এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : লবন খাবার ও শরীরের এক অতি-গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। খাবারে লবন না হলে সেই খাবার বিস্বাদ হয়ে যায়। আবার বেশি লবন হলেও বিপত্তি!
তাই অল্পেই খুশি হয় মানুষের চাহিদা। কিন্তু, লবনের গুণ যেমন আছে, তেমন দোষও আছে। খাবারে যেমন লবন বেশি হলে স্বাদ নষ্ট হয়, ঠিক তেমন শরীরে লবন বেশি গেলে শরীরও নষ্ট।
এখন আপনি ভাবতে পারেন, আমরা তো রান্নায় মাপজোক করেই লবন দিয়ে থাকি। কিন্তু, দোকান থেকে যেসব প্যাকেটবন্দি খাবার আপনি কিনছেন, তাতে লবনের মাত্রা কতটা, তা কি আপনি জানেন? এনিয়েই সমীক্ষার ভিত্তি এক চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে, দ্য জর্জ ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেল্থ।
এই সংস্থা দিল্লি এবং হায়দরাবাদের প্রায় ছ’হাজার রকমের প্যাকেটবন্দি খাবারের নমুনা সংগ্রহ করে সমীক্ষা চালিয়েছে। সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি, সংগৃহীত ছ’হাজার নমুনার মধ্যে প্রায় চার হাজার প্যাকেটে এটা লেখাই নেই যে, তাতে লবনের মাত্রা কতটা।
যে ১৬০০ প্যাকেটে এই তথ্য রয়েছে, তাতেও দেখা যাচ্ছে, লবনের মাত্রা নির্ধারিত সীমার থেকে অনেক বেশি। সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি, ১৮টি ক্যাটেগরিতে এই নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সব পরীক্ষায় একই ফল পাওয়া গেছে।
আতঙ্কের কারণ আরো আছে। যে প্যাকেটবন্দি খাবারে বিপজ্জনক মাত্রায় লবনের উপস্থিতি দেখা গিয়েছে, সেই তালিকায় রয়েছে — পাঁউরুটি, পাঁপড়, আচার, কর্নফ্লেক্স, স্যুপ এবং সস।
অর্থাৎ যে কোনো বাড়িতে, যে কোনোদিন দেখতে গেলে যে খাবারগুলি অবশ্যই মিলবে। অথচ, সেই খাবারেই আপনার জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে বিপদ। দ্য জর্জ ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেল্থের সমীক্ষা অনুযায়ী, সকালে উঠে যে পাঁউরুটি আপনি খান, হয়ত তাতেই নির্ধারিত মাত্রার তুলনায় ১০ গুণ বেশি লবন রয়েছে!
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিতভাবে নির্ধারিত মাত্রার তুলনায় বেশি লবন আপনার শরীরে গেলে শিশু থেকে বয়স্ক, সবার শরীরে সমান ক্ষতি হয়। রক্তচাপ বেড়ে যায়। হৃদরোগের আশঙ্কা বাড়ে। কিডনি, লিভারেরও ক্ষতি হয়।
এবার কেউ ভাবতেই পারেন, এই সংস্থার রিপোর্ট আদতে কতটা বিশ্বাসযোগ্য? তাহলে এই সংস্থা সম্পর্কে কিছু কথা শুনে নিন। জর্জ ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেলথ তৈরি হয় ২০০৭ সালে।
সংস্থার মূল লক্ষ্য ছিল ডায়াবেটিস, কিডনির অসুখ, হৃদরোগের ফলে মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে আনা। সেজন্য বিভিন্ন এলাকায় খাবারের গুণমান নিয়ে সমীক্ষা চালায় তারা।
বিশ্বের তিনটি অ্যাকাডেমিক রিসার্চ অর্গানাইজেশনের একটি হলো এই সংস্থা, যারা ক্লিনিকাল ট্রায়াল চালাতে পারে সেই সমীক্ষার গুরুত্বও যথেষ্ট। সেজন্যই এই সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক গড়েছে ৬০ টিরও বেশি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান।
যার মধ্যে রয়েছে, পাবলিক হেল্থ ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ, ইউনিভার্সিটি অফ হায়দরাবাদ। এছাড়া অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অফ সিডনির অনুমোদনও পেয়েছে এই সংস্থা।
এহেন সংস্থাই বলছে, আপনার প্রতিদিনের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা প্যাকেটবন্দি নানা খাবারে বিপজ্জনক মাত্রায় লবন রয়েছে। এরপরো সমস্যাকে গুরুত্ব না দেয়ার কি উপায় আছে?-এবিপি অনন্দ
২ আগস্ট, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই