বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৫, ০৭:১৬:১৩

কল্যাণময় পথের দিশা আল-কোরআন

কল্যাণময় পথের দিশা আল-কোরআন

ইসলাম ডেস্ক: আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর উম্মতরা কিয়ামত পর্যন্ত যাতে সঠিক পথে থেকে চলতে পারে। সেজন্য মহান আল্লাহ তায়ালা নবীজীর উপর আল কোরআন অবতীর্ণ করেছেন। পূর্ণঙ্গ জীবন বিধান হিসেবে উম্মতদের জন্য এটা আল্লাহ পাকের একটা বিশাল নিয়ামত। মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, আল্লাহ বলেন, রোজার মাসে আমি কোরআন অবতীর্ণ করেছি। যা মানুষের জন্য কল্যাণময় পথের দিশা। এবং যা কল্যাণ ও অকল্যাণের পার্থক্যকারী। (বাকারা : ১৮৫)। হজরত অাব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. বলেন, রাসুল সা. বলেছেন, রোজা ও কোরআন কেয়ামতের মাঠে বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, হে আল্লাহ আমার প্রতিপালক! আমি এই বান্দাকে দিনের বেলায় পানাহার ও স্ত্রী সম্ভোগ তেকে বিরত রেখেছিলাম। তার ক্ষমার জন্য আমার সুপারিশ গ্রহণ করো। কোরআন বলবে, আমি তাকে রাতের নিদ্রা থেকে বিরত রেখেছি, তার ক্ষমার জন্য আমার সুপারিশ গ্রহণ করো। কেয়ামতের মাঠে উভয়ের সুপারিশ গ্রহণ করা হবে। (বায়হাকি শরিফ) রোজার সওয়াব অর্জনে প্রধান অবলম্বন কোরআন তেলাওয়াত তারাবিহ, তাহাজ্জুত ও নফল নামাজে। অধিক তেলাওয়াতের অভ্যাস করা, সময়, সুযোগ বের করে তেলাওয়াতে ডুবে থাকা। হযরত রাসুল সা. বলেন, কোরআন তেলাওয়াতকারী প্রতিটি বর্ণে দশটি সওয়াব পায়। আমি বলছি না, আলিফ লাম মিম-এর মধ্যে একটি অক্ষর। বরং আলিফ আলাদা, লাম আলাদা, মিম আলাদ বর্ণ। প্রতিটির জন্য ভিন্ন সওয়াব। কোরআন তেলাওয়াতে দেহমন সজীব হয়ে ওঠে এবং আধ্যাতিক শক্তি বাড়ে। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশি মুদ্রার নাম টাকা। সৌদি আরবের রিয়াল, আমেরিকায় ডলার, ইউরোপে ইউরো। পরকালের একটিই মুদ্রা, নাম-সওয়াব। কুরাআনের প্রতিটি বর্ণপাঠে দশটি সওয়াব। রোজায় সত্তরটি। টাকা-রিয়াল-ডলার-ইউরো উপার্জনের চেয়ে চিরস্থায়ী জগত পরকালের সওয়াব উপার্জনের প্রতিযোগিতা করা উচিত। সওয়াব অর্জনে রোজার চেয়ে উত্তম সময় আর নেই। কোরআনের অর্থ ও মর্ম বোঝার গতি ক্রমে কমে আসছে আমাদের জীবনে। শিল্পনন্দিত মুদ্রিত কোরআন বুকে নয়, আমরা সাজিয়ে রাখি শোকেসে। মাঝে-মধ্যে চুমো খেয়ে সম্মান জানাই। এমনওতো হয়, শ্রদ্ধাভরে ঘরের কুরআনটি পাঠিয়ে দেই মসজিদে। বাসাবাড়িতে এত সামগ্রীর ভিড়ে কোরআন রাখবো কোথায়! ওই আদুরে ছেলের মতো, যে মাকে উদ্দেশ্য করে বলে, বাসায় তোমার কষ্ট হয়, বৃদ্ধাশ্রম ভালো লাগবে। বৃদ্ধ বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমের জীবন্ত কবরে পাঠিয়ে ছেলে যে তৃপ্তি পায়, ঘরের কুরআন মসজিদে পাঠিয়েও আমাদের সে রকম উপলব্ধি। সত্যিই কোরআনের মর্মকথা আমরা বুঝি না। খুব সহজে রঙিন মোড়কে আমরা কোরআন পেয়েছি বলে। বুখারি শরিফে আছে মদিনা থেকে দূরে এক সাহাবির বসবাস ছিল। নিয়মিত রাসুল সা.-এর কাছে এসে কোরআন শিক্ষা সম্ভব ছিল না। তাই তিনি প্রতিদিন পথের ধারে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতেন। মদিনা থেকে কোনো কাফেলা আসতে দেখলেই ছুটে যেতেন। কোরআনের কোনো আয়াত মুখস্থ আছে কি না জানার জন্য। একটি আয়াতের জন্য সাহাবির দিনের পর দিন পথে অপেক্ষার কষ্ট আমরা কি অনুভব করতে পারব? আল্লাহ বলেন, এক কল্যাণময় কিতাব আমি অবতীর্ণ করেছি। যাতে মানুষ কুরআন অনুভব করে। বোধসম্পন্ন ব্যক্তিরা তা উপদেশ হিসেবে গ্রহণ করে। (সূরা সদ : ২৯) । ২৯ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/মাহমুদ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে