গাজীপুর : গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের অবসর প্রস্তুতিকালীন ছুটিতে থাকা কারারক্ষী সার্জেন্ট ইন্সট্রাক্টর রুস্তম আলী হাওলাদার (৫৯) খুনের ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই ও মেয়ের জামাইসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটককৃতকরা হলেন নিহতের মেয়ের জামাই সোহেল রানা, নিহতের ছোট ভাই শাহ আলম ও যে ফার্মেসির সামনে খুন হন তিনি সেই ফর্মেসির মালিক সাইফুল ইসলাম।
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের অবসর প্রস্তুতিকালীন ছুটিতে থাকা কারারক্ষী সার্জেন্ট ইন্সট্রাক্টর রুস্তম আলী হাওলাদার (৫৯) কারাগারসংলগ্ন একটি ফার্মেসি দোকানের সামনে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন।
২৫ এপ্রিল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রুস্তম আলী কাশিমপুর কারাগার লিঙ্ক রোডে কারাগারের মূল ফটক থেকে মাত্র ২৫০ গজ দূরে একটি ওষুধের দোকানের সামনে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন। তিনি গাজীপুর কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন উত্তর পাশে দেওয়ালিয়া বাড়ি এলাকায় জমি ক্রয় করে বাড়ি নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। তিনি কারা কোয়ার্টারে সপরিবারে বসবাস করে আসছিলেন।
রুস্তম আলী পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার চড়গাছিয়া এলাকার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে।
কোনাবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোবারক হোসেন জানান, কাশিমপুর কারাগারের লিঙ্ক রোডে কারাগারের মূল ফটক থেকে মাত্র ২৫০ গজ দূরে একটি ওষুধের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন রুস্তম আলী।
এসময় মোটরসাইকেল আরোহী দুই দুর্বৃত্ত তাকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় কাশিমপুর কারাগার কর্তৃপক্ষ তাকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহম্মদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত. ঘোষলা করেন।
শহীদ তাজউদ্দীন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. আব্দুস সালাম সরকার জানান, মৃতাবস্থায় রুস্তমকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তার বুকের বাম পাশে, গালে ও বাম হাতে গুলির ক্ষত রয়েছে।
কাশিমপুর কারাগার-১ এর ডেপুটি জেলা সুপার মো. মমিনুল ইসলাম জানান, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জানতে পারি রুস্তম আলীকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে পালিয়ে গেছে। পরে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে মৃত দেখতে পাই।
নিহত রুস্তম আলী কাশিমপুর মহিলা কারাগার থেকে সার্জেন্ট ইনষ্ট্রাক্টর হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে গত ৪ নভেম্বর থেকে অবসরপূর্ব ছুটিতে যান। তিনি জানান, রুস্তম ১৯৭৪ সালের ৮ নভেম্বর চাকরিতে যোগদান করেন। তিনি অবসরপূর্ব ছুটি ভোগ করছিলেন।
ঘটনাস্থল থেকে দুই রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান কোনাবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচর্জ এসআই মো. মোবারক হোসেন।
কারা মহাপরিদর্শক মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী হাসপাতালে নিহত রুস্তমের লাশ দেখতে আসেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এখন পর্যন্ত এটা তদন্তাধীন আছে। পুলিশ এবং র্যাব বিষয়টি তদন্ত করছে।
গাজীপুর পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, সন্দেহভাজন হিসেবে একজনকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তনাধীন।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাইল হাসান রেজা জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফার্মেসি মালিক সাইফুল ইসলাম, নিহতের মেয়ের জামাতা ঝুট ব্যবসায়ী সোহেল রানা ও নিহতের ছোট ভাই শাহ আলমকে আটক করা হয়েছে।
২৫ এপ্রিল,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম