স্বামীর প্রতারণায় স্ত্রীর করণীয়
এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল এবং জাতিভেদে ধর্মীয় বিধিবিধান ও সামাজিক রীতিনীতি এবং মানবিক মূল্যবোধের বৈচিত্র্য থাকলেও দাম্পত্য বন্ধনের ধরনটি প্রায় একই রকম।
দাম্পত্য সম্পর্কের নানা প্রতারণার বিষয়ে ১৫ বছর ধরে পেশাদার গোয়েন্দাগিরি করছে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি গোয়েন্দা জুলিয়া হার্টলে মুরের। প্রতারক স্বামীর ব্যাপারে করণীয় সম্পর্কে সম্প্রতি হাফিংটন পোস্ট-এ স্পষ্টভাবে নিজের মতামত প্রকাশ করেছেন এই গোয়েন্দা।
আপনাকে চাইলেও সে আপনার সাথে থাকছে। কারণ সে ওই নারীকে যেমন চায় তেমনি আপনাকেও চায়। ওই নারীর জন্য সত্যি সত্যি উথাল-পাথাল প্রেম থাকলে তিনি হয়তো আপনাকে ছেড়ে চলে যেতেন।
সে পরকীয়া করছে, তার ওপর নজরদারি করবেন কিনা। অবশ্যই। নিজেকে রক্ষার জন্য পদক্ষেপ নিতে গিয়ে কখনোই অপরাধবোধে ভুগবেন না। আপনার স্বামী কারো সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে আপনার যৌন-স্বাস্থ্যও ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তাই জানার অধিকার আপনার আছে।
স্বামীরা জানে যে, নারীরা তাদের ক্ষমা করে থাকে। বারবার প্রতারণা করার পর স্ত্রী বড়জোর চিৎকার চেঁচামেচি বা ঝগড়াঝাঁটি করলেও শেষ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয় না। পদক্ষেপ নিতে না পারলে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে হবে।
সে মিথ্যা বলে, তাকে কীভাবে বিশ্বাস করবেন? কাউকে নতুন করে বিশ্বাস করাটা খুবই কঠিন এবং অসম্ভবও। এটা কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লেগে যেতে পারে। অনেক পুরুষই মনে করে, একবার ক্ষমা চেয়ে ফেলেছেন মানে লেঠা চুকে গেছে। তাকে সংশোধনের সুযোগ দিতে হবে এবং বোঝাতে হবে যে, এমনটি আর ঘটবে না।
সত্য বলে তা মোকাবিলা করার সাহস না থাকার কারণেই স্বামীরা মিথ্যা বলেন। হয়তো তিনি ভাবেন যে অস্বীকার করতে থাকলে একসময় আপনি জানতে চাওয়াই ছেড়ে দেবেন এবং বিষয়টা মিটে যাবে। অনেক সময় অন্য নারীটিকে রক্ষার জন্যও তিনি মিথ্যা বলতে পারেন। কেননা আপনি জেনে গেলে ওই তথ্য কাউকে দিয়ে অন্য নারীটিকে আপনি বিপদে ফেলতে পারেন। আর সর্বোপরি নিজের ব্যক্তিত্ব রক্ষা বা অন্যরা কী ভাববে, তা মোকাবিলা করার সাহস না থাকাতেই তিনি মিথ্যা বলতে পারেন।
শিশুরা অনেক সময়ই এমন পারিবারিক জটিলতার বলি হয়। অনেক ক্ষেত্রে বিষয়গুলো খানিকটা বুঝতে পেরে ওরা নিজেদেরকেই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী মনে করতে শুরু করে এবং মানসিকভাবে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে। ফলে যদি সন্তানের কারণে একত্রে থাকার সিদ্ধান্ত নিতেই হয়, তাহলে দুজনে মিলে ঠিক করতে হবে কীভাবে সন্তানকে আক্রান্ত না করে এই সমস্যা সমাধান করা যায়। সারাক্ষণ ঝগড়া করা বাবা-মায়ের চেয়ে সন্তানের কাছে একজন সুখী বাবা কিংবা একজন সুখী মা অনেক ভালো মনে হতে পারে।
আপনি চলে যেতে চাইলে সে গুরুত্ব দেয় না। কারণ আপনি কখনোই তাকে ছেড়ে চলে যাননি। মনে রাখবেন, আপনি বারবার একই কাজ করে ভিন্ন ফল আশা করতে পারেন না। বাস্তবিক কোনো পদক্ষেপ ছাড়া কোনো কিছু করার হুমকি কোনো অর্থ বহন করে না। আর সত্যি সত্যি চলে যেতে চাইলে বা বিচ্ছেদ চাইলে সেজন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে আপনাকে। বিচ্ছেদ-পরবর্তী সময় নিজের টিকে থাকার সংগ্রামের জন্য নিজেকে প্রস্তুত না করলে এমন কথা বলাটা কাজের কিছু হবে না।
২৪ সেপ্টেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/আল-আমিন/এএস