এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : এক বা দুই তলা নয়, কাঠ দিয়ে নির্মান করা হচ্ছে ৩৪ তলা ভবন। অস্ট্রিয়া ও সুইডেনে কাঠের ভবন তৈরির এ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। ভিয়েনার নকশাবিদদের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান পত্রিকা জানায়, শিগগিরই শুরু হচ্ছে ২৭৫ ফুট উঁচু ভবনের কাজ। এর বেশির ভাগ অংশই হবে কাঠের। আনুমানিক ২৫তলা ভবনটি তৈরিতে ব্যয় হবে ৬ কোটি ৭০ লাখ ইউরো। সুইডেনের স্টকহোমেও একটি ৩৪ তলা কাঠের ভবন তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ২০২৩ সালে ভবনটির কাজ শেষ হবে বলে জানা গেছে।
কাঠ দিয়ে সর্বোচ্চ কত তলা ভবন তৈরি করা যায়? কারো উত্তর হবে দুই, কারো তিন। তবে অস্ট্রিয়া ও সুইডেন যে পরিকল্পনা নিয়েছে, তার কাছে আমাদের সব কল্পনাই নস্যি। দেশ দুটিতে ৩৪তলা পর্যন্ত কাঠের ভবন তৈরির প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই পরিকল্পিত এসব স্থাপনার কাজ শুরু হবে।
পরিবেশবিদদের মতে, কংক্রিটের বদলে কাঠের ভবন তৈরি করায় কার্বন নির্গত হবে কম। কারণ কংক্রিট তৈরির প্রক্রিয়ায় প্রচুর পরিমাণে কার্বন তৈরি হয়। অন্যদিকে কাঠ প্রক্রিয়ায় কার্বন নির্গমন তেমন নেই বললেই চলে। উল্টো কাঠের মধ্যে কার্বন ডাই-অক্সাইড সঞ্চিত হয়। প্রতি ঘনমিটার কাঠে বছরে প্রায় একটন কার্বন জমতে পারে। শুধু অস্ট্রিয়া ও সুইডেনই নয়, ইউরোপ থেকে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত অনেক দেশেই কাঠের বহুতল ভবন তৈরি হচ্ছে।
কংক্রিটের বদলে কাঠের ভবন
তৈরি করায় কার্বন নির্গত হবে কম। কারণ কংক্রিট তৈরির পক্রিয়ায় প্রচুর পরিমাণে কার্বন তৈরি হয়। অন্যদিকে কাঠ প্রক্রিয়ায় কার্বন নির্গমন তেমন নেই বললেই চলে। উল্টো কাঠের মধ্যে কার্বনডাই- অক্সাইড সঞ্চিত হয়। প্রতি ঘনমিটার কাঠে বছরে প্রায় একটন কার্বন জমতে পারে। ভিয়েনার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২৫তলা কাঠের ভবন তৈরি করলে কংক্রিটের ভবন তৈরির চেয়ে দুই হাজার ৮০০ টন কার্বন কম নির্গত হবে। এসব কারণে পরিবেশ সচেতন নকশাবিদরা কাঠের ভবনের প্রতি ঝুঁকছেন।
শুধু অস্ট্রিয়া ও সুইডেনই নয়, ইউরোপ থেকে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত অনেক দেশেই কাঠের বহুতল ভবন তৈরি হচ্ছে।
বর্তমানে কাঁচ, স্টিল ও কংক্রিটের ভবনের সঙ্গে মানুষ পরিচিত। কাঠের বহুতল ভবন মানুষের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে তা প্রশ্নসাপেক্ষ। কাঠের স্থাপনা বিষয়ে মানুষের মনে উদ্রেক হয় এমন কিছু সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলো।
সহজেই কি আগুন ধরবে?
যেকোনো স্থাপনায়ই অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে। গত মাসেও দুবাইয়ের একটি বহুতল আবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ওই সময় বহুতল ভবনটির অনেক অংশ খুলে নিচে পড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কাঠের ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়। মোটা কাঠের বাইরের অংশ পোড়ে। কিন্তু ভিতরের অংশ টিকে যায়। আর কাঠের বহুতল ভবনের ক্ষেত্রে অগ্নিকাণ্ড রোধে কিছু বিশেষ সতর্কতার পরিকল্পনা রাখা হচ্ছে।
কতটা মজবুত?
২০১৩ সালে নকশাবিদ মাইকেল গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব নর্দান ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় ৯০ ফুট উঁচু ভবন তৈরি করেছেন। ভবনটি তৈরিতে বিশেষ আঠা ব্যবহার হয়েছে, যা ক্রংক্রিটের মতোই কাঠের স্থাপনাকে মজবুত করেছে। উত্তর আমেরিকায় বর্তমানে এটিই সবচেয়ে উঁচু ভবন। কাঠের ভবন কতটা উঁচু করা যায় তা নিয়ে গবেষণা চলছে। কয়েকটি ভবনের নকশাকারী সংস্থার মতে, বর্তমান প্রযুক্তিতে ৪২তলা কাঠের ভবন তৈরি সম্ভব।
কতটা দীর্ঘস্থায়ী?
দীর্ঘদিন ধরেই বাড়ি তৈরির জন্য কাঠ ব্যবহার করা হয়। তবে কাঠের স্থাপনায় আগুন, ঘুণপোকার উপদ্রবের মতো কিছু সমস্যা দেখা যায়। তবে যত্ন নিলে কাঠের স্থাপনা কংক্রিটের চেয়ে দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন কাঠের ভবনটি হলো জাপানের হরয়ু-জি মন্দির, যা তৈরি হয়েছে ৬০৭ খ্রিস্টাব্দে। ভূমিকম্পনপ্রবণ এলাকায় থাকা সত্তেও এটি প্রায় দেড় হাজার বছর ধরে টিকে আছে।
২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/