রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০৪:২৩:১১

ভালোবাসার তালা!

ভালোবাসার তালা!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ভালোবাসা দিবসে তরুণ-তরুণীরা কত আয়োজনই না করে থাকেন।  প্রিয় মানুষটির জন্য নানা সাজে সাজিয়ে রাখেন নিজের কক্ষটি।  নিজেও অপরূপ সাজে সাজতে ভুল করেন না।  সবকিছুই শুধু ভালোবাসার মানুষটির জন্য।

এমনই এক মজার ঘটনা জার্মানির কোলনে।  সেখানকার হোসনলানব্রোকা ব্রিজটির ধারে গেলেই দেখবেন, হাজারো তালায় ছেয়ে গেছে ব্রিজটি। ভালোবাসার বাঁধনে প্রেমিক জুটি নিজেদের সম্পর্কের গভীরতা বোঝাতে এখানে এসে ব্রিজের গায়ে লাগিয়ে যান এসব তালা।  ‘লাভ লক’ বা ‘লাভ প্যাডলক’ লাগানোর ঘটনাটি এখন প্রেমিক-প্রেমিকাদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়।

ব্রিজের ওপর নিজের প্রেমিক কিংবা প্রেমিকার স্মৃতিবিজড়িত তালা রেখে যাওয়ার ঘটনা অবশ্য এটাই প্রথম নয়।  ফ্রান্সের প্যারিসের বিখ্যাত লাভ লক ব্রিজের তালাগুলো কিছুদিন হলো সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

অনেকের মতে, প্রেম নিবেদনের আজব এ প্রথা প্রথম শুরু হয় ইতালিতে। গভীর ভালোবাসার সাক্ষীস্বরূপ প্রেমিক জুটি তাদের ভালোবাসার মানুষটির নাম লেখা তালা-চাবি দিয়ে লাগিয়ে রাখা শুরু করে বেড়া, দরজা, ব্রিজসহ নানা জায়গায়।  

ইতালির রোমের অনি মিলভিও ব্রিজে প্রেমিক-প্রেমিকাদের লাভ লক লাগানোর কথা ইতালীয় লেখক ফেদেরিকো মোয়াচ্চার ‘আই ওয়ান্ট ইউ’ বইতেও উঠে এসেছে।

পরবর্তী সময়ে তা নিয়ে একটি ছবিও নির্মাণ করেন তিনি।  একই ধরনের ব্রিজ দেখা যায় সার্বিয়াতে, যেখানে ভালোবাসার তালা লাগানোর শুরু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগেই।  

এ ব্রিজে তালা লাগানোর রীতি নিয়ে প্রচলিত আছে একটি প্রেমের গল্প। মিয়াশকা বানজা নামের এক জায়গায় বাস করতেন নাদা নামের এক স্কুল শিক্ষিকা।  যিনি রেলজা নামের এক সার্বিয়ান অফিসারের প্রেমে পড়েন।  

তারা একে অপরকে ভালোবাসতে শুরু করেন।  এমনই সময় একদিন রেলজাকে যেতে হয় গ্রিসে যুদ্ধ করতে।  সেখানে রেলজা আবার আরেক মেয়ের প্রেমে পড়েন।  

কিন্তু নাদা কখনই নিজের প্রেমের এমন পরিণতি মেনে নিতে পারেননি।  তাই এ ঘটনার কিছুদিন পরই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।  ভার্নজাকা বানজার মেয়েরা এ ঘটনার স্মরণে আর নিজেদের ভালোবাসা রক্ষা করতে নিজের ও প্রেমিকের নাম লেখা তালা লাগিয়ে রাখে সেই ব্রিজের রেলিংয়ে, যেখানে কোনো একসময় দেখা করতের নাদা আর তার প্রেমিক রেলজা।

জার্মানির কোলনে যে লাভ লক ব্রিজ রয়েছে তা ওখানকার সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রিজগুলোর একটি।  মাত্র ২০০৮ সাল থেকে তালা লাগানো প্রথা শুরু হয় এ ব্রিজে।  এরই মধ্যে সেখানে লাভ লকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চল্লিশ হাজারে!

এতগুলো তালার কারণে ব্রিজের অতিরিক্ত ওজন দাঁড়িয়েছে দুই টনেরও বেশি।  অবশ্য মাঝে এ ব্রিজের ওপর লাভ লক লাগানো নিষিদ্ধ করারও চিন্তাভাবনা চলছিল।  পরে সাধারণ মানুষের প্রতিবাদের মুখে বন্ধ করা যায়নি।
১৪ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে