এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : এইডস আক্রান্তকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছেন সৌদির ৫ জন নারী। পরিবারের অনুমতিক্রমে সৌদির সুস্থ ৫ নারী এইডস আক্রান্ত রোগীকে বিয়ে করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। এর আগে স্বাস্থ্যবিধি মোতাবেক তাদের বিয়ে আটকে দেয়া হয়েছিল।
এই আশ্চর্যজনক খবরটি নিশ্চিত করেছেন সৌদি সোসাইটি ফর কমবেটিং এইডস-এর নির্বাহী পরিচালক মুসা হায়েজিয়া। সম্প্রতি মক্কার স্থানীয় একটি পত্রিকার মাধ্যমে তা নিশ্চিত করেন তিনি ।
হায়েজিয়া জানান, সংস্থার রেজিস্ট্রারে নিবন্ধিত এইডস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭০০। সংস্থাটি প্রতিষ্ঠার পর এ পর্যন্ত ১৪০ জন এইডস আক্রান্ত নারী এবং পুরুষের বিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে বলেও জানান হায়েজিয়া।
তিনি বলেন, আরো ৫০ জন মরণব্যাধি এইডস আক্রান্ত রোগী বিবাহের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছেন। বিবাহদের মধ্যে ৯৫ ভাগ দম্পতি সফল এবং স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন।
এ সংস্থার নিবন্ধিত এইডস আক্রান্ত রোগীদের বিয়ের জন্য আবেদনকৃত নারীদের মধ্যে বেশির ভাগই যুবতী। আবেদনের পেছনে বয়স, জাতীয়তা, সামাজিক অবস্থান এবং সর্বোপরি তালাকপ্রাপ্ত হওয়াটা মূল কারণ বলে যোগ করেন হায়েজিয়া।
সংস্থার নিবন্ধিত রোগীদের মধ্যে একজন সৌদির ছাত্র। তিনি ডিজাইন ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ওপর উচ্চতর ডিগ্রি নিতে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন।
অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পর ২০০৯ সালে এই রোগ ধরা পড়ে তার। এ খবরটি ছিল ওই ছাত্রের জন্য একটি বড় ধাক্কা। তবুও ছাত্রত্ব রক্ষা করতে তিনি অস্ট্রেলিয়াস্থ সৌদি দূতাবাসের কাছে বিষয়টি গোপন রাখেন।
পরে তার অভিবাবকদের বিষয়টি অবহিত করেন তিনি। তার বাবা-মা আর ভাইকে বিষয়টি বুঝিয়ে বলেন তিনি।
তিনি জানান, রোগ ধরা পড়ার পর প্রথমদিকে অস্ট্রেলিয়ার একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান তার ওষুধের খরচ বহন করে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া সরকার নিজ দেশের নাগরিক ছাড়া অন্য কোনো দেশের নাগরিকদের বিনামূল্যে এইডসের চিকিৎসা দেয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
এরপর খরচ বন্ধ করে দেয় ওই দাতব্য প্রতিষ্ঠান। অতঃপর তিনি উপায়ন্তর না পেয়ে বিষয়টি স্থানীয় সৌদি দূতাবাসকে অবহিত করেন। তার উচ্চতর ডিগ্রি সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসা খরচ বহন করতে রাজি হয়।
ডিগ্রি সম্পন্ন করে তিনি সৌদি আরবে ফিরে আসা নিয়ে ভয় পাচ্ছিলেন। ভালো চাকরি আর বিয়ে নিয়ে তিনি দুশ্চিন্তায় পড়ে যান।
এদিকে বেশির ভাগ এইডস আক্রান্ত রোগী হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হন। যখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানতে পারেন রোগীটি এইডসে আক্রান্ত তখন তারা আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে থাকেন। এ কথা বলেন হায়েজিয়া।
হায়েজিয়া আরো জানান, বেশির ভাগ কোম্পানিই এইডস আক্রান্তদের চাকরি দিতে অপারগতা প্রকাশ করে থাকে। কারণ তাদের প্রায়ই বেডরেস্টে এবং ওষুধের ওপর থাকতে হয়।