এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। তবে এ জন্য সামর্থ্যও থাকা চাই। কারো সামর্থ্য না থাকা, কারো বা সুযোগের ঘাটতি আবার কারো ইচ্ছা না থাকায় পড়াশোনার দৌড়গড়ায় পৌঁছা সম্ভব হয়ে উঠে না।
তবে প্রতিটি বাবা-মা-ই চান তাদের সন্তান লেখাপড়া করে ভালো মানুষ হোক; সমাজ, জাতি ও নিজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক। এ জন্য অনেক অভিভাবককে কঠোর পরিশ্রমও করতে হয়।
কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের এক মা তার ছেলের পড়াশোনা নিশ্চিত করতে যা করছেন তা সত্যিই ভাবনার। সুচিত্রা মুখোপাধ্যায় (৪৫) নামে ওই মা তার ছেলের ডক্টরেট পড়াশোনা নিশ্চিত করতে রিকশা চালাচ্ছেন!
নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করার কারণে সুচিত্রা মুখোপাধ্যায়ের বাপেরবাড়ির সঙ্গে সম্পর্ক তিক্ত হয়েছে আগেই। স্বামী কাজ করেন একটি ওষুধের দোকানে। অভাবের সংসারে ছেলের খরচ যোগানো কঠিন হয়ে পড়ায় এ পথ বেছে নিয়েছেন তিনি।
এক বেলার খাবার জোটেতো আরেক বেলা প্রায় উপোস থাকতে হয়। তবে অভাবের সংসার হলেও স্বপ্ন দেখতে ভুলে যাননি সুচিত্রা মুখোপাধ্যায়।
তার স্বপ্ন ছেলেকে ডক্টরেট করাবেন। তার প্রত্যয় সংসারে যতোই অভাব থাক ছেলেকে ডক্টরেট করতেই হবে।
সেই স্বপ্ন পূরণে নিজেই অটোরিকশা নিয়ে নেমে পড়েছেন রাস্তায়। ছেলে অভিষেক এবং স্বামী শান্তি মুখোপাধ্যায় প্রথমে আপত্তি করলেও পরে অবশ্য বিষয়টি মেনে নিতে বাধ্য হন তারা।
অভিষেক এখন বাকুড়ার পাঁচমুড়া কলেজের গণিতে বিষয়ে সম্মান প্রথমবর্ষের ছাত্র। তিনিও পড়ালেখা শেষ করে মায়ের পাশে দাঁড়াতে চান।
বাকুড়ার সানবাধ এলাকায় ‘পুতুন দি’ নামে পরিচিত সুচিত্রাদেবী একসময় রাজনীতিতেও অংশ নিয়েছিলেন।
তবে দলের সঙ্গে মতপার্থক্যের কারণে ক্ষমতা পাওয়ার মাস দুয়েক পরই পদত্যাগ করেন বাকুড়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকে। এখন তিনি নিজের স্বপ্ন পূরণে তিন মাস ধরে অটোরিকশা চালাচ্ছেন।
১৪ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম