ইসলাম ডেস্ক: ইসলাম শান্তির ধর্ম। মিলে মিশে সবাই একসাথে বসবাস করার কথা ইসলামের মধ্যমেই আমরা শিখেছি। কিন্তু আমাদের সমাজে অনেক সময় দেখা যায় কিছু লোক কারো সাথে নিজে যেমন মিশে না কাউকে মিশতেও দেয়না। ওই ধরণের লোক কাউকে যেমন ভালোবাসে না, ঠিক তেমনই সে কারো কাছ থেকে ভালোবাসাও পায় না।
মূলত আচরণীয় দিক দিয়ে সব মানুষ এক নয়। কেউ নম্র, কেউ কর্কশ, কেউ পাষাণ। পাষাণ হৃদয়ের মানুষের কারণে পরিবার থেকে শুরু করে সমাজ ও রাষ্ট্রে নানাবিধ সমস্যা দেখা যায়।
সে হিসেবে বলা যায়, বিশ্বব্যাপী মুসলমানরা আজ যে সব সমস্যায় জর্জরিত- তন্মধ্যে অন্যতম হলো মানুষের মন কঠিন হয়ে যাওয়া, অন্তর পাষাণ হয়ে উঠা। বুদ্ধিমানদের উচিৎ হলো যে সব কারণে মানুষের মন কঠিন হয়ে যায় সে সব থেকে দূরে থাকা।
অভিজ্ঞ ও চিন্তাশীল আলেমরা নিম্নলিখিত কারণে অন্তর কঠিন হয়ে যায় বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন—
১. জামায়াতের সহিত নামাজ আদায়ে অনিহা। মসজিদের গিয়ে দ্রুত বের হয়ে আসা। কোরআনে কারিম তেলাওয়াত না করা। হারাম রোজগারে অভ্যস্থ হওয়া।
২. অহংকার, প্রতিশোধপরায়ণতা, মানুষের দোষ-ত্রুটি ও অন্যয়-অপরাধকে ক্ষমা না করা। মানুষকে অবহেলা করে নিকৃষ্ট মনে করা ও মানুষকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করাকেও মন পাষাণ হওয়ার কারণ বলা হয়েছে।
৩. দুনিয়ার প্রতি মাত্রাতিরিক্ত আসক্ত হয়ে পড়া। দুনিয়া দ্বারা প্রতারিত হওয়া এবং মৃত্যু-কবর এমনকি আখেরাতকে ভুলে যাওয়া। মহিলাদের প্রতি আসক্তি মানুষের অন্তরকে কঠোর করে দেয়। এটা হারামও বটে।
৪. আমি নিজে প্রতিদিন কি কি খারাপ কাজ করলাম? নিজের সমালোচনা নিজে না করে অন্য মানুষের সমালোচনা করা। অনেক দিন দুনিয়ায় থাকবো, অনেক কিছুর মালিক হবো- এমন ভুল ধারণায় লিপ্ত থাকা।
৫. আল্লাহতায়ালার জিকির বেশি বেশি না করে বরং বেশি বেশি কথা বলা। মাত্রাতিরিক্ত হাসাহাসিতে লিপ্ত থাকা। অন্যকে নিয়ে তামাশা এবং মশকরা করলে ধীরে ধীরে মানুষের মন কঠিন হয়ে যায়।
৬. বেশি খাওয়া-দাওয়া করা, ঘুমানো ও মানুষের ওপর অত্যাচার করা। শরীয়তের কোনো আদেশ-নিষেধ লংঘন হওয়ার কারণ ব্যতীত ভিন্ন কোনো কারণে রাগ করা। মিথ্যা, পরচর্চা ও একজনের কথা অন্যের কাছে গিয়ে বলার মাধ্যমে উভয়ের মাঝে ঝামেলা সৃষ্টি করা।
৭. খারাপ মানুষের সাথে উঠাবসা ও চলাফেরা করা। কোনো মুসলমানকে মনে মনে অথবা প্রকাশ্যে হিংসা করা। কোনো মুসলমানের উন্নতি সহ্য করতে না পারা। অন্যের ধ্বংস কামনা করা। কোনো মুসলামনের সাথে শত্রুতা করা, তার প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করা এবং তাকে অপছন্দ করা।
৮। নিজের অথবা অপর মুসলিম ভাইয়ের উপকার ও ফায়দা ব্যতীত নিজের ও অন্যের সময় নষ্ট করা। ইসলামী শিক্ষা হতে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখা। জাদুকর, গণক, জোতিষী, তান্ত্রিকের কাছে যাওয়া এবং মাদকাসক্তি হওয়া।
৯. আল্লাহর নিকট গুরুত্বসহকারে দোয়া না করে, নিজের মেধা ও শ্রমকেই সফলতার চাবিকাঠি মনে করাসকাল-সন্ধ্যার জিকিরসমূহ পাঠ না করা। গান শোনা, নৈতিক চরিত্র নষ্ট করে অথবা মন্দ কাজে প্রলুব্ধ করে এমন কিছু দেখা ও পড়া।
৮ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/মাহমুদ