শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০২:০৪:২৭

কোরবানির জন্য প্রয়োজনীয় কতগুলো মাসআলা-মাসায়েল, যা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ

কোরবানির জন্য প্রয়োজনীয় কতগুলো মাসআলা-মাসায়েল, যা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ

মাওলানা মাহবুবুর রহমান, ঢাকা : কোরবানী সামর্থ্যবানদের জন্য একটি ওয়াজিব ইবাদত। এ ইবাদত প্রতিবছরে একবারই আদায় করতে হয়। আর বছরে সুযোগও একবারের।

কিছু ভুলে কোরবানি আল্লাহর কাছে কবুল নাও হতে পারে। কোরবানি কবুল হওয়ার বিষয়টি মহান রবের হাতেই। তবে অনেক ভুল হতে পারে কোরবানির প্রক্রিয়ায়। তাই
কোরবানীর জন্য প্রয়োজনীয় কতগুলো মাসআলা-মাসায়েল, যা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কিছু মাসআলা-মাসায়েল তুলে ধরা হলো-  

মাসআলা:১
কেউ চাইলে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পক্ষ হয়ে কোরবানি করতে পারে। এছাড়া মৃত আত্মীয়-স্বজন, জীবিত আত্মীয়-স্বজনের পক্ষ থেকেও কোরবানি করা জায়েজ আছে।
মাসআলা: ২
যদি কেউ নিজের খুশিতে কোনো মৃত ব্যক্তির সওয়াব পৌঁছানোর উদ্দেশে কোরবানি করে, তবে তা জায়েজ আছে এবং ওই গোশত নিজেও খেতে পারবে এবং যা কে ইচ্ছা দিতেও পারবে।
মাসআলা: যদি একটি গরুতে সাত জনের কম ৫/৬ জন শরিক হয় এবং কারো অংশ সাতভাগের কম না হয়; (যেমন, ৭০ হাজার টাকা দিয়ে গরু কিনলে কারো অংশে যেন দশ হাজার টাকা কম না হয়) তবে সবার কোরবানি জায়েজ হবে। আর যদি আট জন অংশীদার হয়, কবে কারো কোরবানি বৈধ হবে না।

মাসআলা: ৩
যদি গরু কেনার আগে সাতজন অংশীদার হয়ে সবাই মিলে কেনে, তবে তা উত্তম, আর যদি কেউ একা একটি গরু কোরবানির জন্য কেনে এবং মনে মনে ইচ্ছা রাখে যে, পরে আরো লোক শরিক করে তাদের সঙ্গে মিলে কোরবানি করবে, তবে সেটাও জায়েজ আছে। কিন্তু যদি গরু কেনার সময় অন্যকে অংশীদার করার ইচ্ছা না থাকে, বরং একাই কোরবানির নিয়ত করে থাকে, কিন্তু পরে অন্যকে অংশীদার করতে চায়, এমতাবস্থায় যদি ওই ক্রেতা লোকটি গরিব হয় এবং তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব না থাকে, তবে সে তার কেনা পশুতে এখন অন্য কাউকে অংশীদার করতে পারবে না, বরং একা একাই গরুটি কোরবানি করতে হবে (যার ওপর কোরবানি ওয়াজিবই হয়নি তার জন্য প্রযোজ্য)। আর যদি ওই ক্রেতা সম্পদশালী হয় এবং তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়ে থাকে, তবে ইচ্ছা করলে পরে অন্য অংশীদার নিতে পারবে।
মাসআলা: ৪
যদি কোরবানির পশু হারিয়ে যায় এবং আরেকটি পশু দ্রুত কেনার পর যদি প্রথম পশুটি পাওয়া যায়, এমতাবস্থায় ক্রেতা যদি সম্পদশালী হয়, তবে যে কোনো একটি পশু কোরবানি করা ওয়াজিব হবে। আর যদি লোকটি গরিব হয়, তবে দু’টো পশুই কোরবানি করা তার ওপর ওয়াজিব হবে (যার ওপর কোরবানি ওয়াজিবই হয়নি তার জন্য প্রযোজ্য)।
মাসআলা: ৫
কোরবানির পশু কেনার পর যদি সেটি বাচ্চা প্রসব করে, তবে ওই বাচ্চাটিকেও কোরবানি করে গরিব মিসকীনদের দিয়ে দেবে, নিজে খাবে না। তবে জবাই না করে সেটি কোনো গরিবকে দান করে দেওয়াও জায়েজ।
মাসআলা: ৬
গর্ভবতী পশু কোরবানি করা জায়েজ আছে। যদি জবাই করার পর পেটের বাচ্চা জীবিত পাওয়া যায়, তবে সে বাচ্চাটিও জবাই করতে হবে।

মাসআলা: ৭
সাতজন মিলে অংশীদার হয়ে যদি একটি গরু কোরবানি করে, তবে গোশত নিজেদের ধারণা অনুযায়ী ভাগ করা যাবে না। দাঁড়িপাল্লা দিয়ে মেপে সমান সমান ভাগ করা উচিত। অন্যথায় যদি ভাগের মধ্যে তারতম্য হয়ে যায়, তবে সুদ হয়ে যাবে এবং গোনাহগার হবে। অবশ্য যদি গোশতের সঙ্গে মাথা, পা বা চামড়াও ভাগ করে দেওয়া হয়, তবে যে ভাগে মাথা, পা, চামড়া থাকবে, সে ভাগে গোশত কম হলেও জায়েজ হবে, যত কমই হোক। কিন্তু যে ভাগে গোশত বেশি সে ভাগে মাথা, পা, বা চামড়া দিলে সুদের মতো হবে এবং গুনাহ হবে।
মাসআলা: ৮
ছাগলের বয়স পূর্ণ এক বছরের কম হলে জায়েজ হবে না। এক বছর পূর্ণ হলে জায়েজ হবে। গরু, মহিষ দুই বছরের কম হলে কোরবানি জায়েজ হবে না। পূর্ণ দুই বছর হলে জায়েজ হবে। উট পাঁচ বছরের কম হলে জায়েজ হবে না। দুম্বা এবং ভেড়ার হুকুম ছাগলের মতো। কিন্তু ছয় মাসের বেশি বয়সের দুম্বার বাচ্চা এমন মোটাতাজা হয় যে এক বছরের দুম্বার পালে ছেড়ে দিলে সেটিকে আলাদা করে চেনা না যায়, তবে সেই দুম্বার বাচ্চাও কোরবানির জন্য জায়েজ আছে, অন্যথায় নয়। কিন্তু ছাগলের বাচ্চা যদি এরকম মোটা তাজাও হয়, তবুও এক বছর পূর্ণ না হলে কোরবানি জায়েজ হবে না।
মাসআলা: ৯
যে পশুর চোখ দু’টি অন্ধ, অথবা একটি চোখ পূর্ণ অন্ধ বা একটি চোখের তিনভাগের একভাগ বা আরও বেশি দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে গেছে, তবে সে পশুর কোরবানি জায়েজ নয়। এমনিভাবে যে পশুর একটি কানের বা লেজের এক তৃতীয়াংশ বা তার বেশি কেটে গেছে, সেটিও কোরবানির জন্য জায়েজ নয়।
মাসআলা: ১০
যে পশু এমন খোঁড়া যে মাত্র তিন পায়ের ওপর ভর করে চলে, চতুর্থ পা মাটিতে লাগে না, অথবা মাটিতে লাগে বটে, কিন্তু তার ওপর ভর দিতে পারে না, এমন পশুর কোরবানি জায়েজ নয়। আর যদি খোঁড়া পায়ের উপরও ভর দিয়ে খুড়িয়ে চলে, তবে সেরকম পশুর কোরবানি জায়েজ আছে।

মাসআলা: ১১
পশুটি যদি এমন জীর্ণ ও শুকনো হয় যে তার হাড়ের মধ্যের মগজও শুকিয়ে গেছে, তবে এমন পশুর কোরবানি জায়েজ নয়। হাড়ের ভেতরে মগজ যদি না শুকিয়ে থাকে, তবে কোরবানি জায়েজ আছে।
মাসআলা: ১২
যে পশুর একটি দাঁতও নেই, এমন পশুর কোরবানি জায়েজ হবে না। আর যদি দাঁত পড়ে থাকে এবং অবশিষ্ট দাঁতের সংখ্যা যদি বেশি হয় তবে কোরবানি জায়েজ হবে।
মাসআলা: ১৩
যে পশুর জন্মলগ্ন থেকে কান নেই, সেটার কোরবানি জায়েজ নয়। কান আছে কিন্তু খুব ছোট, তবে সেটার কোরবানি জায়েজ।
মাসআলা: ১৪
যে পশুর জন্ম থেকে শিং হয়নি কিংবা শিং ছিল, কিন্তু ভেঙে গেছে, তবে এমন পশু দিয়ে কোরবানি জায়েয আছে। অবশ্য যদি একবোরে মূল থেকে ভেঙে যায়, তবে কোরবানি জায়েজ নয়।

মাসআলা: ১৫
যে পশুকে খাসি বানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সে পশু দিয়ে কোরবানি জায়েজ আছে। এমনিভাবে যে পশুর গায়ে বা কাঁধে দাদ বা খুজলি হয়েছে সেটিরও কোরবানি জায়েজ। অবশ্য খুজলির কারণে যদি পশু একবোরেই জীর্ণ হয়ে থাকে, তবে কোরবানি জায়েজ হবে না।
মাসআলা: ১৬
ভালো পশু কেনার পর যদি এমন কোনো ত্র“টি দেখা দেয়, যার কারণে কোরবানি জায়েজ হয় না, তবে ওই পশুটি রেখে অন্য একটি পশু কিনে কোরবানি করতে হবে (যার ওপর কোরবানি ফরজ)। অবশ্য যার ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয়, নিজেই আগ্রহ করে কোরবানি করার জন্য কেনে, সে ওই পশুই কোরবানি করবে। অন্য আরেকটি পশু কেনার প্রয়োজন নেই।

মাসআলা: ১৭
কোরবানির মাংস নিজে খাওয়া এবং নিজের পরিবারবর্গকে খাওয়ানোতে কোনো দোষ নেই। আত্মীয়-স্বজনকে হাদিয়া দেওয়া এবং গরিব মিসকীনকেও দান করা ভালো। কোরবানির মাংস ভাগের সর্বোত্তম পন্থা হলো- তিন ভাগ করে এক ভাগ গরিবদের দান করা, একভাগ আত্মীয়দের দেওয়া ও একভাগ নিজে রাখা। যদি কেউ এর চেয়েও কম বা বেশি করে তাতে গুনাহ হবে না।
মাসআলা: ১৮
কোরবানির চামড়া এমনিতেই দান করে দেওয়া মুস্তাহাব (ভালো)। কিন্তু যদি চামড়া বিক্রি করে, তবে এর মূল্য হিসেবে প্রাপ্য ওই টাকাটাই গরিবকে দান করতে হবে। ওই টাকা নিজে খরচ করে যদি অন্য টাকা দান করে, তবে আদায় হয়ে যাবে, কিন্তু অনুত্তম হবে।
মাসআলা: ১৯
কোরবানির চামড়ার দাম মসজিদ মেরামত বা অন্য কোনো নেক কাজে খরচ করা জায়েজ নয় বরং গরিবকে দান করতে হবে।
মাসআলা: ২০
যদি চামড়া নিজের কাজে ব্যবহার করে যেমন, কিছু তৈরি করে, তবে এটাও জায়েজ আছে।
মাসআলা: ১১
পশুটি যদি এমন জীর্ণ ও শুকনো হয় যে তার হাড়ের মধ্যের মগজও শুকিয়ে গেছে, তবে এমন পশুর কোরবানি জায়েজ নয়। হাড়ের ভেতরে মগজ যদি না শুকিয়ে থাকে, তবে কোরবানি জায়েজ আছে।

মাসআলা: ১২
যে পশুর একটি দাঁতও নেই, এমন পশুর কোরবানি জায়েজ হবে না। আর যদি দাঁত পড়ে থাকে এবং অবশিষ্ট দাঁতের সংখ্যা যদি বেশি হয় তবে কোরবানি জায়েজ হবে।
মাসআলা: ১৩
যে পশুর জন্মলগ্ন থেকে কান নেই, সেটার কোরবানি জায়েজ নয়। কান আছে কিন্তু খুব ছোট, তবে সেটার কোরবানি জায়েজ।
মাসআলা: ১৪
যে পশুর জন্ম থেকে শিং হয়নি কিংবা শিং ছিল, কিন্তু ভেঙে গেছে, তবে এমন পশু দিয়ে কোরবানি জায়েয আছে। অবশ্য যদি একবোরে মূল থেকে ভেঙে যায়, তবে কোরবানি জায়েজ নয়।
মাসআলা: ১৫
যে পশুকে খাসি বানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সে পশু দিয়ে কোরবানি জায়েজ আছে। এমনিভাবে যে পশুর গায়ে বা কাঁধে দাদ বা খুজলি হয়েছে সেটিরও কোরবানি জায়েজ। অবশ্য খুজলির কারণে যদি পশু একবোরেই জীর্ণ হয়ে থাকে, তবে কোরবানি জায়েজ হবে না।
মাসআলা: ১৬
ভালো পশু কেনার পর যদি এমন কোনো ত্র“টি দেখা দেয়, যার কারণে কোরবানি জায়েজ হয় না, তবে ওই পশুটি রেখে অন্য একটি পশু কিনে কোরবানি করতে হবে (যার ওপর কোরবানি ফরজ)। অবশ্য যার ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয়, নিজেই আগ্রহ করে কোরবানি করার জন্য কেনে, সে ওই পশুই কোরবানি করবে। অন্য আরেকটি পশু কেনার প্রয়োজন নেই।

মাসআলা: ১৭
কোরবানির মাংস নিজে খাওয়া এবং নিজের পরিবারবর্গকে খাওয়ানোতে কোনো দোষ নেই। আত্মীয়-স্বজনকে হাদিয়া দেওয়া এবং গরিব মিসকীনকেও দান করা ভালো। কোরবানির মাংস ভাগের সর্বোত্তম পন্থা হলো- তিন ভাগ করে এক ভাগ গরিবদের দান করা, একভাগ আত্মীয়দের দেওয়া ও একভাগ নিজে রাখা। যদি কেউ এর চেয়েও কম বা বেশি করে তাতে গুনাহ হবে না।
মাসআলা: ১৮
কোরবানির চামড়া এমনিতেই দান করে দেওয়া মুস্তাহাব (ভালো)। কিন্তু যদি চামড়া বিক্রি করে, তবে এর মূল্য হিসেবে প্রাপ্য ওই টাকাটাই গরিবকে দান করতে হবে। ওই টাকা নিজে খরচ করে যদি অন্য টাকা দান করে, তবে আদায় হয়ে যাবে, কিন্তু অনুত্তম হবে।
মাসআলা: ১৯
কোরবানির চামড়ার দাম মসজিদ মেরামত বা অন্য কোনো নেক কাজে খরচ করা জায়েজ নয় বরং গরিবকে দান করতে হবে।
মাসআলা: ২০
যদি চামড়া নিজের কাজে ব্যবহার করে যেমন, কিছু তৈরি করে, তবে এটাও জায়েজ আছে।
১০আগস্ট ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে