দোয়ার ইখলাসসমূহ
ইসলাম ডেস্ক: আল্লাহ তাআলার কাছে কোনো কিছু একাগ্রতার সঙ্গে চাইলে তা কবুল হয়ে থাকে। নিজের জন্য দোয়া নিজেই করা উত্তম। নফল নামাজ পড়ে, কোরআন শরিফ তিলাওয়াত করে, দান-সদকা-খয়রাত অথবা কোনো নেক আমল করে ইখলাসের সঙ্গে আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করলে তা ব্যর্থ হয় না।
বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত দোয়ার আদবসমূহ: দোয়ার শুরু ও শেষে আল্লাহর প্রশংসা (হামদ-সানা) এবং রাসুল (সা.)-এর প্রতি দরুদ শরিফ পাঠ করা। (তিরমিজি, ৫: ৩৪৭৬)। দোয়ার আগে কোনো নেক আমল (নামাজ, সদকা ইত্যাদি) করে নেওয়া অথবা সালাতুল হাজত পড়ে নেওয়া। নিজ নেক আমলের অছিলা দিয়ে দোয়া করা। (বুখারি, ৮: ৫৯৭৪)। শুধু দুনিয়ার জন্য দোয়া না করা। (সূরা বাকারা, আয়াত: ২০১)। কাকুতি-মিনতিসহ গোপনে দোয়া করা। (আরাফ, আয়াত: ৫০)। অন্তরে ভয় ও আশা নিয়ে দোয়া করা। (সূরা আরাফ, আয়াত: ৫৬)। শুধু মুসিবতের সময়কেই দোয়ার জন্য নির্দিষ্ট না করা। (সূরা ইউনুস, আয়াত: ১২, তিরমিজি, ৫: ৩৩৮২)।
স্বাভাবিক ভাব ও সাধারণ দোয়া করা, অর্থাৎ ভাষায় ইচ্ছাকৃত ছন্দ ও মাধুর্যতা না আনা। (বুখারি, ৮: ৬৩৩৭)। দোয়ায় হঠকারিতা না করা, কারণ দোয়া হলো আবেদন, দাবি নয়। নিজের অকল্যাণ আর অপরের অমঙ্গলের দোয়া না করা। (বুখারি, ৮: ৬০১০)। পাপের শাস্তি দুনিয়াতে না চাওয়া; বরং ÿক্ষমা চাওয়া। (মুসলিম)। জান-মাল ও সন্তানসন্ততির জন্য বদদোয়া (অভিশাপ) না করা। (মুসলিম)। নিজের মৃত্যুর জন্য দোয়া না করা। (বুখারি, ৭: ৫৬৭২)। একই দোয়া বারবার (অন্তত তিনবার) করা। ক্রন্দন করা কিংবা ক্রন্দনের অবস্থা আনয়ন করা। গুনাহসমূহ থেকে তওবা করে দোয়া করা।
নিজের দীনতা-হীনতা ও অসহায়ত্ব প্রকাশ করা। দোয়ার মধ্যে ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ ব্যবহার করা। দোয়ায় সব মুসলমানকে শামিল করা। প্রথমে নিজের জন্য, অতঃপর পিতা-মাতা, অতঃপর স্ত্রী-সন্তান, অতঃপর সব মুমিন নর-নারীর জন্য দোয়া করা। সম্মিলিত দোয়ার ক্ষেত্রে শুধু নিজের জন্য দোয়া না করে সব মুসল্লিকে দোয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা। অর্থাৎ ‘আমি’-এর পরিবর্তে ‘আমরা’ এবং ‘আমার’ এর পরিবর্তে ‘আমাদের’ শব্দ ব্যবহার করা। (তিরমিজি, ২: ৩৫৭)। দোয়াকারী ও দোয়া শ্রবণকারী উভয়ের জন্য ‘আমিন’ বলা।
দোয়ার মধ্যে মাসনূন দোয়াসমূহের শব্দাবলি অবলম্বন করা। নিজের ছোট-বড় সব প্রয়োজন একমাত্র আল্লাহর কাছে চাওয়া। আসমাউল হুসনারঅছিলা দিয়ে দোয়া করা মুস্তাহাব। (আরাফ: ১৮০)। ইসমে আজমের মাধ্যমে দোয়া করা। (তিরমিজি, ৫: ৩৪৭৫)।
‘আমিন’ বলে দোয়া শেষ করা। (আবু দাউদ, ১: ৯৩৮)।
২১ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/মাহমুদ