এমটি নিউজ ডেস্ক : জন্ম থেকেই দুটি হাত না থাকায় ‘পা দিয়ে লিখে’ এসএসসি পাশ করা সেই জসিম এখন স্বাবলম্বী হওয়ার সংগ্রামে নেমেছেন।
ফরিদপুর সিটি কলেজের বিএম শাখার দ্বিতীয় বর্ষের এ শিক্ষার্থী নিজের লেখাপড়ার পাশাপাশি পরিবারের দরিদ্র মা-বাবার সংসারের হাল ধরতে চান। এজন্য ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে মৌসুমি ফল বিক্রি করছেন।
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কদমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসি এবং তালমা নাজিমুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি ও এসএসসি পাশ করেন শারীরিক প্রতিবন্ধী জসিম।
বর্তমানে তিনি ফরিদপুর সিটি কলেজের বিএম শাখার দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। জন্ম থেকেই দুটি হাত না থাকায় ‘পা দিয়ে লিখে’ সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন জসিম।
জসিম নগরকান্দার তালমা ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামের উত্তরপাড়ার দরিদ্র কৃষক হানিফ মাতুব্বর ও গৃহিণী মোসা. তছিরন বেগমের ছেলে। চার ভাই এক বোনের মধ্যে গরিব কৃষক বাবা-মায়ের বড় সন্তান জসিম।
বাবা হানিফ মাতুব্বর কৃষিকাজ করে খুব কষ্টে সংসার চালান। বাড়ি ও ফসলি জমি নিয়ে সম্পত্তি বলতে মাত্র আট শতাংশ জায়গা। সাত সদস্যের সংসার চালাতে অন্যের জমিতে কামলা দিয়ে পয়সা রোজগার করতে হয় তাকে। দুবেলা সন্তানদের মুখে ভাত তুলে দিতে হিমশিম খেতে হয় তাকে। আর অভাবের এ সংসারে থেকেই লেখাপড়া করছেন জসিম।
জসিম লেখাপড়া শিখে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান, মানুষের মতো মানুষ হতে চান। প্রতিবন্ধীরা যে সমাজের বোঝা নয়, সেটাও প্রমাণ করতে চান।
জসিমের বাবা হানিফ মাতুব্বর বলেন, অভাবের মধ্যেও সন্তানদের লেখাপড়া করাচ্ছি। আমি চাই ওরা মানুষের মতো মানুষ হোক। এজন্য চার ছেলে ও এক মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছি। জসিম জানান, আমি লেখাপড়া করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই, মা-বাবার মুখ উজ্জ্বল করতে চাই। লেখাপড়া শেষ করে আমি শিক্ষক হতে চাই।
তিনি বলেন, আমার বাবা দরিদ্র কৃষক। আমাদের লেখাপড়া ও সংসারের খরচ চালাতে তার খুবই কষ্ট হচ্ছে। তাই আমি লেখাপড়ার পাশাপাশি ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করেছি। আমি বাবা-মা ও ভাই-বোনদের জন্য কিছু করতে চাই।-যুগান্তর