এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ধূমকেতুর বুকে প্রথম যে মহাকাশ যানটি অবতরণ করেছে তার নাম রোসেটা। পৃথিবী থেকে ৫০ কোটি কিলোমিটার দূরে এক ধুমকেতুর বুকে মানুষের তৈরি এই মহাকাশ যান সর্বপ্রথম অবতরণ করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।
ইওরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর আগে ল্যান্ডারটিকে সৌরজগতে ১০ বছর পরিভ্রমণ করতে হয়েছে। ফিলি নামে এই ল্যান্ডারটি বরফে তৈরি ধূমকেতুর ওপর অবতরণ করার পর বিজ্ঞানীরা তার পাঠানো সঙ্কেতও পেয়েছেন। যে ধূমকেতুর বুকে এই মহাকাশ যান অবতরণ করেছে তার নাম সিক্সটি সেভেনপি চুরিউমভ-গেরাসিমেনকো। ওই ধূমকেতুটির বয়স অন্তত ৪০০ কোটি বছর এবং অবতরণযানটি যেখানে নেমেছে সেই জায়গাটি বরফ আর ধূলোর আস্তরণে ঢাকা।
ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির মহাকাশ যান রোসেটা মিশনের একজন বিজ্ঞানী ড. মেরিনা গারল্যান্ড বলছিলেন, এটা একটা খুবই ঝুকিপূর্ণ প্রক্রিয়া। আমরা জানি না যে ধূমকেতুর উপরিভাগ ঠিক কি দিয়ে গঠিত। এটা যদি শক্ত বরফের তৈরি হয়, তাহলে ধূমকেতুটির মাধ্যকর্ষণ শক্তি খুবই দুর্বল হওয়ার কারণে অবতরণ যানটি মাটি স্পর্শ করার সাথে সাথে আবারো ছিটকে মহাশূন্যে উঠে যেতে পারে। আর যদি নরম তুষারের মতো কিছু দিয়ে তৈরি হয়, তাহলে অবতরণ যানটি ডুবে যেতে পারে।
গত বছরই এই রোবট যানটি ধূমকেতুতে অবতরণ করে। তার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই ফিলের সঙ্গে পৃথিবীর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা বলছে, প্রায় সাত মাস বিচ্ছিন্ন থাকার পর ওই যানটি পৃথিবীর সাথে আবার সংযোগ স্থাপন করেছে ও বার্তা পাঠাতে শুরু করেছে।
বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, জেগে ওঠার পর ফিলে একটি টুইট করেছে যেখানে সে লিখেছে, “হ্যালো পৃথিবী, তুমি কি আমাকে শুনতে পাচ্ছো?’
ধূমকেতুর একটি অন্ধকার জায়গায় সোলার রোবটটি অবতরণ করায় বিজ্ঞানীরা তখনই এর ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন।
কারণ এটি সৌরশক্তির সাহায্যে চলছিলো।
মহাকাশ সংস্থার বিজ্ঞানীরা বলছেন, ধূমকেতুটি এখন সূর্যের অনেক বেশি কাছে গিয়ে পৌঁছেছে ফলে ছোট্ট এই রোবটের গায়ে যে সোলার প্যানেল বসানো আছে তাতে আলো পড়েছে ফলে ফিলে আবার ঘুম থেকে জেগে উঠেছে।
আর রিচার্জড হওয়ার কারণেই পৃথিবীর সাথে এর যোগাযোগ পুন-স্থাপিত হয়েছে।
ধূমকেতুর বরফ আর পাথর পরীক্ষা করে দেখার জন্যে এই যানটি পাঠানো হয়েছিলো।
অনেক বিজ্ঞানীর ধারণা, এই ধূমকেতুর কারণেই হয়তো পৃথিবীতে পানির অস্তিত্ব আছে।আছে প্রাণও।