এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: নদীটির নাম ‘বেতনা’। নদীটিতে বছর জুড়ে খুব সামান্য পরিমাণ পানিই থাকে। কিন্তু মৃতপ্রায় এই বেতনা নদীতে হঠাৎ প্রবল বেগে স্রোত বইতে শুরু করেছে। এলাকার মানুষ কখনও ভাবতে পারেনি বেতনা নদীতে এভাবে আর কখনও পানি দেখা যাবে। প্রবল বেগে উজান থেকে ধেয়ে আসছে পানি। নদীর পলি কেটে তা যাচ্ছে সমুদ্রের দিকে। মানুষ তা না দেখে বিশ্বাস করতে পারছে না। তাই সাতক্ষীরার এই নদীটির পাড়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমাচ্ছে শুধু বেতনা নদীর স্রোত স্বচক্ষে দেখার জন্য।
বেতনা নদী পাড়ের মানুষেরা বলছে, এখান থেকে এক সপ্তাহ আগে উজান থেকে পানি নামা শুরু হলেও গত কয়েকদিন দিন ধরে তা চোখে পড়ছে। যত দিন যাচ্ছে উজানের ঢল ততোই প্রবল হচ্ছে। তারা আরও জানান, প্রবল বেগে উজান থেকে আসা পানি ভাটিতে উত্তর থেকে দক্ষিনে সাগরের দিকে নেমে যাচ্ছে।
গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বেতনা নদীতে কোন স্রোত নেই। ফলে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এই জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এ সরকারের আমলে সম্প্রতি জলবায়ু ফান্ডের ২৫ কোটি টাকা ব্যায়ে বেতনা নদী খনন করা হয়। কিন্তু সাতক্ষীরার প্রভাবশালী কয়েক জন দূর্নীতিবাজ ঠিকাদার ও পাউবোর দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের যোগসাজসে সে টাকাও হয়েছে নদী খননের নামে হরিলুট। এসব কারনে বেতনা নদী পাড়ের মানুষ যখন সব আশা-ভরসা ছেড়ে দিয়েছে। ঠিক তখনই বেতনা নদীতে আকস্মিক উজান থেকে নেমে আসা পানির স্রোত দেখে রীতিমত হতবাক তারা।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আসাদুজ্জামান বাবু জানান, বেতনা নদীর ঠিক ধারে শাল্যে গ্রামের তার বাড়ি। তার বাড়ীর পাশ দিয়ে প্রবাহিত বেতনা নদীতে উজানের ঢল নেমেছে শুনে প্রথমে তিনি বিশ্বাস করতে পারেনি। স্বচক্ষে দেখার জন্য শুক্রবার গিয়েছিলেন বেতনা নদীর পাড়ে। তিনি বলেন, কখনও কল্পনাও করেনি বেতনা নদীতে এ ধরণের স্রোত তার জীবতদশায় দেখতে পাবে। আল্লাহর কি রহস্য বা কুদরত তা জানিনা। বেতনা নদীতে উজান থেকে যেভাবে পানির ঢল নামছে তাতে গত ২/৩ দিনে নদী দ্বিগুন চওড়া হয়ে গেছে। গভীরতা বেড়েছে কয়েক গুন। তিনি, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডোর দৃষ্টি আকর্ষন করে আরও জানান, এই মুহুর্তে প্রয়োজন নদীর গতিপথ সৃষ্টি করে দেয়া। ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদীর সঠিক গতিপথ ঠিক করে দিতে পারলে আগের সেই বেতনা নদী তৈরী হতে সময় লাগবে না। তিনি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/এমআর