শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫, ১০:৫৭:২৩

এইচএসসি পরীক্ষা পেছানো নিয়ে যা জানা গেল

এইচএসসি পরীক্ষা পেছানো নিয়ে যা জানা গেল

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : দেশে আবারও করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। ভাইরাসের প্রভাবে সারা দেশে সংক্রমণ বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে আগামী ২৬ জুন থেকে অনুষ্ঠেয় এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে একধরনের উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

যদিও আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ড জানিয়েছে, পরীক্ষা পেছানোর মতো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সবাইকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষা কেন্দ্রে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

তারা বলছেন, শঙ্কা থাকলেও পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে শুরু করা হবে। ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শেষ করেছে সব শিক্ষা বোর্ড। উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছেছে প্রশ্ন এবং উত্তরপত্র। সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এজন্য অনানুষ্ঠানিকভাবে একাধিক বিকল্পও ভেবে রাখা হচ্ছে।

এদিকে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) তথ্যমতে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে শনিবার পর্যন্ত সারা দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৪৭ জন। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। অন্যদিকে একই সময়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যে সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৭৩৯; মারা গেছেন ২৯ জন। গত কয়েক দিনে ডেঙ্গুর পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। 

এবার এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ জন ও ছাত্রী ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ জন। পরীক্ষা হবে ২ হাজার ৭৯৭ কেন্দ্রে। তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে ১০ আগস্ট। এরপর ব্যবহারিক পরীক্ষা ১১ থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।

এ বিষয়ে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এসএম কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন, আমরা যথাসময়ে পরীক্ষা গ্রহণের সব ধরনে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। এখন পর্যন্ত পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে গ্রহণের সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে। যদিও করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরাও দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি। তবে ঈদের ছুটির পর রোববার আমাদের অফিস খুলছে। আন্ত:মন্ত্রণালয়ের বৈঠক রয়েছে, সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

মিজান মালিক নামে নডরডেম কলেজের এক পরীক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য দ্রুত একটি করণীয় ঠিক করা দরকার। তারা এর আগেও করোনাভাইরাস মোকাবিলা করে আসছে। যেহেতু আবার সংক্রমণ বাড়ছে। তাই এক ধরনের ঝুঁকি রয়েছে। আমরাও উদ্বেগের মধ্যে রয়েছি। পরীক্ষার্থীদের মনোবল বৃদ্ধির জন্য দ্রুত একটি নির্দেশনা প্রকাশ করার দাবি জানান তিনি।  

পরীক্ষা নিয়ে একাধিক শিক্ষক উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। তারা বলছেন, নিজের কলেজে কেন্দ্র থাকায় ডিউটি পড়েছে, করতেও হবে। ডেঙ্গু ও করোনা বেড়ে যাওয়ায় নিজের ও পরীক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। কারণ পরীক্ষা তিন ঘণ্টার হলেও শিক্ষক-পরীক্ষার্থীদের অনেক আগে কেন্দ্রে আসতে হয়। ভিড়ের কারণে স্বাস্থ্যবিধি মানা কঠিন।

বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিঞা মো. নূরুল হক বলেন, এ মুহূর্তে আলিম পরীক্ষা গ্রহণের সব ধরনে প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এতে কোনো ধরনের ঘাটতি নেই। করোনা বা ডেঙ্গুর প্রকোপ মহামারি আকারে ধারণ করলে তখন পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এছাড়া ঈদুল আজহার পর রোববার আমাদের অফিস খুলবে। আন্ত:বোর্ডের সঙ্গে আমাদের মিটিং রয়েছে। সেখানে কী সিদ্ধান্ত আসে সেটি মিটিং সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রুহুল আমিন বলেন, কারিগরি বোর্ড পরীক্ষা গ্রহণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। তবে আজ আন্ত:মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের বৈঠক রয়েছে। সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে