ গুণ। এ ব্যাপারে সে সময় পত্রপত্রিকায় প্রতিবেদনও প্রকাশ পায়। তবে তখন পর্যন্ত বলা হচ্ছিল জাহাজের ৯৫ শতাংশই এখনও অনাবিষ্কৃত।
পরবর্তীকালে থমসন তার গুপ্তধন উদ্ধার নিয়ে খুব একটা তথ্য প্রকাশ করেননি। ২০০০ সালে থমসনের উদ্ধার কাজে বিনিয়োগকারীদের দু’জন ফেডারেল আদালতে থমসনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, থমসন গুপ্তধনের সব স্বর্ণ বিক্রি করে একাই লাভবান হয়েছেন। ২০১২ সালে ফ্লোরিডার একটি হোটেল থেকে থমসনকে গ্রেফতার করা হয়, সেখানে তিনি ভুয়া নাম নিয়ে প্রেমিকার সঙ্গে অবস্থান করছিলেন। প্রায় চার বছর ধরে ওহাইওর জেলে বন্দি থাকলেও গুপ্তধনের ব্যাপারে কোনো তথ্য প্রকাশ করেননি থমসন। অনেক খোঁজখবর করেও সরকারও তার রহস্য উদ্ধার করতে পারেনি। সমুদ্রের গভীরে নিমজ্জিত ওই জাহাজের ধ্বংসাবশেষেও আর কোনো গুপ্তধন অবশিষ্ট নেই। -যুগান্তর।
১৬ ডিসেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম