সোমবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৫, ১১:০৪:৩১

এপ্রিল-মে মাসে সাপের সমাবেশ!

এপ্রিল-মে মাসে সাপের সমাবেশ!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : দুনিয়ায় কতই না আজব আজব জায়গা রয়েছে।  সেই আজব জায়গায় আজব আজব প্রাণীর বাস, যা শুনলে আপনি অবাক না হয়ে পারবেন না।  এমনই একটি জায়গা রয়েছে যেখানে নির্দিষ্ট সময়ে হাজার হাজার সাপ জমায়েত হয়।  মনে হয় যেন সাপের সমাবেশ।  এক অদ্ভুত কারবার।

কানাডার ম্যানিটোবা প্রদেশের নার্সিসসে স্নেক ড্রেন।  প্রতিবছর এপ্রিল-মে মাসে হাজার হাজার সাপ এখানে জড়ো হয়।  প্রায় ৭০-৮০ হাজার সাপের সঙ্গে পর্যটকদের যেন মিলন মেলা।  প্রকৃতির নিয়ম মেনে এপ্রিলের শেষ আর মে’র শুরুর দিকে যখন বরফ গলা শুরু হয়, তখন সাপ গর্ত ছেড়ে বেরিয়ে আসে।  হাজার সাপ ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়।  যেদিকেই তাকাবেন শুধু সাপ আর সাপ।  

সেখানে গেলে অতি দুঃসাহসী লোকও আঁতকে উঠতে পারেন।  এক জায়গায় একসঙ্গে এত সাপের দেখা পৃথিবীর আর কোথাও মিলবে কিনা সন্দেহ।  রেড সাইডেড গার্টার নামে বিশেষ এক জাতের সাপ এখানকার পুরো এলাকার গর্তগুলোতে কিলবিল করে।

শীতে এখানকার পাথুরে গর্তের ভেতর সাপগুলো শীতনিদ্রায় থাকে।  কোনো কোনো গর্তে একসঙ্গে ৩৫ হাজার সাপও দেখা যায়।  

গ্রীষ্মকাল সাপগুলোর প্রজননেরও মৌসুম।  গ্রীষ্মের শেষে সেপ্টেম্বরের গোড়ার দিকে শীত শুরু হওয়ার সময় সাপগুলো গর্তে ফিরে যাওয়া শুরু করে।  মজার ব্যাপার হলো, সাপ দেখার জন্য এখানে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।  প্রতিদিন প্রচুর দর্শনার্থীর আগমনও ঘটে।

দর্শনার্থীদের সাপ দেখার সঙ্গে সঙ্গে মাঝেমধ্যে হাত দিয়ে ধরারও সুযোগ থাকে।  রেড সাইডেড গার্টার বিষাক্ত সাপ নয়।  অবশ্য কখনো কখনো রেগে গেলে বাজে গন্ধযুক্ত এক ধরনের তরল পদার্থ গা থেকে ছিটিয়ে দেয়।  

তবে সব সময় সাপ দেখার সৌভাগ্য হয় না।  যখন সাপগুলো গর্ত ছেড়ে বের হয়ে আসে তখনই দেখা যায়।  এ সময়টা মাত্র দু-তিন মাস।  বাকি প্রায় আট-নয় মাস সাপগুলো শীতের হাত থেকে বাঁচতে গর্তেই ঢুকে থাকে।

তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে ৪০ ডিগ্রি পর্যন্ত নেমে যাওয়ায় সাপগুলো মাটির অনেক ভেতরে নিজেদের জায়গা করে নেয়, যাতে বরফের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।  সঙ্গে করে নিয়ে যায় ব্যাঙ আর পোকা-মাকড়ের বিশাল ভাণ্ডার, যাতে আরামে শীতটা পার করা যায়।

১৯৯৯ সালে ম্যানিটোবার আবহাওয়া অতিরিক্ত খারাপ হয়ে পড়ায় হাজারখানেক সাপ মারা পড়ে।  এছাড়া প্রতিবছরই মহাসড়কে গাড়ির নিচে চাপা পড়ে প্রচুর সাপ মারা যায়।  অবশ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করার পর সাপের মৃত্যুহার এখন অনেক কম।

এ জন্য রাস্তার ধারে বড় করে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে গাড়িচালকদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছে, যাতে সাপের গায়ের ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে না যায়।  আবার রাস্তার নিচ দিয়ে পাইপ বসিয়ে দেয়া হয়েছে, যাতে ওপর দিয়ে না গিয়ে পাইপ দিয়ে নিরাপদে যেতে পারে।
 
আসলে পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে যখন শীত পড়ে তখন বিশেষ প্রজাতির সাপগুলো এখানে ডেরা বাঁধে।  এখানে তাদের প্রজননও হয়।  শীতকাল ফুরিয়ে গেলে আবার ফিরে যায় তারা।  তবে এ স্থানটি কীভাবে বেছে নিল এ নিয়ে যত রহস্য।
১২ অক্টোবর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে