জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বরখাস্ত হওয়া মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানের ছেলেও বিএনপি নেতা এম মঞ্জুরুল করিম রনি ও তার স্ত্রী তাপসী তন্ময় চৌধুরীর বিরুদ্ধে নাশকতার দায়ে গাজীপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বৃহষ্পতিবার(১০ মার্চ)পুলিশ বাদী হয়ে গাজীপুরের সদর থানায় এ মামলাটি করেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর সদর থানার সাব ইন্সপেক্টর ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো: বাচ্চু মিয়া।
মামলা প্রসঙ্গে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) সাব ইন্সপেক্টর মো: বাচ্চু মিয়া বলেন, ২০১৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি গা্জীপুরে সরকার উৎখাতের জন্য নাশকতা হয়। ওই মামলায় ২০ জন এজাহারভুক্ত ও ৩০/৪০ অজ্ঞাত নামা আসামি ছিল। যার মামলা নং ৬০। তদন্তে জানা গেছে, ওই সময় মঞ্জুরুল করিম রনি ঘটনাস্থলে ছিলেন। তিনি ওই নাশকতার অর্থদাতা ও অন্যতম পরিকল্পনাকরী। । যার কারণে ২০১৩ সালের মামলায় এম মঞ্জুরুল করিম রনিকে এই মামলায় নতুন করে আসামি করা হয়েছে। আমি এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
মামলা প্রসঙ্গে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা(আইও)সাব ইন্সপেক্টর বাচ্চু বলেন,বিগত দিনে সুনিদিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মঞ্জুরুল করিম রনির বিরুদ্ধে নাশকতার প্রমাণ থাকায় নাশকতার মামলা হয়েছে। এই মামলাতে ও আমরা যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ পেয়েছি। তাঁর স্ত্রী এবং শ্বশুর শাহরুম চৌধুরী রুমি, শাশুড়ী আসমা বেগম আভা দেশে নাশকতা সৃষ্টির ইন্ধনকারী হিসেবে আমরা বিবেচনা করছি।
এর আগেও মঞ্জুরুল করিম রনির বিরুদ্ধে সরকার বিরোধী আন্দোলনের জন্য বেশ কিছু মামলা করা হয়। উল্লেখ্য ২০১৫ সালের ২৫ আগষ্ট গাজীপুরে নাশকতার একটি মামলা করা হয়।যে মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩২ জনের নাম ছিল।
চার্জ শীট অনুসারে, এম এ মান্নানের ছেলে মঞ্জুরুল করিম রনি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করে তারেক রহমানের যোগসাজশে আবারো বর্তমান সরকারকে উৎখাত করা ও নাশকতার পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন ধরণের যড়যন্ত্র করছে। এরই আলোকে রনি ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আগের মামলার আসামি করা হয়েছে।
মামলায় বলা হয়, তারেক রহমান এবং রনি নাশকতার মূল পরিকল্পনাকারী, বলেন গাজীপুর পুলিশ সুপার হারুন-অর-রশিদ।
“রনি তারেকের সাথে তার লন্ডন বাস ভবনে দেখা করে এবং সেখানেই তারা দুজনে মিলে গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির দেশব্যাপী হরতাল ও অবরোধের সময় নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করে।
এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত রনির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এটি একটি রাজনৈতিক মামলা। বর্তমান সরকার নিজেদের রক্ষার জন্য আমার, আমার পরিবারও আমার নেতা তারেক জিয়ার নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। মামলায় উল্লেখিত সময়ে আমি বাংলাদেশে ছিলাম না্। সুতরাং এর সাথে আমার জড়িত থাকার প্রশ্ন্ই আসেনা। আমি সব সময় গাজীপুরবাসীর সুখশান্তি ও সমৃদ্ধির কথা চিন্তা করেছি এবং করে যাব।
এর আগের মামলা প্রসঙ্গে গাজীপুরের পুলিশ সুপার জানান, ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি ২০দলীয় জোটের হরতাল চলাকালে গাজীপুরের মনিপুর খাসপাড়া এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ করে। এসময় তারা একটি বাসে কেরোসিন ও পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে। এতে বাসটি পুড়ে ৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। এঘটনায় জয়দেবপুর থানার এএসআই দিলীপ চন্দ্র সরকার বাদী হয়ে ১৮ জনের নামেও অজ্ঞাত নামা আরো ৪০-৪৫ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। প্রথমে মামলাটি তদন্ত করেন এস আই রফিকুল ইসলাম-৩। তিনি এজাহারে আসামিদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেন। রফিকুল বদলি সূত্রে অন্যত্র চলে যাওয়ায় পরবর্তীতে এসআই এনামুল হক মামলাটি তদন্ত করেন।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, ৩২ জনের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (৩)/২৫-ঘ সত্য বলে প্রমাণিত হওয়ায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই এনামুল হক জয়দেবপুর থানার অভিযোগ পত্র নং ৯৩৯ মঙ্গলবার দাখিলের জন্য আদালতে প্রেরণ করেন। এমামলায় ১১জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল।
১০ মার্চ, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস