কাপাসিয়া (গাজীপুর) থেকে এফ এম কামাল হোসেন : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-৪, কাপাসিয়া আসনে বিএনপি দলীয় মনোনীত প্রার্থী বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত নেতা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) আ স ম হান্নান শাহ্ পুত্র শাহ্ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজ গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে সহকারী রির্টানিং অফিসারের কার্যালয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রির্টানিং অফিসার মোসাঃ ইসমত আরা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ হুমায়ূন কবীর মনোনয়ন ফরম গ্রহন করেন। মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার সময় শাহ্ রিয়াজুল হান্নান তাদের নিকট সকল প্রার্থীর সমান সুযোগ-সুবিধা ও অধিকার নিশ্চিত করার জোড়ালো দাবী জানান। এ সময় উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ¦ খলিলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সেলিম, সাবেক সভাপতি অধ্যাপক এমদাদুল হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন মাস্টার, জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম বেপারী, উপজেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসাইন বেপারী, উপজেলা যুবদলের সভাপতি হোসেন সারোয়ার উপস্থিত ছিলেন।
মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার পর স্থানীয় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি কাপাসিয়ার একটি ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। আমার পিতামহ সুপ্রিম কোর্টের প্রতিথযশা আইনজীবী মরহুম ফকির আব্দুল মান্নান চল্লিশ ও পঞ্চাশের দশকে মুসলিমলীগের কেন্দ্রীয় নেতা এবং খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী হিসাবে স্কুল, কলেজ, মাদরাসা প্রতিষ্ঠা সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করেন। পরবর্তীতে কাপাসিয়ার উন্নয়নের রূপকার আমার পিতা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হান্নান শাহ্ কাপাসিয়া আসনে এমপি ও পাটমন্ত্রী থাকাকালে কাপাসিয়ার রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ-কালবার্টসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছেন। আমি তাদের পদাঙ্ক অনুস্বরণ করে কাপাসিয়ার সার্বিক উন্নয়নে কাজ করতে চাই।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, বর্তমানে দেশে গণতন্ত্র নেই। মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নেই। বিএনপির লক্ষ-লক্ষ নেতা-কর্মীরা মিথ্যা মামলার শিকার হয়ে জেল হাজতে আছেন। বিএনপির চেয়ারপার্সন, মাদার অব ডেমোক্রেসি বেগম খালেদারজিয়া আজ মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দি। কাপাসিয়াসহ পুরো দেশই আজ কারাগারে পরিনত হয়েছে। এ অবস্থায় আন্দোলনেরে অংশ হিসাবে বিএনপি, ২০ দল ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। কিন্তু নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা হলেও এখনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরী হয়নি। সরকার দলীয় আওয়ামীলীগ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্গন করে প্রতিনিয়ত মিছিল মিটিং ও শোভাযাত্রা করছে। এমনকি সম্পূর্ণ আচরণবিধি লঙ্গন করে তাদের দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। প্রশাসনকে দলীয় করন করা হয়েছে। তাদের আচরন দেখে মনে হয়, আইন শুধু আমাদের জন্যই তৈরী করা হয়েছে। অন্যরা অবাধে দলীয় কর্মকান্ড করে যাচ্ছে। তাদের কিছু বলা হচ্ছে না। আমি আমার গ্রামের বাড়িতে পিতার কবর জিয়ারত করতে গেলেও পুলিশ পাঠানো হয়। বাড়িতে আমার আতœীয়-স্বজন এসেছে সেখানেও পুলিশ পাঠিয়ে ভয় দেখানো হয়েছে। বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষক, যারা নির্বাচনী কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন, তাদেরকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোবাইল করে রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাওয়া হয়েছে। এতে তাদের মাঝে আতংক সৃষ্টি হয়েছে। এটা নির্বাচন কমিশনের আইন বিরোধি কর্মকান্ড। এতো কিছুর পরও নির্বাচন যদি নুন্যতম সুষ্ঠু হয়, ধানের শীষ মার্কার বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। কাপাসিয়ার বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঐক্যবব্ধ। কাপাসিয়া বিএনপির ঘাটি বলে তিনি দাবী করেন। মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার আগে সকালে উপজেলা বিএনপির সাফাইশ্রীস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের নিয়ে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এ ছাড়া গত বুধবার শেষ সময় পর্যন্ত মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ দলীয় মনোনীত প্রার্থী তাজউদ্দীন আহমদ কন্যা সিমিন হোসেন রিমি এমপি, সিপিবি’র মনোনীত প্রার্থী মানবেন্দ্র দেব, জাতীয় পার্টির মোশারফ হোসেন জয়, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের নুরুল ইসলাম সরকার, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) এর অ্যাডভোকেট সারোয়ার-ই-কায়নাত, জাকের পার্টির জুয়েল কবির, স্বতন্ত্র প্রার্থী মনির হোসেন মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।