বুধবার, ০৫ নভেম্বর, ২০২৫, ০৩:১৮:৫৩

শেখ হাসিনাকে ধীরে ধীরে ‘আনলক’ করছে ভারত

শেখ হাসিনাকে ধীরে ধীরে ‘আনলক’ করছে ভারত

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : প্রায় ৯ মাস আগের কথা। রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবন ভাঙচুরের পর বাংলাদেশ সরকার একটি বিবৃতি দেয়। অন্তর্বর্তী সরকারের অভিযোগ, ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্রমাগত মিথ্যা ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তুলতে চাইছেন এবং ভারতের উচিত তার লাগাম টেনে ধরা। ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে জানানো হয় আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদও।

ঠিক এর পরদিনই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাল্টা বিবৃতি দিয়ে দাবি করে, শেখ হাসিনা যা বলছেন তা তিনি ‘ব্যক্তি শেখ হাসিনা হিসেবে’, মানে তার ‘ইন্ডিভিজুয়াল ক্যাপাসিটিতে’ বলছেন। ভারত সরকারের সেখানে কোনো ভূমিকাই নেই।

ভারতকে ‘নেতিবাচক’ দৃষ্টিতে তুলে ধরলে বা বাংলাদেশের ‘অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক ব্যর্থতার’ জন্য ভারতকে দায়ী করলে তা যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য সহায়ক হবে না, মনে করিয়ে দেওয়া হয় সেটাও। যথারীতি পাল্টা তলব করা হয় দিল্লিতে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকেও।

গত এক বছরের বেশি সময় ধরে ভারতের আশ্রয় ও আতিথেয়তায় থাকা ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আদৌ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে দেওয়া উচিত কি না, তা নিয়ে দিল্লি ও ঢাকার মধ্যে যে পরিমাণ কূটনৈতিক তিক্ততা তৈরি হয়েছে তা এক কথায় নজিরবিহীন।

এমনকি বিষয়টি নিয়ে কথাবার্তাও হয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির।

বাংলাদেশের ভাষ্য, জুলাই গণহত্যায় অভিযুক্ত সাবেক শেখ হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে ভালো কথা কিন্তু দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে ঢাকা তাকে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছে।

এখন সেটার কোনো নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই যদি ভারত তাকে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে দেয় এবং তিনি বক্তব্যের মাধ্যমে দলীয় নেতা-কর্মীদের উসকানি দিয়ে বাংলাদেশে অস্থিরতা তৈরি করতে চান, তাহলে তা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

ক্ষমা চাইতে রাজি নন শেখ হাসিনা, থাকতে চান ভারতেইক্ষমা চাইতে রাজি নন শেখ হাসিনা, থাকতে চান ভারতেই
ততদিনে শেখ হাসিনা অনলাইনে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে নিয়মিতই ভাষণ দিতে শুরু করেছেন। কখনো সেটা রেকর্ডেড, কখনো আবার ‘লাইভ’।

‘মুখ খোলা’ নিয়ে মুখোমুখি দিল্লি-ঢাকা

গত এপ্রিলে ব্যাংককে বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে মুহাম্মদ ইউনূস শেখ হাসিনার বিষয়ে ঢাকার যুক্তি নরেন্দ্র মোদির কাছে তুলে ধরেন। তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর জবাব ছিল আজকের এই সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে কারও মুখে লাগাম পরানোই সম্ভব নয় এবং শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও ঠিক সেটাই ঘটছে।

আসলে শেখ হাসিনাকে মুখ খুলতে দেওয়ার প্রশ্নে ভারতের পাল্টা বক্তব্য হলো, একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে ও সুরক্ষার প্রয়োজনে তাকে এ দেশে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে ঠিকই কিন্তু তিনি কোনো ‘রাজনৈতিক বন্দি’ নন।

ভারতে রাজনৈতিক বন্দিদের মোবাইল ফোন বা অনলাইন অ্যাক্সেস পাওয়ার ক্ষেত্রেও অনেক বিধিনিষেধ থাকে। কিন্তু শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়, তা ছাড়া তার খবরের কাগজ বা টিভি চ্যানেল অবাধে সার্ফ করারও সুযোগ আছে। এমনকি তার ব্যক্তিগত ফোনও প্রথম দিন থেকে তার কাছেই আছে।

এই পাল্টাপাল্টি যুক্তির মধ্যেই গত ২৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স, এএফপি ও দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টে একযোগে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়।

যদিও সেই সাক্ষাৎকারগুলো লিখিত বা ইমেইল প্রশ্নোত্তরের ভিত্তিতে করা, তারপরও বিষয়টি যে শেখ হাসিনার ‘হোস্ট’ ভারত সরকারের সম্মতিতেই হয়েছে তা নিয়ে দিল্লিতে পর্যবেক্ষকদের কোনো সন্দেহই নেই।

মাস তিনেক আগে ভারতে আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাদের বেশ কয়েকজনের সঙ্গেও শেখ হাসিনার সশরীরে সাক্ষাৎ হয়েছে। আর যথারীতি সেটাও ভারত সরকারের অনুমোদন ছাড়া হয়নি। দিল্লিতে এসে সম্প্রতি মায়ের সঙ্গে দেখা করে গেছেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।

এই ঘটনাক্রম দেখে বিশ্লেষকরা অনেকেই ধারণা করছেন, একটা খুব বিশেষ পরিস্থিতিতে ভারতে চলে আসতে বাধ্য হওয়া শেখ হাসিনার ওপর যেসব বিধিনিষেধ শুরুতে আরোপিত হয়েছিল, তার অনেকগুলোই ধীরে ধীরে শিথিল করা হচ্ছে। এটাকেই অনেকে ‘আনলকিং’ বলে বর্ণনা করছেন।

শেখ হাসিনাকে নিয়ে দিল্লির নতুন চালশেখ হাসিনাকে নিয়ে দিল্লির নতুন চাল
কিন্তু কেন এখন এই ‘আনলকিং’-এর প্রক্রিয়া? এর মধ্যে দিয়ে কী বার্তা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে? আগামী দিনে কি তাকে সশরীরে মুখোমুখি সাক্ষাৎকার দিতেও দেখা যাবে? এই প্রতিবেদন উত্তর খুঁজেছে সে সব প্রশ্নেরই।

আওয়ামী লীগকে প্রাসঙ্গিক রাখার চেষ্টা

দিল্লিতে শীর্ষস্থানীয় থিংকট্যাংক মনোহর পারিক্কর ইনস্টিটিউট ফর ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিসের (আইডিএসএ) সিনিয়র ফেলো স্ম্রুতি পটনায়ক বাংলাদেশ নিয়ে গবেষণা করছেন বহু বছর ধরে।

পটনায়কের ধারণা, ভারত এখন যে শেখ হাসিনাকে বেশি করে মুখ খুলতে দিচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়াকে সাক্ষাৎকার পর্যন্ত দিতে দিচ্ছে, এর মূলে আছে আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ল্যান্ডস্কেপে প্রাসঙ্গিক রাখার চেষ্টা।

তিনি বলেন, ‘দেখুন আমি এটাকে ঠিক অনুমতি দেওয়া বলব না, কিন্তু এই সাক্ষাৎকারগুলো যে ভারত সরকারের অগোচরে হয়নি তা তো বোঝাই যায়।’

তিনি আরো বলেন, ‘এখন কেন এটা করা হচ্ছে? আসলে বাংলাদেশে একটার পর একটা গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ডেভেলপমেন্ট হয়ে চলেছে যেখানে আওয়ামী লীগ কোনো স্পেস পাচ্ছে না। ঐকমত্য কমিশন সংস্কার নিয়ে কাজ করেছে, জুলাই সনদ পর্যন্ত সই হয়ে যাচ্ছে। অথচ সেখানে আওয়ামী লীগের কোনো ভূমিকাই নেই।’

পটনায়ক বলেন, ‘কিন্তু আওয়ামী লীগ হলো সে দেশের এমন একটি বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তি যাদের সঙ্গে ভারতের ঐতিহাসিকভাবে সুসম্পর্ক। সেই দলটি যখন সেখানে মুখ খোলারই সুযোগ পাচ্ছে না, তখন ভারতকে তো এটুকু করতেই হবে, শেখ হাসিনাকে বলতে দিতে হবে।’

তিনি মনে করিয়ে দেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা নিয়ে আজও বিতর্ক অব্যাহত, তারা পর্যন্ত এখন সে দেশের রাজনৈতিক মিথষ্ক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগই সেখানে অনুপস্থিত।

‘আমার ধারণা ভারতও এটা বুঝতে পেরেছে, আর সেই উপলব্ধি থেকেই শেখ হাসিনাকে এখন আরো বেশি করে বলতে দেওয়া হচ্ছে। কারণ এখনও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বে তিনিই শেষ কথা’, বলেন স্ম্রুতি পটনায়ক।

ভারতে বসে দেশবিরোধী অপকৌশলে লিপ্ত শেখ হাসিনাভারতে বসে দেশবিরোধী অপকৌশলে লিপ্ত শেখ হাসিনা
ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাসও মনে করেন, শেখ হাসিনার এসব বক্তব্য আসলে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করার উদ্দেশেই। সামনেই নির্বাচন আসছে, ফলে হাতে খুব একটা সময়ও নেই।

তিনি বলেন, ‘দলটার শীর্ষ নেতারা দেশে নেই, সামনের নির্বাচনে তারা লড়ারও সুযোগ পাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে ভারতে থাকা শেখ হাসিনার পক্ষে যতটুকু যা করা সম্ভব, তিনি সেটাই করছেন। তার হোস্টরাও তাতে আপত্তি জানাচ্ছে না, এটুকুই।’

তবে ভারতের এই সিদ্ধান্ত দিল্লি-ঢাকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরো বিষিয়ে তুলতে পারে, এই আশঙ্কাও অনেক পর্যবেক্ষকেরই আছে।

হাসিনাকে দিয়ে ‘পাল্টা আক্রমণে’ ভারত?

কয়েক মাস আগেই বিবৃতি দিয়ে ভারত যদিও দাবি করেছে, শেখ হাসিনার বক্তব্য মানেই সেটা দিল্লির বক্তব্য নয়। সব ক্ষেত্রে যে কথাটা সত্যি নয়, তা সুবিদিত।

বরং ভারতের পক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে বা প্রকাশ্যে যেগুলো বলা সম্ভব নয়, তার অনেক কথাই শেখ হাসিনার মুখ দিয়ে বলানো হচ্ছে; এমনটাই মনে করেন দিল্লিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশেষজ্ঞ তথা জেএনইউর সাবেক অধ্যাপক বলদাস ঘোষাল।

তিনি বলেন, ‘আমি তো বলব শেখ হাসিনার এই সাক্ষাৎকারগুলোর মধ্য দিয়ে ভারতই একটু আক্রমণাত্মক অবস্থান নিতে চাইছে। আসলে বাংলাদেশে সম্প্রতি এমন বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে, যেটাকে দিল্লি পরিষ্কার ভারতবিরোধী পদক্ষেপ বলে মনে করছে। যেমন সে দেশে পাকিস্তানের সামরিক জেনারেল বা সরকারি কর্মকর্তাদের ঘন ঘন সফর কিংবা সেভেন সিস্টার্স নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য।’

তিনি আরো বলেন, ‘আবার দিল্লিতে অনেকের এমনও ধারণা আছে যে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারত নানা কারণে চাপে আছে বলে বাংলাদেশ বোধহয় সেই কোণঠাসা অবস্থারই সুযোগ নিয়ে কিছু ব্রাউনি পয়েন্ট স্কোর করতে চাইছে!’

এই পটভুমিতে বাংলাদেশকে পাল্টা চাপে ফেলার চেষ্টাতেই ভারতে নীতিনির্ধারকদের একটা অংশ শেখ হাসিনাকে সুকৌশলে কাজে লাগাচ্ছেন বলে বলদাস ঘোষালের ধারণা।

তার মতে, এতে করে দুটো উদ্দেশ্য সাধিত হচ্ছে। প্রথমত, শেখ হাসিনার কথাগুলো বাংলাদেশে কী ধরনের প্রভাব ফেলে বা সরকার কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখায়, সেটা পরখ করে দেখা যাচ্ছে। মানে ইংরেজিতে যাকে বলে টেস্টিং দ্য ওয়াটার। আর দ্বিতীয়ত, আওয়ামী লীগের হতোদ্যম নেতা-কর্মীদেরও একটা বার্তা দেওয়া যাচ্ছে, যে দেখো শেখ হাসিনা দলের হাল ঠিকই ধরে রেখেছেন এবং ভারতও পুরোপুরি তার পাশেই আছে।’

ফলে অন্যভাবে বললে শেখ হাসিনার এই সব সাক্ষাৎকারের মধ্যে দিয়ে ভারতেরও কিছু স্বার্থ চরিতার্থ হচ্ছে, এমনটাও অনেকে মনে করছেন।

লন্ডনভিত্তিক লেখক ও জিওপলিটিক্যাল অ্যানালিস্ট প্রিয়জিৎ দেবসরকার ভারতে শেখ হাসিনার প্রথম দিন থেকে আজ পর্যন্ত তার অবস্থানের নানা দিক গভীরভাবে ফলো করছেন এবং তা নিয়ে লেখালেখিও করছেন।

তিনি মনে করেন, শেখ হাসিনা ভারতে পা রাখার পরই তাকে যেভাবে কঠোর গোপনীয়তা আর নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল, তার সঙ্গে কোভিড লকডাউনের অনেক মিল আছে।

তিনি বলেন, ‘মহামারির সময় লকডাউনে যেভাবে রাতারাতি সব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, মানুষকে বাধ্য হয়ে গৃহবন্দি হতে হয়েছিল; তার ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা ছিল অনেকটা সে রকম। কোভিড নিয়ে সরকার যেমন কোনো ঝুঁকি নিতে পারেনি, শেখ হাসিনার নিরাপত্তার সঙ্গেও কোনো আপস সম্ভব ছিল না।’

তিনি আরো বলেন, ‘কিন্তু লকডাউন তো আর অনন্তকাল ধরে চলতে পারে না। কোভিড লকডাউন যেমন একটা সময় ধাপে ধাপে তুলে নেওয়া হয়েছে, শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধগুলো পর্যায়ক্রমে তুলে নিতেই হতো। আর এখন ঠিক সেটাই হচ্ছে।’

গত বছরের ৫ অগাস্ট ভারতে এসে নামার পর শেখ হাসিনা দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে অনলাইনে রেকর্ডেড ভাষণ দেন বেশ কয়েক সপ্তাহ পর।

এরপর তিনি লন্ডনে আওয়ামী লীগের একটি অনুষ্ঠানে ‘লাইভ’ ভাষণ দেন। এরপর একে একে ‘সিগনালের’ মতো মেসেঞ্জার প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হয়ে বা ইউটিউবে লাইভ এসে তিনি একের পর এক ভাষণ দিতে শুরু করেন।

যথারীতি তার এসব বক্তব্য প্রচারকে কেন্দ্র করে দিল্লি ও ঢাকার মধ্যে কূটনৈতিক অস্বস্তি বাড়তে থাকে। তবে দিল্লি কখনোই তার মুখে রাশ টানেনি, বরং ধীরে ধীরে ‘লাগাম’ শিথিল করা হয়েছে।

ভারতে আসার বেশ কয়েক মাস পর তিনি আওয়ামী লীগের বাছাই করা কয়েকজন নেতার সঙ্গে সশরীরে দেখা করেন। তবে সেই বৈঠকও আয়োজন করা হয় তার এখনকার ‘বাসস্থান’ থেকে দূরে অন্য কোনো জায়গায়।

এরও কিছুদিন পর তিনি একই সঙ্গে তিনটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ‘লিখিত’ প্রশ্নোত্তরে সাক্ষাৎকার দেন। খুব শিগগির আরো কিছু গণমাধ্যমে একই ধরনের ‘সাক্ষাৎকার’ বের হবে বলে আভাস মিলেছে।

ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনাকে যদি ভিডিও ক্যামেরার সামনে বসে সাক্ষাৎকার দিতে দেখা যায়, তাহলেও বোধহয় অবাক হওয়ার কিছু নেই।

প্রিয়জিৎ দেবসরকার ঠিক এই কারণেই বলেন, ‘ভারত এখন তার বিশেষ এই অতিথির আনলকিংয়ের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত তারা কতদূর এগোবে, দিল্লিতে বসে তিনি প্রকাশ্য চলাফেরা, অবাধ গতিবিধি বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সামনে কতদূর কী করতে পারবেন, সেটা অবশ্য আরো নানা বিষয়ের ওপরে নির্ভর করছে।’ সূত্র : বিবিসি বাংলা

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে