ইসলাম ডেস্ক: গোসল মানে পুরো শরীর ধোয়া। ইসলামি ফেকাহ মতে শরীয়তের দেয়া বিশেষ পদ্ধতি অনুযায়ী নাপাক দুর করার উদ্দেশ্যে অথবা সওয়াবের আশায় পুরো শরীর ধোয়াকেই গোসল বলে। তবে গোসলের জন্য উত্তম নিয়ম হলো, গায়ে কাপড় রেখে গোসল করা।
মানুষের সচারাচর যাতায়াত আছে এমন স্থানে নয় বরং আড়ালে-আবডালে গোসল করা। নারীদের বসে গোসল করার মঙ্গলজনক। পুরুষদের গায়েও কাপড় না থাকলে বসেই গোসল করা উচিত। তবে শরীর জুড়ে কাপড় থাকলে দাঁড়িয়ে করলেও বাঁধা নেই। গোসল অবস্থায় নিরব থাকাটাই ভালো।
তবে প্রয়োজনের কথা বলা যেতে পারে। গোসল অবস্থায় গায়ে একেবারে কাপড় না থাকলে কেবলামুখি হওয়া উচিত না। গোসলের জায়গা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হওয়া চায়। যে জায়গায় গোসল করবেন সেখানে মোটেও পেশাব করা সমীচিন নয়। গোসলের সুন্নত পদ্ধতি: ডান হাতে পানি নিয়ে দুই হাত কব্জি পর্যন্ত ধুয়ে নেবে। শরীরে নাপাক লেগে থাকলে পরিস্কার করবে। দুই হাত ভালোভাবে ধুয়ে অজু করবে।
কুলির সময় গলায় ও নাকের ভেতর ভালো করে পানি পৌঁছাতে হবে। গোসলের স্থানে পানি জমা হয়ে থাকলে গোসলের পর পা ধুয়ে নেবে। ফরজ গোসল হলেও অজুতে শুধুই বিসমিল্লাহই পড়বে। অন্য কোন দোয়ার প্রয়োজন নেই। অজু শেষে গায়ে পানি ঢালবে। তারপর প্রথমে ডান ও পরে বাম কাঁধে পানি ঢলবে।
পুরো শরীর ভালোভাবে ঘষতে হবে। সামান্য অংশ যেন শুকনো না থাকে এবং শরীর ভালভাবে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হয়। একাধিকবার পুরো শরীরে পানি দেওয়া যেতে পারে। অজুর সময় পা ধুয়ে না থাকলে এবার পা ধুয়ে নিতে হবে এবং সারা গা মুছতে হবে। শরিয়ত মতে গোসল আদায় হয়ে গেল।
গোসলের ৩ ফরজ : ১। কুলি করা, তবে গলার ভেতরে পানি পৌঁছাতে হবে (রোজা অবস্থায় শীতিলযোগ্য) ২। নাকে পানি দেওয়া ৩। পুরো শরীর ধোয়া। এক চুলও যেন শুকনো না থাকে। এ তিনটির কোন একটি ছুটে গেলে গোসল হবে না। শরীরও পাক হবে না।
মেয়েদের গোসলের নিয়ম: ১। মেয়েদের পুরো শরীর ধোয়া হলো ফরজ। তাদের খোঁপা যদি এমন হয় চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছতে কোনো অসুবিধা না হয় তাহলে খোলার প্রয়োজন নেই। তবে চুল যদি খুব ঘন হয় অথবা খোঁপা এমন শক্ত করে বাঁধা হয় যা না খুললে পানি পৌছবে না, তাহলে নারীর মাথার খোঁপা খুলতে হবে।
২। চুল যদি খোলা হয় তাহলে সব চুল ভিজানো এবং গোড়া পর্যন্ত ভালো করে পানি পৌছাতে হবে যেন একটিও চুল শুকনো না থাকে।
৩। নারী-পুরুষের আঙটি, এমন সব অলংকার যা ছিদ্র করে পরা হয়, যেমন নাকের বালি, কানের রিং বা দুল ইত্যাদির নেড়ে- চেড়ে এসব অলংকারের নীচে পানি পৌঁছাতে হবে। সূত্র : আল ফিকহুল মুয়াস্সির ১৬ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/মাহমুদ