ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্তু দফায় দফায় উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় উভয় পক্ষের ১৫-২০টি ঘর ও দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংঘর্ষে ছয়জন পুলিশসহ উভয় পক্ষের ৪০-৫০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে আছাদ শেখ (৪০) নামে একজন ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। পুলিশ সদস্যরা বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। উভয় পক্ষের বাকি আহতরা বিভিন্ন মামলার আসামি থাকায় বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিয়ে পলাতক রয়েছে।
খবর পেয়ে বোয়ালমারী ও সালথা থানার পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় দুইপক্ষের সংঘর্ষ ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ শর্টগানের গুলি নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করেন।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, এক সপ্তাহ আগে উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি মাসুদ শেখের সমর্থক মনিরুল ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পাদক বিষয়ক সম্পাদক আ. মান্নান মাতুব্বরের সমর্থক নজরুল মোল্যা স্থানীয় কুমার নদে পাশাপাশি পাট পঁচানোর জন্য জাগ দেয়। কয়েকদিন পরে মনিরুলের পাটের জাগ হারিয়ে গেলে তিনি নজরুল মোল্যার বাড়ি গিয়ে পাটের জাগের ব্যাপারে জানতে চায়। এ সময় উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনা ও কোরবানির মাংস কিভাবে ভাগাভাগি হবে এ নিয়ে ময়েনদিয়া ও পরশ্বেরদী গ্রামে ঈদের আগেরদিন দুই গ্রুপের বিভিন্ন সময় গোপনে মিটিং চলছিলো। এ ঘটনার জের ধরে গতকাল শুক্রবার সাড়ে ৯টার দিকে দুই গ্রুপের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
পরমেশ্বরদী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি মো. মাসুদ শেখ বলেন, আমি ঢাকায় অবস্থান করছি। ঈদেও বাড়ি যায়নি। শুনেছি ময়েনদিয়া বাজারে আমার দোকান ও আমার পক্ষের লোকজনের বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে মান্নান মাতুব্বর গং।
অন্য পক্ষের নেতৃত্বকারী আ. মান্নান মাতুব্বর বলেন, আমি স্থানীয় রাজনীতি করি। আমার লোকজনকে দলে নিতে মাসুদ ও চেয়ারম্যান মুকুল মিনা বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি দেখায়। আজকে তাদের লোকজন আমার পক্ষের লোকজনের উপর হামলা চালালে আমার লোকজনও তাদের উপর পাল্টা হামলা চালিয়েছে। আমার দুজন আহত হয়ে ফরিদপুর মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছে।
পরমেশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নুরুল আলম মিনা মুকুল বলেন, আমি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, আমার কোন গ্রুপ নাই। মান্নান মাতুব্বর গ্রুপ ও মাসুদ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
বোয়ালমারী থানার ওসি মোহাম্মদ নুরুল আলম বলেন, এলাকা বর্তমানে শান্ত রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্তু কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি।-কালের কণ্ঠ