ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু: বয়স বেড়ে গেলে সাধারনত নারীদের ক্ষেত্রে মেনোপজ বা মাসিক বন্ধ হলে হাড় থেকে ক্যালসিয়াম ও কোলাজেন টিস্যু কমে গেলে হাড়ের ভলিউম ঠিক থাকলেও শক্তি কমে যায়। ফলে হাড় সহজেই ভেঙ্গে যায়। একে বলে অস্টিওপোরোসিস। হাড়ের এ ভঙ্গুরতা দুর করতে মেনে চলুন কিছু টিপস।
১. ব্যয়ামের ফলে অস্থি ও মাংশপেশী শক্তিশালী হয়ে হাড়ক্ষয় রোধ হয়। সপ্তাহে কমপক্ষে তিন থেকে চার দিন ব্যায়ামের মাধ্যমে অস্টিওপোরেসিস প্রতিরোধ করা সম্ভব। হাঁটা সবচেয়ে ভাল ব্যায়াম। সপ্তাহে প্রায় ৩-৫ মাইল হাটুন।
২. ক্যালসিয়াম হাড়কে শক্তিশালী করে। গবেষণায় দেখা গেছে, অস্টিওপোরেসিস প্রতিরোধ করার জন্য একজন প্রাপ্ত বয়ষ্কের প্রতিদিন ১০০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম দরকার। কিন্তু মেনোপোজের হওয়া মহিলাদের অস্টিওপোরেসিসের ঝুকি বেশি বলে তাদের প্রতিদিন ১৫০০ মিলিগ্রাম করে ক্যালসিয়াম খাওয়া দরকার। আর ক্যালসিয়ামের চাহিদা পুরণে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের ভুমিকা অনেক বেশি। এজন্য ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন, দুধ ও দুদ্ধজাত খাবার, পনির, ছোট গুড়া মাছ, সীম, স্পাইন্যাচ, ব্রকোলি খেতে হবে বেশি করে। এছাড়াও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেটের মাধ্যমে এ চাহিদা পুরণ করা যায়। অন্ত্র থেকে ক্যালসিয়াম পরিশোষণের জন্য ভিটামিন ডি দরকার। ২০ মিনিট সূর্যের আলোতে থাকলে আমাদের প্রতিদিনের ভিটামিন ডি-র চাহিদা পুরণ হয়। ৫১-৭০ বছরের কারোও জন্য প্রতিদিন ৪০০-৮০০ আইইউ ভিটামিন ডি দরকার হয়। ভিটামিন ডি-এর চাহিদা পুরণে ডিম, কলিজা, ছোট মাছ ও শাকসবজী বেশি করে খেতে হবে।
৩. অনেকেই সমান্য অসুখেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন করে থাকেন। এটা কিন্তু একবারেই ঠিক নয়। এসব ওষুধ সেবনে নানা ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। স্টেরয়েড, খিচুনী প্রতিরোধে এন্টিকনভালসেন্ট, রক্তের অসুখে এন্টিকোয়াগুলেন্ট ও থাইরয়েড রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শমত ব্যবহারে না করলে হাড়ক্ষয় হয়ে যেতে পারে। দেখা দিতে পারে অস্টিওপোরেসিস। তাই এ ধরণের ওষুধ গ্রহনের সময় হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো আপনার চিকিৎসকের নিকট থেকে ভাল করে জেনে নিন।
৪.ধুমপান, মদপান ও কফি জাতীয় পাণীয় হাড়ের ক্ষয় করে হাড়কে ভঙ্গুর করে। দেখা দেয় অস্টিওপোরেসিস। তাই অস্টিওপোরেসিস থেকে বাঁচতে হলে এগুলো বাদ দিন চিরতরে।