মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৬:২৬:১১

জৈষ্ঠের ফলে চোখের উপকারিতা

জৈষ্ঠের ফলে চোখের উপকারিতা

ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ: বাংলাদেশে বর্তমানে মধু মাস চলছে। জৈষ্ঠ মাসে বা মধু মাসে বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণ আম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস, জাম, জামরুল পাওয়া যায। এই ফলসমূহে প্রচুর ভিটামিন-এ পাওয়া যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী ভিটামিন-এ পাওয়া যায় আম, কাঁঠালের মধ্যে। ভিটামিন-এ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ, প্রতঙ্গের বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং চোখের দৃষ্টি শক্তির মূল উপাদান রেটিনায় রডপসিন তৈরীতে সহায়তা করে ও চোখের রেটিনার একটি পর্দা সুসংগঠিত রাখে।

বাংলাদেশের মানুষের জন্য প্রতিদিন নিুলিখিত হারে দৈনিক গড় প্রয়োজন -
১। নবজাত শিশু (০-১ বৎসর) ৩০০-৪০০ মাইক্রো গ্রাম
২। শিশু (১-১২ বৎসর) ২৫০-৬০০ মাইক্রো গ্রাম
৩। কিশোর (১২-১৮ বৎসর) ৭৫০ মাইক্রো গ্রাম
৪। গর্ভবতি মহিলা ১১৫০ মাইক্রো গ্রাম

মহিলাদের গর্ভাবস্থায় এবং সন্তান জন্মের ১ বৎসর পর্যন্ত ভিটামিন-এ এর প্রয়োজনীয়তা বেশী থাকে। সবুজ শাক-সব্জি, হলুদ ফলমূলে, দুধ, দুধজাত দ্রব্য, কলিজা, কডলিভার তেল ও মাছের তেলে ভিটামিন এ পাওয়া যায়।

কেন ভিটামিন-এ এর অভাব হয়?
ক) অর্থনৈতিক দুরাবস্থা।
খ) খাদ্যাভাস।
গ) ভিটামিন যুক্ত খাবার না খাওয়া।
ঘ) খাবার হজম না হওয়া যেমন-ডায়রিয়া, আমাশয় ও ক্রিমি রোগে।
ঙ) ভিটামিন-এ অতিরিক্ত প্রয়োজন মূহুর্তে না খাওয়া যেমন -

ক্স    বারন্ত বয়স
ক্স    গর্ভাবস্থান
ক্স    অসুস্থতা কাটিয়ে সুস্থতা ফিরিয়ে আনার মুহুর্তে

চ) লিভারের অকার্যকারিতার জন্য ভিটামিন-এ শরীরের কাজে না লাগা।
ছ) ভিটামিন-এ সম্পর্কে অজ্ঞতা।
জ) পুষ্টিহীনতা।

ভিটামিন-এ এর অভাবে চোখে কি কি রোগ হয় ঃ
১)    রাত কানা।
২)    কনজাংটিভার শুস্কতা ও দাগ হওয়া।
৩)    কর্ণিয়া শুস্কতা ও ঘা হওয়া।
৪)    রেটিনায় রডপসিন পিগমেন্টের অভাব।

চোখ ছাড়াও শরীরের অন্যান্য অঙ্গে ভিটামিন-এ এর অভাবজণিত প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় যেমন -
১)    শুস্ক ও অসাধারন ত্বক।
২)    পেটের পীড়া।
৩)    শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত কষ্ট।
৪)    স্বাভাবিক বৃদ্ধি রোধ।
৫)    সন্তান ধারণে অক্ষমতা।

ভিটামিন-এ এর অভাব হলে প্রতিকার ঃ
১)    প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ যুক্ত খাদ্য খাওয়া।
২)    ৫ বৎসর বয়স পর্যন্ত শিশুদের রোগ প্রতিরোধক ইনজেকশনের (ই পি আই) এর সাথে ভিটামিন-এ ক্যাপ্সুল খাওয়া।
৩)    ভিটামিন-এ এর অভাবে চোখের রোগসহ শরীরের অন্যান্য রোগ দেখা দিলে চক্ষু বিশেষজ্ঞ-এর পরামর্শমত ভিটামিন-এ ক্যাপ্সুল খাওয়াসহ ভিটামিন-এ ইনজেকশন দেওয়া যেতে পারে।
৪)    শিশুদের কমপক্ষে ২ থেকে আড়াই বৎসর মায়ের দুধ পান করালে ভিটামিন-এ এর অভাব হয় না এবং মাকে ভিটামিন-এ যুক্ত খাবার খেতে হবে।
সতর্কতা:
ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্ত চাপের রোগীরা উল্লেখিত ফল বেশী খাবেন না।

অধ্যাপক, চেয়ারম্যান
চক্ষু বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে