গাজীপুর : গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আলোচিত সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের পর এবার তার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে তালাকের নোটিশ দিয়েছেন স্ত্রী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে নোটিশটি।
গত ৩০ এপ্রিল জাহাঙ্গীরের স্ত্রী কাজী রাজিয়া সুলতানা তালাকের নোটিশটি পাঠিয়েছেন। নোটিশে তিনি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতন, অত্যাচার ও ভরণপোষণ না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী, নোটিশ পাঠানোর পর সম্পর্কের উন্নতি না হলে ৯০ দিন পর চূড়ান্তভাবে তালাক কার্যকর হবে।
নোটিশে দেখা যায়, ২০১১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি মিরপুরের বাসিন্দা কাজী ইকবাল বাহারের মেয়ে কাজী রাজিয়া সুলতানা জয়ীর সঙ্গে গাজীপুরের বাসিন্দা মিজানুর রহমানের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে জাহাঙ্গীর আলম স্ত্রীকে মানসিক নির্যাতন ও অত্যাচার ও নিয়মিত ভরণপোষণ না দেয়ায় সংসারজীবনে অশান্তি শুরু হয়।
নোটিশের অনুলিপি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়রকে দেওয়া হয়েছে। নোটিশে সাক্ষী হিসেবে আছেন কাজী তৈয়াবুর রহমান ও কাজী নাজমুস সাকিব।
তবে বিষয়টি নিয়ে একরকম মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন জাহাঙ্গীর। এমনকি তার নিকটাত্মীয়রাও এ বিষয়ে কোন কথা বলতে নারাজ।
মঙ্গলবার (১৬ মে) দুপুরে নগরীর ছয়দানা এলাকায় নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলন করেন জাহাঙ্গীর আলম। এসময় তালাকের নোটিশ সম্পর্কে জানতে চাইলে কিছুটা বিব্রত হয়ে গণমধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের পরিবারেরটা পরিবার....। আমরা এখন রাজনৈতিক কারণে সংবাদ সম্মেলন করছি। ২৫ তারিখে ভোট। আপনারা আপাতত ভোটটা নিয়ে থাকুন।
তিনি আরও বলেন, ‘এখন অনেকেই অনেক ধরনের ভালো-খারাপ কথা বলবে। এটা তাদের ব্যাপার। আমরা কারো পরিবার, কারো ব্যক্তিত্ব নিয়ে কথা বলতে চাই না। যদি কেউ ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা বলতে চান, তাহলে আসেন আমার বাসায়, বসেন, শুনে যান।’
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর জাহাঙ্গীর আলমকে প্রথমে গাজীপুর মহানর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। পরে অনিয়ম ও দুর্নীতির নানা অভিযোগে মেয়রের পদ থেকেও তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
গত রোববার (১৪ মে) আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়। এরপর গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীর আলমকে স্থায়ীভাবে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের তথ্য এক চিঠিতে জানান দলের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া।
এর পরপরই ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে স্ত্রী কাজী রাজিয়া সুলতানার তালাকের নোটিশটি ছড়িয়ে পড়ে।