নিউজ ডেস্ক : আগামী ১৩ জানুয়ারি শুরু হবে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমাবেশ বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। ১৫ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। এরই মধ্যে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে ইজতেমা ময়দান প্রস্তুত করতে পুরোদমে কাজ এগিয়ে চলছে। ইজতেমার বিশাল ময়দানজুড়ে টাঙানো হচ্ছে চটের সামিয়ানা। জেলাওয়ারি খিত্তার ভাগসহ বিদেশি মেহমানদের জন্য ইজতেমা ময়দানের পাশে নির্মাণ করা হচ্ছে টিনসেডের আলাদা থাকার জায়গা। ইজতেমা সফলভাবে সম্পন্ন করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বাড়তি ব্যবস্থা। প্রথম পর্বে ১৬টি জেলার মুসল্লিরা অংশ নেবেন।
ইজতেমার সার্বিক কাজের অর্ধেক সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইজতেমার শীর্ষ মুরুব্বি মাওলানা গিয়াস উদ্দিন।
বিশ্ব ইজতেমার মুরুব্বি মাওলানা গিয়াস উদ্দিন জানান, বিশ্ব ইজতেমা সফল ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন এবং দ্বীনের মেহনত কায়েমের লক্ষ্যে জোড় ইজতেমা থেকেই মুসল্লিরা দলে দলে ভাগ হয়ে ইজতেমার মাঠে কাজ করছেন। প্রতি বছরের মতো স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে স্কুলের-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইজতেমা মাঠে প্রস্তুতিমূলক কাজ করছেন। তাবলীগ জামাতের উদ্যোগে ১৬০ একর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত ইজতেমা মাঠে বিশ্বের প্রায় সব মুসলিম দেশ থেকেই তাবলীগ জামাতের অনুসারী ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা অংশ নেন। তারা এখানে তাবলীগ জামাতের শীর্ষ আলেমদের বয়ান শোনেন এবং ইসলামের দাওয়াতি কাজ বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য জামাতবদ্ধ হয়ে বেরিয়ে যান।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) এস এম আলম জানান, ইজতেমা সফল ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্নের লক্ষ্যে বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রস্তুতিমূলক সভা হয়েছে। জেলা প্রশাসক এস এম আলমের সভাপতিত্বে প্রস্তুতিমূলক সভায় ইজতেমা মাঠ প্রস্তুতিসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর মধ্যে রয়েছে ইজতেমা এলাকার পরিবেশ উন্নয়ন, আইনশৃঙ্খলা, বস্তি ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, মুসল্লিদের অজু, গোসল, রান্নাবান্না, খাবার পানি সরবরাহ, বিদেশি মেহমানদের জন্য টয়লেট ও গোসলখানা নির্মাণ, সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ, স্বাস্থ্যসেবা, মশক নিধন ও দুর্গন্ধ দূরীকরণ, তুরাগ নদীতে পল্টুন ব্রিজ নির্মাণ, বিদেশি মেহমানদের তাবুতে গ্যাস সরবরাহ, টেলিফোন সংযোগ প্রদান, বিশেষ ট্রেন ও বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা, খাদ্যে ভেজাল রোধ এবং দৃব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও যানজট নিরসন, ইজতেমাস্থলে ধূলাবালি নিয়ন্ত্রণ, পিএ কভারেজ, আপত্তিকর সিনেমা পোস্টার অপসারণ, ফুট ওভারব্রিজ সংস্কার, গাছপালা সংরক্ষণ, কন্ট্রোলরুম স্থাপন।
এবারও ৫ স্তরের বিশেষ নিরাপত্তা, মুসল্লিদের চিকিৎসা সেবায় ১৪টি অ্যাম্বুলেন্স, বিআরটিসির ৩৫০টি বাসসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ইজতেমা সফল ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইজতেমা মাঠ পরিদর্শনসহ তাদের প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করেছেন। প্রতিবারের মতো বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের প্রবেশ পথে তল্লাশির ব্যবস্থা ছাড়াও র্যাব ও পুলিশের ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ, সিসিটিভি স্থাপন, খিত্তাওয়ারি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ কাজ করবে।
১৯৬৭ সাল থেকে নিয়মিত বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১৯৯৬ সালে একই বছর ২ বার বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের স্থান সংকুলান না হওয়ায় ২০১১ সাল থেকে নিয়মিত দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করা হচ্ছে। -বাংলা ট্রিবিউন।
১৯ ডিসেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম