গাজীপুর থেকে : করোনা পরি'স্থিতির কারণে ১৫ দিনের বেশি হল ভিক্ষা করতে বের হতে পারছিলেন না বৃদ্ধা জামেনা খাতুন (৭০)। জমানো চাল ফুরিয়ে যাওয়ায় সোমবার দুপুর থেকে আর পেটে দানাপানি পড়েনি। তাই খাবারের খোঁ'জে অন্যদিনের তুলনায় মঙ্গলবার একটু আগেই ঘুম থেকে উঠেন ওই বৃদ্ধা। ক্ষু'ধায় ক্লান্ত শরীর টেনে কোন রকমে ঘরেনর টিনের বেড়ার দরজা খুলেতেই হ'তবা'ক হন।
দরজার সামনে বড় একটি বস্তা। ভিতরে চাল, ডাল, আলু, পিয়াঁজ, লবনসহ অনেক খাদ্য সামগ্রী। প্রথমে নিজের চোখকে বিশ্বাস করাতে পারছিলেন না তিনি। ভেবে ছিলেন স্বপ্ন দেখছেন। ততক্ষণে বস্তা ভর্তি খাদ্য সামগ্রীর খবর রটে যায় গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া পূর্বপাড়া বস্তিতে। দরজা খুলে কর্মহীন ও অসহায় বাসিন্দারা দেখেন সবার দরজার সামনেই খাদ্য সামগ্রীর বস্তা।
বস্তার গায়ে লেখা নাম থেকে জানতে পারেন গাজীপুর মহানগর যুবলীগের আহবায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেল খাদ্য সামগ্রী ভরা এসব বস্তা দিয়ে গেছেন। জামেনা খাতুন বলেন, 'শুনেছি তিনি ভালা মানুষ। কোনদিন দেহি নাই। দোয়া করি আল্লাহ তারে আরো বড় করুক।' শুধু ভোগড়া পূর্বপাড়া বস্তি নয়, মঙ্গলবার ভোর থেকে করোনার কারণে গাজীপুর মহানগরীতে কর্মহীন হয়ে পড়া ভোগড়া ও এর আশেপাশের ১০ হাজার মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেন যুবলীগ নেতা রাসেল।
ফজরের নামাজের পর ভ্যানে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে ঘরের দরজায় রেখে আসেন বস্তা ভর্তি খাদ্য সহায়তা। কোন কোন এলাকায় যুবলীগের কর্মীদের দিয়ে পাঠিয়েছেন। ভোরে ঘুম থেকে জেগে দরজা খুলে খাদ্য সামগ্রী পেয়ে বেজায় খুশি সহায়তা প্রাপ্তরা। ভোগড়ার বাসিন্দা আজমত আলী (৬৫) জানান, তিনি একটি কারখানায় ডে লেবারের কাজ করেন। ১০ দিন ধরে কারখানা বন্ধ। পরিবারের পাঁচ সদস্যের মুখে খাবার তুলে দিতে হিমসিম খাচ্ছিলেন।
মঙ্গলবার খুব ভোরে দরজা খুলে দেখতে পান দরজার সামনে খাদ্যের বস্তা রাখা আছে। পরে জানতে পারেন যুবলীগের কামরুল আহসান সরকার রাসেল তাদের জন্য এ খাদ্য পাঠিয়েছেন। তার মত মানুষ হয়না।' খাদ্য সহায়তা প্রসঙ্গে যুবলীগ নেতা কামরুল আহসান সরকার রাসেল বলেন, সাধারণ জনগণের জন্যই রাজনীতি। তারা অভূক্ত থাকলে কাদের জন্য রাজনীতি করবো। তাই সকল প্রকার জনসমাগম ও ভিড় এড়িয়ে তিনি নিজে ও যুবলীগের কর্মীরা রাত পোহানোর আগেই খুব ভোরে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে কর্মহী'ন, অস'হায় ও নিন্ম আয়ের লোকদের ঘরের দরজার সামনে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন।