বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০৬:১০:০৬

যে গ্রামটিতে যাওয়ার একমাত্র বাহন হেলিকপ্টার

যে গ্রামটিতে যাওয়ার একমাত্র বাহন হেলিকপ্টার

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : গ্রামটির নাম মাফতে। চমৎকার মনোমুগ্ধকর একটি দ্বীপ অঞ্চল এটি। এর চারদিকে উঁচু পর্বত, আঁকাবাঁকা পাহাড়ের খাদ, এবং সবুজ বনাঞ্চলঘেরা প্রাচীর।

এই দ্বীপটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এতটাই দৃষ্টি নন্দন যে, প্রথম দেখাতে যেই কাউকে মুগ্ধ করে। তবে এর মাঝেও একটা ঘাটতি কিন্তু রয়েছে। কথায় আছে না, চাঁদেও কলঙ্ক আছে। তেমনই অবস্থা এই দ্বীপটির ক্ষেত্রে।

সৌন্দর্য খচিত এই দ্বীপে যেতে হলে একমাত্র বাহন হচ্ছে হেলিকপ্টার। এছাড়া গন্তব্যে পৌঁছাতে হলে যেতে হবে পায়ে হেঁটে। তবুও প্রকৃতি প্রেমিরা যাচ্ছেন, আসছেন মাফতে দ্বীপে।

ভারত মহাসাগরের বুকে অবস্থিত মাদাগাস্কার ও মরিশাসের মধ্যকার একটি ফরাসি দ্বীপ লা রিইউনিয়ন। এটি একমাত্র দ্বীপ যা ফ্রান্সের উপনিবেশে থাকা অন্যান্য দ্বীপ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। ধারণা করা হয়, তিন মিলিয়ন বছর আগে একটি বড় ধরণের আগ্নেয়গিরি উদগীরণের ফলে এখানে ম্যাগমা চেম্বার গঠিত হয়। এরপর এই অঞ্চলটি ফরাসি দ্বীপ থেকে পৃথক হয়ে যায়।

বলা হয়ে থাকে, প্রথমদিকে আফ্রিকার বিভিন্ন ক্রীতদাসেরা নিজেদের কর্তৃত্ব ফলানোর জন্য এখানে আসে। পরে ফ্রান্সের দরিদ্র কৃষকরা এখানে চাষাবাদ শুরু করেন। এরপর তাদেরই পরবর্তী প্রজন্ম এখানে বেড়ে উঠে।  তারা নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে দ্বীপটিকে বেছে নেয়। বাইরের পৃথিবী থেকে সবরকম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপ।

বর্তমানে এই মাফতে দ্বীপে আট’শ পরিবারের বসবাস। এখানকার অধিবাসীদের মাফতীস বলেই ডাকা হয়। তারা ছোট ছোট গ্রামে বিভক্ত হয়ে বসতি করেন। এখানকার গ্রামগুলো তাদের কাছে ইয়েত নামে পরিচিত। এখানে বসবাসকারি প্রত্যেকেই উত্তরাধিকার সূত্রে এক একটি গ্রাম পেয়ে থাকে। একটি গ্রামে দুই থেকে তিনটি বাড়ি থাকে।

বাড়িগুলো ছাদ দেখতে রঙ্গীন। যা দূর থেকে দেখতে নজরকারা চমৎকার শৈল্পিক বলেই মনে হয় সকলের কাছে। এখানকার পরিবেশ অনেক শান্ত এবং মনোরম। তবে এতকিছুর পরেও অসুবিধা কিন্তু থেকেই যায়।

কেন না, এই শান্তময় গ্রামে রাত হলেই নেমে আসে ঘন অন্ধকার। আধুনিক সুযোগসুবিধার কোন কিছুই পৌঁছাতে পরেনি দ্বীপটিতে। বিদ্যুৎ তো সেখানে নেই, এমনকি পানি আনার জন্য এক’শ বর্গ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। যদি কোন কারণে চিকিৎসক, পুলিশ বা কোন বনকর্মী প্রয়োজন হয় তাহলে তাদেরকে হেলিকপ্টারে করে আনতে হবে অন্যথায় এর কোন বিকল্প উপায় নেই।

ইউনেস্কোর বিশ্বের ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোর একটি হিসেবে মাফতে ২০১০ সালে মনোনিত হয়। এরপর থেকেই এ দ্বীপটি সবার কাছে পরিচিত লাভ করে। এই দ্বীপে পাওয়া যাবে নাম না জানা নানান গাছপালা এবং গেলাপোগাস দ্বীপের মতো অদ্ভুত সব পাখিদের কলকাকলি।
১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে