গাজীপুর : গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে জন্ম নিয়েছে ক্যাঙ্গারু শাবক। ২০১৪ সালের আগস্টে ফ্যালকন ট্রেডার্সের মাধ্যমে আফ্রিকা থেকে আনা হয় একটি পুরুষ ও দুটি স্ত্রী ক্যাঙ্গারু। প্রায় দুই বছর পর তাদের শাবকটি জন্ম নিল।
সহকারী বন সংরক্ষক (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) সাহাবুদ্দিন জানান, পর্যটনের এ মৌসুমে ক্যাঙ্গারু শাবক দর্শনার্থীদের অন্যরকম আনন্দ দেবে। তবে দেশে ক্যাঙ্গারুর বাচ্চা দেওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম।
পার্কের ওয়াইল্ডলাইফ সুপারভাইজার সরোয়ার হোসেন খান ও আনিসুর রহমান জানান, ক্যাঙ্গারু অস্ট্রেলিয়া, নিউগিনি, তাসমানিয়ার আশপাশের দ্বীপাঞ্চলগুলোয় বেশি পাওয়া যায়। ক্যাঙ্গারুর আদিনিবাস অস্ট্রেলিয়া হলেও পার্কে আনা হয় আফ্রিকা থেকে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে ভিন্ন পরিবেশ হলেও পার্কে উপযুক্ত পরিবেশ পেয়ে রেড (হলদে লাল) পুরুষ আর ধূসর বর্ণের নারী দম্পতি প্রায় দুই বছর পর একটি ধূসর বর্ণের মেয়ে শাবকের জন্ম দিয়েছে। ক্যাঙ্গারু শাবক ৭-৮ মাস মায়ের দুধ পান করে। আর এক বছর পর পরিবার থেকে আলাদা হয়ে যায়। এরা প্রাকৃতিক পরিবেশে ১২ থেকে ১৬ বছর বেঁচে থাকে। তবে সাফারির আবদ্ধ জোনে ২০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।’
বড় ক্যাঙ্গারুগুলো ম্যাক্রোপোডিড পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। এরা দুই বছরে ৩ বার বাচ্চা দেয়। লাল ও ধূসর ক্যাঙ্গারু আকারে বড় হয়। এদের ২ মিটার দৈর্ঘ্য আর ৮৫ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়ে থাকে।
সাফারী পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, পার্কে কোনও প্রাণী শাবক প্রসব করলে তাৎক্ষণিকভাবে সাধারণদের জানানো হয় না। জন্ম নেওয়া শাবকগুলোর একটি নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পর তা জানানো হয়। বিভিন্ন প্রকার রোগ-বালাই, সংক্রামক ব্যাধি এবং আবহাওয়া ও পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার পরই বিষয়টি জানানো হয়।
পার্ক-সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ক্যাঙ্গারু শাবক দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।
বুধবার পার্কের ক্যাঙ্গারু বেষ্টনীতে গিয়ে দেখা গেছে, ক্যাঙ্গারু ছানাটি বেষ্টনীর ভেতরে ছোটাছুটি করছে। কখনও মায়ের পেটের নিচের থলির ভেতর স্থির থাকছে, আবার কখনও থলি থেকে বের হয়ে মা-বাবার সঙ্গে খেলা করছে। মা যেদিকে যাচ্ছে শাবকটিও সেদিকে যাচ্ছে।
ক্যাঙ্গারুকে নিয়মিত কলা, আপেল, কলমি শাক, গাজর, শশা, খেজুর, সবুজ ঘাসসহ বিভিন্ন ফল দেওয়া হয়। -বাংলা ট্রিবিউন।
০৫ নভেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম