শনিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৫, ০৭:৪৫:২৫

মারকুটে ধোনি যে কারণে মারতে পারছেন না

মারকুটে ধোনি যে কারণে মারতে পারছেন না

স্পোর্টস ডেস্ক: ভারতের ওয়ানডে অধিনায়ক মাহিন্দ্র সিং ধোনি জাতীয় দলে চান্স পাওয়ার পর তার ভয়ংকর ব্যাটিং দেখে সবাই ভেবেছিল ও একদিন অনেক বড় কিছু করবে। ভক্তদের প্রত্যাশা অবশ্য ধোনি পূরণ করেছেন। ভারতকে তিনি টি-২০ ও ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন। তার খেলার ধরণটা ঠিল অনেকটা এরকম-শেষ দশ ওভারে রানের বন্যা, বেধড়ক পিটুনি দিয়ে রানটাকে বাড়িয়ে নেওয়া। এত দিন ধরে এমনটাই হয়ে আসলেও এখন আর ধোনির ব্যাটে তেমটা হচ্ছে না। এমনটা হওয়ার কারণ হিসেবে ধোনি মনেকরেন, ওয়ানডের​ নতুন নিয়মের কারণে এখন থেকে স্লগ ওভারে রান তোলা কঠিন হয়ে গেছে। বিশেষ করে যে দল রান তাড়া করবে, শেষ দশ ওভারে ৬৫-৭০ রানের বেশি উঠবে না। দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে চলতি সিরিজের চার ম্যাচ শেষে ভারতের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের ধারণা, ক্রিকেটে স্লগ ওভারের ধারণায় চলে আসছে বড় ধরনের পরিবর্তন। ৫ জুলাই থেকে চালু হওয়া ওয়ানডের নতুন নিয়মগুলো বোলারদের জন্য কিছুটা নিশ্বাস ফেলার জায়গা করে দিয়েছে। ব্যাটিং পাওয়ার প্লে নেই, শেষ দশ ওভারে বাউন্ডারিতে একজন বাড়তি ফিল্ডার রাখার সুযোগও পাচ্ছে বোলাররা (আগের নিয়মে রাখা যেত চারজন)। এসবই শেষ দশ ওভারে আগের মতো ব্যাটিংটাকে আর ‘চার-ছয়ের অনুশীলন সেশন’ হতে দিচ্ছে না। ধোনিও স্বীকার করলেন সেটা, ‘এখন যেটা দেখছি, ৪০ থেকে ৫০ ওভারের সময়টাতে ক্রিজে গিয়েই বড় শটে দ্রুত ৮০-৯০ রান করা সহজ হচ্ছে না। এখন বেশির ভাগ দলই বলছে, “যদি রান তাড়া করো, শেষ দশ ওভারে যেন ৬৫ থেকে ৭০ রানের বেশি হাতে না থাকে।” কারণগুলোও ব্যাখ্যা করেছেন ধোনি: ১. বল নরম হয়ে যাওয়ায় সহজে ব্যাটে আসে না, তাতে স্ট্রোক খেলা অনেক কঠিন হয়ে যায়। ২. শুষ্ক পিচ ও আউটফিল্ডের কারণে বলের বাইরের দিকটা ক্ষয়ে যায়, তাতে রিভার্স সুইং পায় বোলাররা। ৩. সীমানার কাছে একজন বাড়তি খেলোয়াড় থাকায় বড় শটে রান পাওয়াটা আগের মতো আর সহজ নেই। গান্ধী-ম্যান্ডেলা সিরিজের প্রথম চারটি ওয়ানডে ধোনির কথাগুলোকে অনেকটা সমর্থন দিচ্ছে। চেন্নাইয়ে চতুর্থ ওয়ানডেতে শেষ দশ ওভারে ভারত রান করেছে ৬৯, হারিয়েছে ৫ উইকেট। দক্ষিণ আফ্রিকা তুলেছে ৬৪, ৩ উইকেটের খসিয়ে। তৃতীয় ওয়ানডের চিত্রটাও প্রায় একই। শেষ দশ ভারতের ৪ উইকেটে ৬৭, দক্ষিণ আফ্রিকার ৩ উইকেটে ৬০। সিরিজে একবারই কেবল শেষ দশ ওভারে ১০০ উঠেছে। সেটিও উইকেটে এবি ডি ভিলিয়ার্স ছিলেন বলেই। আরও ভালো বুঝতে এই তথ্যটাও সাহায্য করতে পারে আপনাকে। গত ওয়ানডেই শেষ চার ওভারে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা দুই দলই তুলতে পেরেছে মাত্র ১৮ রান! ভাবা যায়, ইনিংসের শেষ চার ওভারে ইকোনমি রেট ৪.৫! অথচ জুলাইয়ে এই নিয়মটি চালুর ঠিক আগের ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ভারত শেষ ১০ ওভারে ৯০ রান তুলেছিল। শেষ দশ ওভারে ক্রিজে ঝড় তোলার জন্য বিখ্যাত ধোনি যেন এখন হাত খুলে মারতেই ‘ভয়’ পাচ্ছেন, ‘নতুন নিয়মে বাউন্ডারিতে বাড়তি ফিল্ডার থাকায় ৪০ ওভারের পর ক্রিজে গিয়েই কোনো ব্যাটারের পক্ষে বড় শট খেলাটা সহজ হবে না।’ তবে শুধু নিয়মটা বদলেছে বলেই নয়, মারকাটারি ক্রিকেটের যুগে অস্তিত্ব রক্ষায় বোলাররাও হাজির হচ্ছে নতুন কৌশলে। মাপা ইয়র্কারের চেয়ে এখন লেংথ কিংবা ব্যাক-অব-দ্য লেংথ বল করার দিকেই বোলাররা ঝুঁকছে বলে মনে করেন ধোনি। বোল্ড করে নয়, উড়িয়ে মারতে চাওয়া ব্যাটসম্যানদের ক্যাচের ফাঁদে ফেলাই লক্ষ্য বোলারদের। সীমানার প্রান্তে বাড়তি একজন ফিল্ডার এই কৌশলে উৎ​সাহ জোগাচ্ছে। ক্রিকইনফো। ২৪ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/মাহমুদ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে