বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৬:১৫:১৩

হ্রদের নিচে টাকার পাহাড়!

হ্রদের নিচে টাকার পাহাড়!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: এক রহস্যময় হ্রদ। যার ভেতর লুকিয়ে রয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। সমুদ্রতল থেকে ৯ হাজার ফুট উঁচুতে এই হ্রদের অবস্থান। তবে ঠিক কত টাকার সম্পত্তি রয়েছে, তার হিসেব পাওয়া যায়নি। এই হ্রদে এত বিপুল পরিমাণে অর্থ থাকলেও, তার নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থাই করা হয়নি। প্রতি বছর এই রহস্যময়ী হ্রদে দলে দলে লোকেরা নিজের মনোকামনা নিয়ে আসেন। বর্তমানে সেই সংখ্যা ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেশ কয়েকবার চুরির চেষ্টা করেও, চোরেরা সফল হয়নি। কোনো কোনো ভাবে বাধা পেয়েছে তারা। জনসাধারণ বিশ্বাস, কমরুনাগ এই গুপ্তধনের রক্ষা করেন।

কোথায় এই ঝিল?....বিস্তারিত জানতে নিচের লিংকে...ভারতের হিমাচল প্রদেশের মান্ডি জেলা। নাচন বিধানসভা ক্ষেত্রের এক প্রাচীন মন্দির, নাম কমরুনাগ মন্দির। মহাভারতকালীন এই মন্দির লাগোয়া হ্রদের গর্ভেই রয়েছে কোটি কোটি টাকার ধন-সম্পত্তি। টাকা-পয়সা, এমনকি সোনা-রুপো পর্যন্ত রয়েছে এই হ্রদে।

আষাঢ় মাসের প্রথম দিনে কমরুনাগ মন্দিরে সরানাহুলি মেলা হয়। সেখানে দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা জড়ো হন। মনোকামনা পুরো হলে হাজার হাজার টাকাও হ্রদে দান করেন তারা। এমন কি সোনা-রুপোও দান করে থাকেন ভক্তরা।

বিপুল পরিমাণে সম্পত্তি থাকায়, অনেক বারই তা চুরির চেষ্টা চলেছে। কিন্তু প্রতিবারই মন্দির কমিটি এ ব্যাপারে খবর পেয়ে যান। ফলে চুরি আটকানো গিয়েছে। রাতের অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে মন্দির কমিটির লোকেদের আসতে দেখেই সেখান থেকে পালিয়ে গিয়েছে চোরেরা।

ইংরেজদের রাজত্বকালে ১৯১১ সালে সিসি গারওয়েট কমরুনাগ মন্দিরের কথা শোনার পর সেখানে যান। ওই হ্রদে সাধারণ মানুষকে অমূল্য বস্তু ফেলতে দেখে তার ধারণা হয়, এত ধন-সম্পদ এ ভাবে ব্যয় করার চেয়ে ভালো, তা তুলে নিয়ে রাজকোষে রাখা এবং তার সদ্ব্যাবহার করা।

মান্ডির রাজা তার প্রস্তাবে রাজি হলেও, মন্দিরের পুরোহিত এবং ভক্তরা বেঁকে বসেন। কিন্তু সেই কথা কানে তোলেননি গারওয়েট। কর্মীদের সঙ্গে হ্রদের উদ্দেশে রওনা হন তিনি। কিন্তু প্রবল বর্ষণের জেরে মাঝপথেই আটকে যান। চচ্যোটে আশ্রয় নেন তারা। সেখানে ফল খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন গারওয়েট। এর পরই সেখান থেকে ফিরে আসেন গারওয়েট এবং ইংল্যান্ড ফিরে যান।

কে কমরুনাগ?

পৌরনিক কাহিনী অনুযায়ী: মহাভারতে কৃষ্ণ রত্নযক্ষ নামক যোদ্ধাকে মেরে তার শরীর যুদ্ধক্ষেত্রে নিজের রথের পতাকার সঙ্গে ঝুলিয়ে দেন। যাতে তিনি মহাভারতের যুদ্ধ দেখতে পারেন। কিন্তু যে দিকেই রত্নযক্ষের মাথা ঘুরত, তার হুঙ্কার শুনে কৌরব এবং পাণ্ডব সেনা পালিয়ে যেত। এর পর কৃষ্ণ তাকে তটস্থ থাকার আবেদন জানান, যাতে পাণ্ডব যুদ্ধে জয়লাভ করে।

যুদ্ধে জয়ের পর রত্নযক্ষের শরীরে একটি বাক্সে বন্দি করে হিমালয়ের দিকে নিয়ে যান পাণ্ডবরা। মান্ডির নলসরে পৌঁছনোর পর সেখানে ভূমি গন্দর্ভ ধ্বনির কারণে তিনি পাণ্ডবদের নির্জন স্থানে নিয়ে যেতে বলেন। শেষে তাকে কমরুঘাটীতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এক রাখালের সরল জীবনযাপনে মুগ্ধ হয়ে রত্নযক্ষ সেখানেই থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

রত্নযক্ষ পাণ্ডব এবং ওই রাখালকে জানান যে, ত্রেতা যুগে তিনি এই প্রদেশেই জন্মগ্রহণ করেন। সেখানে এক নাগভক্ত নারীর গর্ভ থেকে ৯ পুত্রের সঙ্গে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার মা তাদের একটি বাক্সে বন্দি করে রাখতেন। একবার এক অতিথি মহিলা ওই বাক্সটি হাতে তোলেন।

তবে তাতে সাপ রয়েছে ভেবে ভয়ে তার হাত থেকে সেই বাক্স পড়ে যায়। প্রাণ বাঁচানোর জন্য রত্নযক্ষ হ্রদের পাশে কুওর ঘাসে লুকিয়ে পড়েন। পরে তার মা তাকে সেখান থেকে খুঁজে বার করেন এবং আমার নাম কুওরুনাগ রেখে দেন। কুওরুনাগই রত্নযক্ষ রাজা হিসেবে জন্ম গ্রহণ করেন।

২৩ সেপ্টেম্বর, র২০১৫/এমটিনিউজ২৪/আল-আমিন/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে