সোমবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৭, ০৪:৩৫:১৯

মুসলিমদের দান করা জমিতে তৈরি হচ্ছে হিন্দুদের মন্দির

মুসলিমদের দান করা জমিতে তৈরি হচ্ছে হিন্দুদের মন্দির

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : মুসলিমদের দান করা জমির ওপর তেহট্টে তৈরি হচ্ছে বিশালাক্ষীর মন্দির। প্রায় আট লক্ষাধিক টাকা মূল্যের এই জমি নিশঃর্তে মন্দির তৈরির জন্য দান করেছে মুসলিম পরিবার। পড়শির এই দানে খুশি এলাকার হিন্দুরা।

পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার তেহট্টের প্রাচীন ধর্মীয় পীঠস্থান সিনেমাহলপাড়ার এই বিশালাক্ষীতলা। অনেক আগে এখানে পুজোপাঠ হলেও মাঝে কিছুদিন বন্ধ হয়ে যায়। এখনও অগ্রহায়ণ মাসে বিশালাক্ষীতলায় বাৎসরিক মহোৎসব হয়ে থাকে। সেই পুজোয় এলাকার সব সম্প্রদায়ের মানুষ অংশ নেন।

এখানে উৎসব ও মন্দির তৈরির জন্য তেমন জায়গা ছিল না। পুজো হত একটি কুলগাছের নিচে। সেখানে ছিল অনেক পুরনো একটি ভাঙাচোরা বেদি। কোনও রকমে পুজো হত। যে কারণে মন্দির করার জন্য জায়গা দরকার হয়ে পড়ে। বেদির পাশের জায়গাটি এলাকার ইসমাইল মণ্ডল, আদম মণ্ডল ও হারান আলি মণ্ডলের।

সেই জমি না পেলে মন্দির তৈরি সম্ভব নয়। এই কথা জানার পর তিনভাই মন্দির তৈরির জন্য জমিদান করার সিদ্ধান্ত নেন। তারা বিশালাক্ষীতলার পুজো কমিটির কাছে সেই প্রস্তাব দেয়। পুজো কমিটি সেই প্রস্তাব সাদরে গ্রহণ করে। এরপরই মন্দির তৈরির জন্য ওই জমি দানপত্র করে দেন মুসলিম ভাইয়েরা।

এই বিষয়ে ইসমাইল মণ্ডলের ছেলে লতিবুদ্দিন বললেন, ‘‌আমরা ছোটবেলা থেকে দেখছি এখানে পুজো হয়। পুজোর দিন হিন্দু–মুসলিম সব সম্প্রদায়ের মানুষ পাতপেড়ে প্রসাদ গ্রহণ করেন। বাবা, কাকারা এই দেখে মন্দির তৈরি ও প্রসাদ খাওয়ানোর জন্য এই জায়গা দান করার মনস্থির করেন। দানপত্র করে দেন। আমরা খুব খুশি যে আমাদের দান করা জমিতে এই মন্দির তৈরি হচ্ছে। আমার বাবা– কাকারা মনে করতেন সব ধর্মকে ভালবাসতে পারলে নিজের ধর্মপালন করা হয়।’‌

পুজো কমিটির সম্পাদক ভক্তরাম বিশ্বাস বললেন, ‘‌হারানবাবুদের দান করা জমির ওপর আমরা এই মন্দির তৈরি করছি। ওরা জমিদান করে এলাকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির রাখলেন। ওঁদের আমরা পুজোর সময় আমন্ত্রণ করি। ওরা পুজোয় অংশ নেন।’

পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য মোহম্মদ ইঞ্জিল আলি বলেন, ‘‌আমরা এই পুজোতে সবাই অংশগ্রহণ করি। তেহট্টে আমাদের সব সম্প্রদায়ের মানুষ সব ধর্মের উৎসবে যোগ দিয়ে আনন্দ উপভোগ করেন। আমাদের সম্প্রদায়ের মানুষ মন্দির তৈরি করার জন্য জমি দিয়েছে বলে আমরা খুব গর্বিত।’‌
এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে