রাইহান বিন আমিন, জাবি থেকে : পাখি যে প্রকৃতির অন্যতম অনুষঙ্গ, তার সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিবছরের ন্যায় এবারো পাখির কলতানে মুখরিত হয়ে উঠেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এ ক্যাম্পাস।
শান্ত পানিতে লাল শাপলার মাঝে জলকেলিতে মেতে আছে পাখিরা। একটু থেমে থেমেই একঝাঁক পাখি পানিতে নামছে তো আরেক ঝাঁক উড়ে যাচ্ছে। মনে হবে, এটা পাখিদের আপন নীড়! এমন দৃশ্য পাখি প্রেমিকদের মুগ্ধ করে।
তীব্র শীতে পরিযায়ী এ পাখির আগমনে গত কয়েকদিন ধরে কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠেছে এ আবাসিক ক্যাম্পাস। হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে আসা অতিথি পাখির সৌন্দর্যে মুগ্ধ পাখি প্রেমিকরা।
তাদের কিচিরমিচির, ডানা ঝাপটে বেড়ানো, সাঁতার কাটা, রোদে বসে শরীর শুকানো ও রক্তিম শাপলা ফোটা জলাশয়গুলোতে ঝাঁক বেঁধে পাখিদের উড়াউড়ির নজরকাড়া দৃশ্য যেন এখনো শেষ হচ্ছে না।
মূলত এখানে দুই ধরনের পাখির আগমন ঘটে। এক ধরনের পাখি ডাঙ্গায়, শুকনো স্থানে বা ডালে থাকে। আরেক ধরনের পাখি পানিতে থাকে। সাধারণত এ দেশে ৩০-৩৫ প্রজাতির অতিথি পাখি আসে।
এদের বেশির ভাগই হাঁস জাতীয় ও পানিতে বসবাস করে। এর মধ্যে সরালি, পচার্ড, ফ্লাইফেচার, গার্গেনি, ছোট জিরিয়া, পান্তামুখী, পাতারি, মুরগ্যাধি, কোম্বাডাক, পাতারী হাঁস, জলকুক্কুট, খয়রা ও কামপাখি অন্যতম।
এছাড়া মানিকজোড়, কলাই, ছোট নগ, জলপিপি, নাকতা, খঞ্জনা, চিতাটুপি, লাল গুড়গুটি, বামুনিয়া হাঁস, লাল গুড়গুটি, নর্দানপিনটেল ও কাস্তে চাড়া প্রভৃতি পাখিও আসে।
এরা ডানায় ভর করে সূদুর সাইরেয়িা থেকে হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে এ অঞ্চলে আসে। প্রাণীবিদ্যা বিভাগের গবেষণায় দেখে গেছে, এ দেশে ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ৭৬টি প্রজাতির পাখি ছিল।
পরবর্তীতে নব্বয়ের দশকে পাখি সচেতনা বৃদ্ধি পায়। যার ফলে ১৮৯টি প্রজাতির পাখি এখন দেখা যায়। বর্তমান ক্যাম্পাসে ছোট-বড় মিলে ১২-১৪টি লেক রয়েছে।
এগুলোর মধ্যে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এবং জাহানারা ইমাম ও প্রীতিলতা হলসংলগ্ন দুটি লেকে অতিথি পাখির আনাগোনা বেশি। অতিথি পাখির জন্য লেকগুলোকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।