বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৩:৫৫:৪৮

উগান্ডার মানুষখেকো কুমির!

উগান্ডার মানুষখেকো কুমির!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : উগান্ডার কিছু এলাকায় কুমির আর মাছ ধরার চেষ্টা করছে না। বরং তাদের চোখ থাকছে জেলে এবং তীরের কাছাকাছি মানুষের ওপর। কুমির একবার কোনো মুনষ্য শিকার পেয়ে গেলে বাকিরাও ভোজে যোগ দিচ্ছে। লেক ভিক্টোরিয়ায় মাছ ধরতে গিয়ে একদিন এভাবেই আক্রান্ত হয়েছিলেন স্থানীয় জেলে করিম ওনেই। আফ্রিকার দেশ উগান্ডার জলাশয়গুলোতে মাছের পরিমাণ দিন দিন কমতে থাকায় মাছের বদলে মানুষ শিকারে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে সেখানকার নদী আর হ্রদের কুমিরগুলো।

কেবল ২০১৩ সালেই কুমিরের হামলার শিকার হয়েছেন ৩১ জন৷  দেশটির বন্যপ্রাণী বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, লেক ভিক্টোরিয়া, লেক আলবার্ট, লেক কিয়োগা এবং নীল নদের তীরে গত ১৪ বছরে নাকি অন্তত ৩৪০ জন মানুষ কুমিরের পেটে গেছে। সরকারি এ সংস্থার পরিচালক পিটার ওগওয়াং জানান, উগান্ডা আফ্রিকার স্বাদু পানির মাছের সবচেয়ে বড় উৎস হলেও অতি মাত্রায় মৎস্য আহরণের কারণে নদী ও হ্রদগুলোতে মাছের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে এসেছে। এতে কুমিরের খাবারেও টান পড়েছে৷

কিন্তু হ্রদ ও নদীতীরবর্তী এলাকাগুলোতে মনুষ্যবসতি দিন দিন বাড়ছে। ফলে কুমিরেরা সহজ পথটাই বেছে নিচ্ছে। ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে ওই ঘটনায় একটি হাত হারাতে হয়েছে ৪০ বছর বয়সি করিমকে৷ সেই সঙ্গে ছাড়তে হয়েছে মাছ ধরার পেশা। তাঁর বুক আর কাঁধে কুমিরের ধারালো নখের চিহ্ন যে কাউকে ভয় পাইয়ে দিতে পারে। করিমের ছোট ভাই জাকে কিজতোকেও দুটো হাত হারাতে হয়েছে কুমিরের হামলায়।

কামপালার ৯৫ কিলোমিটার পূর্বে ভাইরাকা এলাকার জেলে হেনরি নিয়াজি বলেন, এই কুমিরেরা খুবই ধূর্ত, তাদের গতিও সাংঘাতিক৷ সাধারণত সন্ধ্যা, মধ্যরাত আর ভোরের আগে এরা হামলা চালায়, যখন চারদিন একেবারে সুনসান থাকে। তবে বিকেল বেলায় লেক ভিক্টোরিয়ার ওপর দিয়ে যখন গা জুড়ানো ঠাণ্ডা হাওয়া বয়ে যায়, তখনো হ্রদের তীরে মরচে ধরা টিনের ঘরে জেলেদের মনে থাকে কুমিরের ভয়।

পূর্ব আফ্রিকার স্থলবেষ্টিত এই দেশে কুমিরের সংখ্যা কত তার সঠিক কোনো হিসাব নেই। তবে কেবল লেক আলবার্টেই অন্তত ৬০০ কুমির আছে বলে বন্যপ্রাণী বিভাগের পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০০৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৭৯টি মানুষখেকো কুমির ধরে ন্যাশনাল গেম পার্কে সরিয়ে নিয়েছেন বন্যপ্রাণী বিভাগের কর্মীরা। এর মধ্যে সবচেয়ে বড়টি ধরা হয় ২০০৫ সালে, যার ওজন ছিল প্রায় এক টন।

তবে আসল কথাটি এসেছে একজন জেলেরই মুখ থেকে৷ সরাসরি সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন হামজা মুগারিয়া। কুমির মানুষখেকো হচ্ছে এর কারণ লেকে আর পর্যাপ্ত মাছ নেই। সরকার এ বিষয়টি আমলেই নিচ্ছে না। এমনকি সাত বছরের একটা ছেলেকেও মাছ ধরার অনুমতি দেয়া হচ্ছে!
 
২৪ সেপ্টেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/আল-আমিন/এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে