মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৭, ০১:১১:৪৪

স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করার কিছু কৌশল...

স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করার কিছু কৌশল...

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক:  অনেকেরই অনেক সময় অনেক কিছু মনে রাখতে পারে না৷ সবকিছু ভুলে যাওয়াটা একটা রোগের মতো হয় পড়েছে৷ বিশেষ করে বাজারে গেলে বা কোন কিছু কিনতে গেলে এমন ঘটনা প্রায়শই ঘটে থাকে। কারও ক্ষেত্রে কম, কারও ক্ষেত্রে বেশি। সবার মনে রাখার ক্ষমতা বা স্মরণশক্তি এক রকম থাকে না। 

সহজ-সরল বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কী বাড়বে স্মৃতিশক্তি? গ্রীক বিজ্ঞানীদের কাছ থেকে এ তথ্য পাওয়া যায় যে,  মানুষের মস্তিষ্কের ১৪ বিলিয়ন স্নায়ুকোষ একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে একটা ইলেকট্রো কেমিক্যাল চক্র তৈরি করে, একে অ্যানগ্রাম বলে।

প্রতিটা অ্যানগ্রামের পথই হল স্মরণশক্তি। জেনেটিক বিজ্ঞানীরা বলেন, পিতামাতার স্মরণশক্তি বা মেধাশক্তি বেশি থাকলে সন্তানরাও সে রকম হয়। এজন্য স্মরণশক্তির বংশগতির বৈশিষ্ট্যের একক জিনের ওপর শতকরা ৬০ ভাগ নির্ভরশীল।

বাকি ৪০ ভাগ পরিবেশ, পুষ্টিকর খাদ্য ও মস্তিষ্কের চর্চার ওপর নির্ভর করে। গবেষকদের মতে, কোনও শিশু কম বুদ্ধি বা কম স্মরণশক্তিসম্পন্ন জিন বহন করলেও ভালো পরিবেশের কল্যাণে ভালো বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে পারে। সুতরাং সহায়ক পরিবেশ পেলে এবং মস্তিষ্কের কিছু চর্চা করলে স্মরণশক্তি বাড়ানো সম্ভব। জেনে রাখা যেতে পারে স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করার কিছু কৌশল।

► আয়ুর্বেদিক উপায়
প্রাচীন আর্য়ুবেদ চিকিৎসায় স্মরণশক্তি বৃদ্ধির বেশ কিছু উপায় রয়েছে। যেমন কচি বেলপাতা খাঁটি ঘিয়ে ভেজে খেলে স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়। আবার ব্রাহ্মী শাক এমন একটি ভেষজ উপাদান, যা স্মরণশক্তি বৃদ্ধির নানা ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

মস্তিষ্ককে সজীব করার একটি আয়ুর্বেদিক উপায় হল, দশটি কাঠবাদাম, দু’টি ছোট সাদা এলাচ, দু’টি শুকনা খেজুর একটি মাটির পাত্রে আগের দিন জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে৷  পরদিন সকালে বাদামের খোসা ছাড়িয়ে, এলাচের দানা বের করে, শুকনো খেজুরের বিচি বের করে এক সঙ্গে ৩০ গ্রাম চিনির সঙ্গে মিহি করে বেটে নিতে হবে। এই মিশ্রণ ২৫ গ্রাম মাখনের সঙ্গে মিশিয়ে প্রতিদিন খেলে মস্তিষ্ক সজীব থাকে এবং স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়।

►ব্যায়াম
নিয়মিত ব্যায়াম স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে তা অনেকের কাছে অজানা? বিশেষ করে অ্যারোবিকস ব্যায়াম এক্ষেত্রে বেশি সহায়ক। তালে তালে নির্দিষ্টভাবে ব্যায়াম করতে হয় বলে তা মস্তিষ্কের চর্চারও কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পদ্ধতি মনে রাখতে মস্তিষ্কে চাপ প্রয়োগ হয়, ফলে স্মরণশক্তি স্বাভাবিকভাবেই বৃদ্ধি পায়। আবার যোগব্যায়ামও স্মরণশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। যোগব্যায়ামের কিছু আসনে মস্তিষ্ক পূর্ণ বিশ্রাম পায়। ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং মনে রাখার ক্ষমতা বেড়ে যায়।

►পুষ্টিকর খাবার
পুষ্টিকর খাবার স্মরণশক্তি বৃদ্ধিতে অনেকাংশে সাহায্য করে। মাতৃগর্ভে থাকার সময় শিশুর মস্তিষ্ক গঠনে বিশেষ কিছু উপাদানের প্রয়োজন হয়। গর্ভবতী মা যদি পুষ্টিকর খাবার খান তাহলে মস্তিষ্ক যথাযথভাবে গঠিত হয়। আমিষ ও স্নেহজাতীয় খাবার এ ব্যাপারে সাহায্য করে।
সয়াবিন, দুধ, যকৃত, বাদাম, মাখন ইত্যাদিতে রয়েছে বিশেষ উপাদান কোলিন। সাইনাপসে তথ্য আদান -প্রদানের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে কোলিন। খাবার থেকে এই উপাদান পাওয়া যায় বলে স্মরণশক্তি বৃদ্ধিতে পুষ্টিকর খাবারের যথেষ্ট অবদান রয়েছে।

►মনোযোগ
কোনও বিষয় মনোযোগ দিয়ে শিখলে বিষয়টি মনে রাখা সহজ হয়। তাই কোনও পড়া বা কাজ শেখার সময় যথেষ্ট পরিমাণে মনোযোগ দিতে হবে। মনোযোগ একটি মানসিক প্রক্রিয়া। তাই এর চর্চা করলে সহজেই স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করা সম্ভব।

►মস্তিষ্ককের বিশ্রাম
মস্তিষ্কে চাপ প্রয়োগ করে বা জোর করে মনে করার চেষ্টা করার পরও যদি কিছু মনে না পড়ে তাহলে মস্তিষ্ককে কিছুক্ষণ বিশ্রাম দিতে হবে। অন্য কিছু ভাবা বা ওই প্রসঙ্গ থেকে একেবারেই সরে আসা উচিৎ। এতে কিছুক্ষণ পর প্রয়োজনীয় বিষয়টি নিজে থেকেই মনে পড়ে যাবে। কোনও কিছু স্মরণ করার জন্য এ পদ্ধতিটি বেশ কার্যকর।

►শুনুন, পড়ুন এবং লিখুন
কোনও কিছু শেখার সময় বিষয়টি অন্যের কাছ থেকে শুনলে মনে রাখা সহজ হয়। এ কারণেই ক্লাসে শিক্ষকের লেকচার শুনলে বিষয়টি সহজেই আত্মস্থ করা যায় এবং মনে রাখা যায়। তাই কোনও কিছু পড়ার সময় জোরে জোরে কয়েকবার পড়ুন, এতে মনে রাখা সহজ হব।
পড়ার পর তা লিখলে আমাদের মস্তিষ্ক তার একটি ছবি তৈরি করে ফেলে। ফলে বিষয়টি তুলনামূলক সহজে মনে পড়ে। তাই কোনও কিছু পড়ার পর তা লেখার অভ্যাস করতে হবে। --কলকাতা২৪

এমটিনিউজ২৪/এম.জে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে