রবিবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৫, ০৫:২৫:১৫

প্রচলিত দুটি জাল হাদিস

প্রচলিত দুটি জাল হাদিস

ইসলাম ডেস্ক: আমাদের সমাজে অনেক ভুল কথা-ভুল প্রথার প্রচলন আছে। বিশেষভাবে মানুষের মুখে-মুখে এমন কিছু কথা প্রচলিত আছে, যা অনেকেই হাদিস কিংবা রাসূল সা. এর কথা হিসেবে জানেন। অথচ প্রচলিত এই কথাগুলোর সঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. এর বাণীর আদৌ সম্পর্ক নেই। এগুলোকে বলে, জাল হাদিস। জাল হাদিসের মতো এমন ঘটনা কেবল আমাদের সময়ে ঘটেছে, আগে ঘটেনি তা নয়। আগের যুগেই এ ঘটনার উৎপত্তি। বিশেষজ্ঞদের মতে ৩৬ হিজরিতে এর সূচনা। উম্মাতের অতন্দ্র প্রহরী প্রখর ধী-শক্তিমান মুহাদ্দিসবৃন্দ নিরন্তর সাধনা করে রাসূলের হাদিস সংরক্ষণের জন্য এক নতুন শাস্ত্র তৈরি করে রিজাল শাস্ত্র বা সূত্রের ধারাবাহিকতার গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিবর্গ। এই শুদ্ধিকরণ মানদণ্ডে যেটা উত্তীর্ণ হবে কেবল সেটাই হাদিস বলে বিবেচিত হবে। এই নিখুত ছাঁকনির বদৌলতে আজ আমরা রাসূল ও তার সাহাবিদের সঠিক দিক-নির্দেশনাগুলো পেয়েছি। আমরা জাল হাদিসসহ সমাজের নানা অসঙ্গতি ও কুসংস্কার তোলে ধরবো। আজ দুটি জাল হাদিস নিয়ে আলোচনা করছি। এক.আপনি না হলে আসমান মহাবিশ্ব সৃষ্টি করতাম না: লোকমুখে এটি হাদিসে কুদসি হিসেবে যথেষ্ট প্রসিদ্ধ। অথচ হাদিস বিশারদগণ একমত যে, এটি অবান্তর, ভিত্তিহীন ও মিথ্যা বর্ণনা। বিশিষ্ট মুহাদ্দিস আল্লামা সাগানি রহ., মোল্লা আলি কারি ও আবদুল হাই লাখনবিসহ অন্যান্য মুহাদ্দিসগণ একবাক্যে একে জাল বলেছেন। হাদিসের সঙ্গে আপনি না হলে আসমান মহাবিশ্ব সৃষ্টি করতাম না-এর কোনো সম্পর্ক নেই। সূত্র : আল্লামা সাগানি, আল-মাউজুয়াত: পৃ. ৫২ ; মোল্লা আলি কারি, আল-আসরার, পৃ ১৯৪ ; আল-মাসনু, পৃ. ১১৬ ; আল-আজলুনি, কাশফুল খাফা ২/২১৪ দুই. জ্ঞান অন্বেষণের জন্য সুদূর চীন দেশে যাও: বাক্যটি আমাদের দেশে হাদিস হিসেবে খুব প্রসিদ্ধ। অথচ তা হাদিস নয়, বরং আরবি ভাষার প্রবাদ। অধিকাংশ মুহাদ্দিস একে জাল বলেছেন। তবে কথাটির বক্তব্য পুরোপুরি ঠিক আছে। জ্ঞানার্জনের জন্য দূরত্ব যতই হোক, সামর্থ থাকলে যাওয়া উচিৎ। কিন্তু আলোচ্য বাক্যটি হাদিস নয়। এ বাক্যটির বর্ণনার সনদে আবু আতিবা তরিফ ইবনে সুলায়মান নামে একজন বর্ণনাকারী আছে, যে হাদিস শাস্ত্রের ইমামদের কাছে অগ্রণযোগ্য বলে স্বীকৃত। ২২ নভেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২০১৫/এসএম/ডিআরএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে