বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৪:১৩:৫০

দারিদ্র্যের কাছে উপেক্ষিত!

দারিদ্র্যের কাছে উপেক্ষিত!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : আমরা হর হামেশা যাদের নিজস্ব গাড়ি নেই তারা টেম্পো বা লেগুনায় যাতায়াত করি। যে সময়টাতে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা সেই সময়টাতে কোমলমতি এ শিশুরা কাঁধে তুলে নিচ্ছে পরিবারের ভরণ-পোষণের বোঝা। ‘আফা, ভাংতি দ্যান। এতো বড় নোটের ভাংতি পামু কই? ভাই, সিকনালে নামবেন না? এই সিকনাল, সিকনাল।’


কথাগুলো বলছিল নিউমার্কেট-ফার্মগেট রুটে চলাচলকারী একটি লেগুনার হেলপার রানা। রানার বয়স ৮ অথবা ৯ বছর হবে। অভাবের তাড়নায় এ বয়সেই ছেলেটিকে নামতে হয়েছে জীবিকার সন্ধানে। বেঁচে থাকার তাগিদে ও পরিবারের চাহিদা মেটাতে ছোট্ট এ শিশুটি নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছে ঝুঁকিপূর্ণ এ পেশায়। এ চিত্র রানার একার নয়। সারাদেশেই ছড়িয়ে আছে এমন হাজারো রানা।

যারা দু’বেলা দুমুঠো খাবারের প্রয়োজনে প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ নানা কাজ। আর প্রতিদিনই বাড়ছে এমন শিশুর সংখ্যা, বাড়ছে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশু শ্রমিকের সংখ্যা। ঝুঁকিপূর্ণ কাজগুলো করতে গিয়ে শিশুরা অহরহ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগব্যাধিতেও। ব্যাহত হচ্ছে তাদের মানসিক বিকাশও।

সেভ দ্য চিলড্রেনের অঙ্গ সংগঠন কর্মজীবী শিশু সংগঠন প্রদীপন ও আরো কয়েকটি এনজিওর জরিপে দেখা যায়, দেশে প্রায় ৭০ লাখ শিশু শিশুশ্রমে নিয়োজিত। এরমধ্যে প্রায় ১৫ লাখ ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে নিয়োজিত। সরেজমিনে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ইট-পাথর ভাঙার কাজ, লোহা ঝালাইয়ের কাজ, গাড়ির গ্যারেজে ছাড়াও বাস বা লেগুনার সহকারী হিসেবে কাজ করছে বহু শিশু।

এ ছাড়া বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজও করতে হয় অনেক শিশুকে। বাবা-মায়ের সঙ্গে রাজধানীর কামরাঙ্গীর চরে থাকে তানিয়া। তার মা আজিমপুরের একটি বাসায় কাজ করেন। মা অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কারণে গত দুমাস সেই কাজ করতে হচ্ছে তাকেই।

তা না হলে মায়ের কাজটাই চলে যাবে বলে জানায় তানিয়া। আইএলও অনুযায়ী ৪৭টি কাজকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- যৌনকর্ম, চোরাচালানী, রাসায়নিক কারখানায় শিশুশ্রম, গ্লাস ফ্যাক্টরি, লবণ কারখানা, ওয়েল্ডিংয়ের কাজ ইত্যাদি।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে