বুলবুল সরওয়ার: চার হাজার বছর আগে ধ্বংসপ্রাপ্ত ট্রয় কোথায় আছে, আদৌ আছে কি না সে সম্পর্কে আমার স্পষ্ট কোনো ধারণা ছিল না। জানতাম, নগরীটি ধ্বংস হয়েছে হেলেন-উদ্ধার পর্বের পরপরই। কিন্তু আনোয়ার আমাকে বাধ্য করল মত বদলাতে। তার জ্ঞানগর্ভ বক্তৃতায় শেষ পর্যন্ত বিশ্বাস করতে হলো যে, ট্রয় নগরীটি এখনো আছে এবং এই তুরস্কেই। ইস্তাম্বুল থেকে মাত্র ছয় ঘণ্টার দূরত্বে হেলেনের সেই শহর! রাতে একেবারেই ঘুম হলো না। মার্মারা ও কৃষ্ণসাগরের দ্বৈত আন্দোলনে শুধু হাউজ বোট নয়, কাঁপতে লাগল আমার মোহমুগ্ধ চেতনা ও লোভাতুর হৃদয়।
রাতে এসে থেকেছি এজিয়ান সাগর সংলগ্ন কানাক্কাল শহরে। সকালের প্যাকেজে আমাদের সাথে রয়েছে নয়জন শ্বেতাঙ্গ এবং দুইজন জাপানি। জাপানিরা ইতিহাস খুব বেশি জানে না, জানতে চায়ও না। তবু তাদের ভ্রমণস্পৃহা ঈর্ষণীয়। সারা পথ ওদের ক্যামেরা কিক-কিক করে আর মুখ ছড়ায় দুর্বোধ্য কিচিরমিচির! শুনতে শুনতে কখন যে ১০ মাইল রাস্তা পার হয়েছি, টেরই পাইনি... ইয়া আফান্দেম, পারদন-পারদন। হস বুলদুক, বির তানে বিলেত লুৎফুন... দুঃখিত মহোদয়রা, সবাইকে স্বাগতম; দয়া করে টিকিট নিন।
নেমে দেখি, সামনেই রোড সাইন: হিসারলিক। ব্র্যাকেটে ‘ত্রয়া’ (Tro)। পায়ের ভর করা আমার সর্বাঙ্গ কেঁপে উঠল। ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় গেলেই আমার এই ঘটে। পানিপথ! পানিপথ!! শুনে একবার গভীর রাতে রাস্তায় নেমে দিল্লির বাস হারিয়েছিলাম; ফেরাউনের কফিন বক্সে সস্ত্রীক ঢুকে জরিমানা দিয়েছিলাম মিসরীয় বিশ পাউন্ড; ভ্যাটিকানে মিকেল অ্যাঞ্জেলোর ছবির খুব কাছাকাছি গিয়েছিলাম বলে পুলিশ আমায় দুই ঘণ্টা জেরা করেছিল; দার্জিলিংয়ের বিদ্রোহী-নেতা সুভাষ ঘিসিংয়ের সাথে দেখা করতে চাওয়ায় জেলে থাকতে হয়েছিল ছত্রিশ ঘণ্টা। এই অস্বাভাবিক চাঞ্চল্য আমি এড়াতে পারি না। এ আমার বোকামি না অসচেতনতা তা-ও বুঝতে পারি না।... এবারও পাশের মহিলার কাঁধ জড়িয়ে ধরে বললাম, ‘হে অতীত তুমি গোপনে গোপনে, গান গেয়ে যাও ভুবনে ভুবনে...।’
মহিলাও আবেগপ্রবণ। আমাকে কোমল আলিঙ্গনে চাপ দিয়ে বললেন, ‘ট্রান্সলেট ইট। আই ওয়ান্ট টু লিসেন’।
আনোয়ার হাসছে।
তার সাথে আমি মিসরসহ মধ্যপ্রাচ্যের প্রাণকেন্দ্রগুলো ঘুরেছি। সে আমার সাথী হয়েছে গ্রিসে, রোমে এবং প্যালেস্টাইনের ঝঞ্ঝাুব্ধ পথে। ইয়েমেনের এই তরুণ আমার জীবনের অনেক আবেগের কথা জানে। ইংরেজি অনুবাদ উচ্চারণ করতে করতে আমি পা বাড়ালাম ইতিহাসের কোহিনূরসুন্দরী ট্রয়ের অতল গহ্বরে।
জায়গাটা ট্রয় নামে জগদ্বিখ্যাত হলেও এর ল্যাটিন নাম ট্রুভা। খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ থেকে রানী হিসেবে রাজত্ব করে অবশেষে খ্রিষ্টপূর্ব ১২০০ সালে নগরীটি পরিত্যক্ত হয়। কবি হোমারের ইলিয়াড ও ওডিসি’তেই লুকিয়েছিল ট্রয় এবং তার হেলেন-উপাখ্যান। ট্রুভার আশপাশেই আরো জনপদ গড়ে ওঠে যার ওপর আধিপত্য বিস্তার করে ইরাকি, গ্রিক, মেসিডোনীয় ও রোমানরা। জেনারেল সুল্লা শেষবার একে পুনর্নির্মাণ করার চেষ্টা করেন কিন্তু কনস্টাটিনোপলের উত্থানে ট্রয়ের গুরুত্ব পুরোপুরি হারিয়ে যায়। এর অস্তিত্বের কথা মানুষ বিস্মৃত ছিল প্রায় দুই হাজার বছর।
আমরা কাঠের সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামছি। গাইড ইয়াসমিনার ধারা বর্ণনা তার আধখোলা স্কার্টের চেয়েও মনোহর।... চার্লস ম্যাকলারেন নামের এক প্রত্নতত্ত্ববিদ ১৮২২ সালে নতুন করে ট্রয় আবিষ্কার করেন। যদিও সবার ধারণা ছিল ট্রয় এজিয়ান সাগরে তলিয়ে গেছে! জার্মান খননকারী হেনরিক স্কেলিমান জায়গাটায় তিনবার ‘আক্রমণ’ চালান। আক্রমণই বলছি। কারণ স্কেলিমান আসলে কোনো প্রত্নতত্ত্ববিদ ছিল না। দক্ষিন আফ্রিকার সোনা উদ্ধার এবং ওয়েস্টার্ন লুটতরাজের রুদ্ধশ্বাস-রোমাঞ্চকর কাহিনী পড়ে পড়ে জায়গাটার উপর স্কেলিম্যান এমনভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েন যাকে নির্যাতন বললে কম বলা হয়।
১৮৭০ থেকে ১৮৯০ সালের মধ্যেই তুরস্কের ওসমানী পতাকা মর্যাদা হারাতে শুরু করে। সেই সময়ে স্কেলিম্যানের তস্করবৃত্তিতে বাধা দেয়ারও কেউ ছিল না। প্রথম দিকে জানেসারিরা এসেছিল বটে কিন্তু পুরনো তরবারি, ছোরা আর খঞ্জর দেখে তারা উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। ও তো যেকোনো কামারের দোকানেই পাওয়া যায়!
স্কেলিম্যান প্রথমে উদ্ধার করে অ্যাপোলোর স্বর্ণমূর্তি। এই অতি মূল্যবান প্রত্নতাত্ত্বিক তৈজস লুকানোর জন্য সে এটিকে মাটি-কাদা মেখে আবর্জনায় ফেলে রাখে। এরপর সে পায় ট্রয়ের ভাঙা সিংহাসন। এভাবে এগোতে এগোতে তার তস্কর বাহিনী রাজা প্রিয়ামের প্রাসাদের তোরণ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। দুর্ভাগ্য তুর্কিদের! পাশারা এসবের খবরই রাখেনি। সেই সুযোগে, বন্ধুবান্ধবের মাধ্যমে প্রতিটি আবিষ্কার গিয়ে জমা হতে থাকে বার্লিনে; স্কেলিম্যানের নিজের বাড়িতে। তার লোভের কারণে, প্রত্নবিজ্ঞানীরা দেখার আগেই মূল প্রাসাদ ভেঙে পড়ে।... প্রকৃতি অবশ্য এর প্রতিশোধ নিয়েছে। গ্রিসের এক দ্বীপে স্কেলিম্যান মারা যান নিজেকে রাজা জিউসের পোষ্য-পুত্র ভাবতে ভাবতে। আর ওদিকে বার্লিনে তার বাড়ি থেকে সমুদয় নিদর্শন লুট করে ‘পুশকিন মিউজিয়াম’কে সমৃদ্ধ করে রুশ বাহিনী !...
আবেগাক্রান্ত আনোয়ার তাকে সান্ত্বনা দিতে সামনে এগিয়ে এলো : দেখো বোন, এ দুঃখ তোমাদের একার নয়। রানী বিলকিসের রাজপ্রাসাদও ধূলিসাৎ হয়েছে রশিদ বাহিনীর ঘোড়ার খুরে। বাইবেলে বর্ণিত কুইন-অব-শেবা’র প্রাসাদে এখন তুমি গুটিকতক মাটির ঢিবি ছাড়া কিছুই দেখতে পাবে না। ইয়েমেনবাসীরা তার জন্য কাঁদতেও ভুলে গেছে!’
তা ঠিক। বলল ইয়াসমিনা, ‘আমাদের সবটা অবশ্য স্কেলিম্যান ধ্বংস করতে পারেনি। এই যে, এ দিকে দেখো, এম্ফিথিয়েটারের কিছুটা এখনো রয়েছে। মনে রেখো, এটি রোমের এম্ফিথিয়েটার থেকে ১০০০ বছর আগে গড়া।’
ফরাসি পর্যটক শিলা বলল, এই ট্রয় কত নম্বর ট্রয়, মাদাম ইয়াসমিনা?
এটি নয় নম্বর ট্রয়। প্রত্নতাত্ত্বিকরা খুঁজে পেয়েছেন আরো আটটিকে। বিস্ময়ের ব্যাপার যে, ট্রয় বারবার ধ্বংস হয়েছে আবার তার ওপরেই গড়ে উঠেছে নুতন ট্রয়। যেন ইতিহাসকে কাপড়ের ভাঁজে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে একটির ওপর আরেকটিকে উপুড় করে।
‘হেলেন কোন যুগের, ইয়াসমিনা?’ জানতে চাই আমি।
মধুর কটা তার চোখে মুখে : আমি থাকতেও হেলেনকে দরকার?
ওহ্ হেলেন? হেলেন এই নবম ট্রয়ের। স্পার্টান সম্রাট মেনেলাসের হাতে ধ্বংসপ্রাপ্ত সেই ট্রয়েই আমরা দাঁড়িয়ে আছি।
ডিরেক্টর প্রফেসর সুলায়মান মুস্তাফা আমাদের বোঝালেন নৃতাত্ত্বিক নিদর্শনাদি পানির কুয়া, প্রাসাদের সিঁড়ি, ঘরের খিলান ও ইটের সুরকির মধ্যে যৌক্তিকতা স্থাপন করা তার উপস্থাপনা যেমন কঠিন, তেমনি বিস্ময়কর। শুধু এ টুকু মনে গেঁথে নেয়া গেল যে, ট্রয় ছিল সুদৃঢ় প্রাচীরবেষ্টিত চমৎকার নগরী। ৭৫০ থেকে ২০০০ মিটার ছিল নগরীর ব্যাসার্ধ। প্রাচীনকালে এ ধরনের শহরে শুধু রাজা ও তার অমাত্যরাই বসবাস করত। নগরীর চার পাশে থাকত প্রজারা। সেটিকে শহর ধরা হলে ট্রয় দারদানেলস্ (কানাক্কাল) থেকে বিস্তৃত হয়ে দেিণ প্রায় পনেরো মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত। অর্থাৎ প্রাচীন রোম থেকে তার আয়তন ছিল দেড় গুণ বড়।... নয়টি ট্রয়ের ধ্বংস কাহিনীও অদ্ভুত। প্রথম ও দ্বিতীয় ট্রয় পুড়েছে আগুনে। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম ট্রয় মিশে গেছে ধূলিকনায় যার কোনো ইতিহাস পাওয়া যায় না।
ষষ্ঠ ট্রয় ভুমিকম্পে তলিয়েছে। সপ্তম ট্রয়- স্বর্ণযুগের স্মারক হিসেবে এশিয়া মাইনরের সবচেয়ে খ্যাতিমান সমুদ্রবন্দরে পরিণত হয়েছিল। পরের ট্রয় আবারো ইতিহাসের ধূলায় হারিয়ে গেছে। নবম ট্রয়কে কীর্তিমান করেছে হেলেন যদিও সে একজন স্পার্টান। এবং সেই ট্রয়ও ভস্মীভূত হয়েছে আগুনে!
হেলেন সম্পর্কেও অনেক অজানা তথ্য দিলেন প্রফেসর সত্যিকার হেলেন কতটা সুন্দরী ছিল, সে তথ্য জানা যায় না। সে কি প্যারিসের প্রেমে পড়েছিল, না কি প্যারিস তাকে লুট করে এনেছিল, তা-ও রহস্যাবৃত। তার বিয়ে হয়েছিল কমপে তিন বার; রাজা মেনেলাস, প্যারিস ও তার ভাই ডাইফোবাসের সাথে। মেনেলাসকে সে একটি কন্যা উপহার দেয় নাম হারমিয়ন। ট্রয় যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগেই প্যারিস নিহত হয় এবং তার দুই ভাই হেলেনাস ও ডাইফোবাস ভ্রাতৃবধূকে পাওয়ার জন্য দ্বন্দ্বযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। হেলেনাসকে পরাজিত করে হেলেনকে লাভ করে ডাইফোবাস। যুদ্ধ শেষে মেনেলাসের হাতে নিহত হয় ডাইফোবাস। হেলেনকেও মারতে উদ্যত হয় মেনেলাস। কিন্তু তখনো তার রূপ ছিল এমন নয়নাভিরাম যে, মেনেলাস আবার তার প্রেমে পড়েন। শেষ জীবন তারা মিসরে কাটায়। ঐতিহাসিকের মতে, তাদের মৃত্যু হয় গ্রিসের থেরাপিয়নে...।
আমাদের আবেগকে তুঙ্গে তোলার জন্যই ফরাসি সুন্দরী জ্যাকুলিন জানতে চায় : প্রফেসর, হেলেনের সাথে কত পুরুষের সম্পর্ক ছিল?
প্রফেসর হেসে বললেন, আধুনিক বিজ্ঞানীরাই যখন রমণীর মনকে মাপতে পারে না, আধা-পুরাণ নিয়ে টানাটানি করে লাভ কী, মাদমোয়াজেল? তবু বলি : বিয়ের আগেই থেসিয়াস তাকে নির্যাতন করে যে কারণে পিতা জিউস তাকে রাজা মেনেলাসের হাতে তুলে দেয়। এরপর প্যারিস তাকে অপহরণ করে এবং প্যারিসের ছেলে করিথাসের সাথেও তার প্রণয় গড়ে ওঠে। ফলশ্র“তিতে করিথাসকে হত্যা করে প্যারিস। যারা বিশ্বাস করেন যে হেলেন আসলে দেবী তাদের ধারণা, স্বর্গে একিলিসের সাথে হেলেনের মিলন হয়েছে।
একিলিস? মানে প্যারিসের ভাই? ট্রোজান মহাবীর একিলিস?
জি-হ্যাঁ।
আমরা মোহিত, বিস্মিত, আপ্লুত।
জাপানি পর্যটকদের মধ্যে একজন এক মুঠো মাটি নিয়ে বলল, ‘আই’ল মেক অ্যানাদার পোর্ট্রেট অব হার।’
ইয়াসমিনা আঁতকে উঠে বলল, ‘নো, মাই ফ্রেন্ড, নো। আমরা বিশ্বাস করি, ট্রয় থেকে কেউ কিছু নিতে চাইলেই যুদ্ধ অনিবার্য সে মাটি হোক কিংবা মানবী! আমরা চাই, পৃথিবী আপাতত শান্ত থাকুক। দয়া করে গাল্লিপলির আতার্তুককে জাগিয়ে দেবেন না।’
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বীরবিক্রম মোস্তফা কামাল দার্দানেলসে ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন অস্ট্রেলীয়-নিউজিল্যান্ডার (আনজাক) বাহিনীর বিপুল আক্রমণকে। সে ইতিহাস পশ্চিমা শক্তির কাছে কান্নার হলেও তুরস্কের জন্য সবচেয়ে বড় গৌরবের। ইয়াসমিনার স্বাজাত্যবোধকে সম্মান জানিয়ে জাপানি পর্যটক মুঠি ঝেড়ে ফেলল।
ইয়াসমিনা তার হাতে হাত মিলিয়ে বলল, ‘স্যরি, মাই ফ্রেন্ড। ফর দ্য শেক অব হেলেন, আই অফার ইউ অনলি থ্যাংকস।’
আমরাও ‘থ্যাংক ইউ’ বলে পা বাড়ালাম গাল্লিপলির দিকে। যদিও জানি-পৃথিবীর বহু যাত্রাই যাতায়াত নয়; আবার অনেক নির্গমনই অগস্ত্য যাত্রা!
হেলেনসমগ্র
[একটি সোনালি আপেলের গায়ে লেখা ছিল ‘সেরা সুন্দরীর জন্য’। সেই নিয়ে তিন রূপসী আফ্রোদিতি, হেরা ও অ্যাথেনার মধ্যে ঝগড়া বিচার গেল রাজা জিউসের কাছে। তিন নারীই জিউসের ঘনিষ্ঠ। বুদ্ধিমান জিউস ব্যাপারটা গড়িয়ে দিলেন রাজপুত্র প্যারিসের ওপর।
তিন সুন্দরীই প্যারিসকে পটানোর চেষ্টা করল। জিউসপত্নী হেরা বলল, আমি তোমাকে দেবো পুরো এশিয়া এবং তার বিপুল সম্পদ; জ্ঞানের দেবী অ্যাথেনা তাকে সব যুদ্ধ-জয়ের নিশ্চয়তাসহ শ্রেষ্ঠ জ্ঞানীর মুকুট সাধল; প্রেমের দেবী আফ্রোদিতির প্রতিশ্র“তি অতি ুদ্র সুন্দরী শ্রেষ্ঠা হেলেনকে দেবো তোমায়। ট্রয়ের ছেলে প্যারিস তৃতীয় সুন্দরীর প্রস্তাবে মাথা নোয়াল।
পুরস্কার আনার জন্য স্পার্টায় গেল সে। স্পার্টান রাজা মেনেলাস গেছেন যুদ্ধে। আফ্রোদিতির চালে রাজা-রানী হেলেন প্রেমে জড়াল অতিথির। সুযোগমতো হেলেনকে নিয়ে পাল তুলল প্যারিসের জাহাজ। ক্রুদ্ধ মেনেলাস পাগলপ্রায়। স্পার্টার বিজ্ঞ সংসদ সিদ্ধান্ত দিলো যুদ্ধের; শিা দিতে হবে ট্রোজানদের। ১২২৭টি রণতরী এবং বিপুল অস্ত্রের সেনাপতিত্ব পেল রাজভ্রাতা (বীরশ্রেষ্ঠ) আগামেনন।
কিন্তু দশ বছরের যুদ্ধেও নত হলো না ট্রয়। শেষ পর্যন্ত অদ্ভুত এক কাঠের ঘোড়া ‘উপহার’ রেখে পিছু হটল স্পার্টানরা। শত্র“র পলায়নে উল্লসিত ট্রয়বাসী সেই ঘোড়া নগরীর অভ্যন্তরে টেনে নিয়ে গেল। গভীর রাতে ঘোড়া থেকে নেমে এলো লুকানো সৈন্য। খুলে দিলো নগর তোরণ। ততণে ফিরে এসেছে স্পার্টান বাহিনীর হাজার রণতরী।
...পরের কাহিনী সবাই জানেন। প্রতিশোধের আগুনে ছাই হলো ট্রয়; কাব্যের চিরায়ত বিষয় হলো হেলেন।]
এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস