বৃহস্পতিবার, ২৬ মে, ২০১৬, ০৪:৩০:১৯

স্বাদে গন্ধে অনেক মিল, বাজারে আসছে নতুন ‘ইলিশ’

স্বাদে গন্ধে অনেক মিল, বাজারে আসছে নতুন ‘ইলিশ’

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: ইলিশের মতো এই মাছটিও ঝাঁক বেঁধে ঘোরে। ইলিশের মতোই ডিম পাড়ার সময়ে এরাও দলবেঁধে মোহনার দিকে বা অপেক্ষাকৃত মিষ্টি জলে চলে আসে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমবার ক্ষমতায় এসেই বলেছিলেন পুকুরে ইলিশের চাষ হবে। যা শুনে মৎস্যদফতরের কর্তাদেরও চোখ কপালে উঠেছিল। পাঁচ বছর বাদে মুখ্যমন্ত্রীর সেই স্বপ্ন কিছুটা হলেও সফল করতে পারে চ্যানস চ্যানস।  ফিলিপিন্সের জাতীয় মাছ। ইন্দোনেশিয়া, তাইওয়ানেও দারুণ জনপ্রিয়। কিন্তু এই বাংলায় ইলিশের বিকল্প হয়ে উঠতে পারবে কি চ্যানস চ্যানস? রাজ্য মৎস্যউন্নয়ন নিগমের কর্তারা অন্তত সেরকমই আশা দিচ্ছেন। সেই আশা নিয়ে আদতে ভারত এবং প্রশান্ত মহাসাগরের বাসিন্দা চ্যানস চ্যানস বা মিল্ক ফিশের চাষ শুরু হল দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার হেনরি আইল্যান্ডে। মৎস্যউন্নয়ন নিগমের নিজস্ব পুকুরে এই মাছের চাষ শুরু হল আজ থেকে। সেন্ট্রাল মেরিন ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের থেকে চ্যানস চ্যানসের ৩৬ হাজার চারা বিমানে করে মঙ্গলবারই কলকাতায় পৌঁছেছে।

সেই মাছের চারাগুলিই দক্ষিণ চব্বিশ পরগণায় ছাড়া হল। এ ছাড়াও দিঘা এবং ফ্রেজারগঞ্জে মৎস্যদফতরের পুকুরগুলিতে এই মাছের চাষ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। মৎস দফতরের কর্তারা এখনও এই মাছ চেখে দেখেননি। কিন্তু, অনেকটা ইলিশের মতো স্বভাবের এই মাছের স্বাদও ইলিশের মতো বলেই দাবি করছেন তাঁরা। চ্যানস চ্যানস বা মিল্ক ফিশ বড় হলে পাঁচ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। কিন্তু গড়পড়তা লম্বায় এর আকার এক মিটারের বেশি হয় না। যে মাছের চারাগুলি এদিন চাষ করার জন্য জলে ছাড়া হল, সেগুলি পুজো সময় নাগাদ বড় হয়ে যাবে বলেই আশাবাদী মৎস্যদফতরের কর্তারা। কিন্তু ইলিশ মাছের বিকল্প হওয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়ে বাংলায় আগমণ ঘটানো চ্যানস চ্যানসের দাম কেমন হবে? মৎস দফতরের কর্তারা অনুমান, কেজিপ্রতি আড়াইশো টাকার কাছাকাছি দাম পড়বে চ্যানস চ্যানসের। 

কিন্তু ভিনদেশি চ্যানস চ্যানস এ রাজ্যের পুকুরে মানিয়ে নিতে পারবে? রাজ্য মৎস উন্নয়ন নিগমের এমডি সৌম্যজিৎ দাস জানিয়েছেন, হেনরি আইল্যান্ড, ফ্রেজারগঞ্জ বা দিঘায় তাঁদের যে পুকুরগুলি রয়েছে, সেগুলির জল লবণাক্ত। ফলে চ্যানস চ্যানসের মানিয়ে নিতে কোনও অসুবিধাই হবে না। একবার চাষ সফল হলে, রাজ্যে চ্যানস চ্যানসের চাষ আরও বাড়াতে চান রাজ্য মৎস্যদফতরের কর্তারা। ইলিশের মতো চ্যানস চ্যানসও ঝাঁক বেঁধে ঘোরে। ইলিশের মতোই ডিম পাড়ার সময়ে দলবেঁধে মোহনার দিকে বা অপেক্ষাকৃত মিষ্টি জলে চলে আসে চ্যানস চ্যানস। ফলে স্বভাবগত দিক দিয়ে ইলিশের সঙ্গে অনেকটাই মিল রয়েছে চ্যানস চ্যানস বা মিল্ক ফিশের। তার উপরে ইলিশের মতো চ্যানস চ্যানসেও যথেষ্ট কাঁটা রয়েছে। এরাজ্যে বোনলেস ইলিশের মতো বোনলেস ব্যাঙ্গাস (চ্যানস চ্যানসের স্থানীয় নাম) ফিলিপিন্সে দারুণ জনপ্রিয় হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আসায় ভাঁটা পড়েছে। বাজারে পাঁচ-সাতশো গ্রামের যে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে, নদী দূষণ-সহ নানা কারণে তার স্বাদও যেন বাঙালির জিভে লাগে না। দু’একবছর আগে মায়ানমার থেকে যে ইলিশ এসেছিল, দাম কম হলেও তা বাঙালির মুখে রোচেনি। স্বভাবগত কিছুটা মিল থাকলেও চ্যানস চ্যানস বা মিল্ক ফিশে সত্যিই বাঙালির দুধের স্বাদ ঘোলে মেটে কি না সেটাই দেখার!-এবেলা

মে, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে