মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৫, ০৭:৫৪:২৬

যুদ্ধের ময়দানে ইয়াসির (রা.) যেভাবে নামাজ আদায় করেছিলেন

যুদ্ধের ময়দানে ইয়াসির (রা.) যেভাবে নামাজ আদায় করেছিলেন

ইসলাম ডেস্ক: এক যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরছিলেন নবী সা.। সঙ্গে সাহাবীরা। পথে এক পাহাড়ি অঞ্চলে সন্ধ্যা হলো। রাত কাটানো সিদ্ধান্ত নিলেন এখানেই। পাহাড়ের কাছেই সমতল জায়গায় তাঁবু খাটানোর নির্দেশ দিলেন। সব আয়োজন সম্পন্ন হলে তিনি সাহাবাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘কাফেলা ও সৈন্যদলের পাহারায় কাকে দায়িত্ব দেয়া যায়?’ শুনে একজন মুহাজির ও এক আনসার সাহাবী উঠে বললেন, ‘এ দায়িত্ব আজকের রাতের জন্য আমাদের দিন।’ মহানবী সা. সন্তুষ্টচিত্তে তাদের আবেদন মঞ্জুর করলেন। তাদের নির্দেশ দিলেন, ‘পাহাড়ের ওই এলাকা দিয়ে শত্রু আসার ভয় রয়েছে, ওখানে গিয়ে তোমরা পাহারা দাও।’ মুহাজির সাহাবীর নাম আবদুল্লাহ ইবন বাশার রা. আর আনসার সাহাবীর নাম ছিল উমার ইবন ইয়াসির রা.। মহানবী সা. এর নির্দেশ মতো তাঁরা পাহাড়ের নির্দিষ্ট জায়গায় চলে গেলেন। তারপর আনসার মুহাজির সাহাবীকে বললেন, ‘আমরা দু’জন এক সঙ্গে না জেগে বরং পালা করে পাহারা দেই। রাতের দুই ভাগ করে একাংশ তুমি জাগবে, অপর অংশে জাগব আমি। এতে করে দু’জন একসঙ্গে ঘুমিয়ে পরার ভয় থাকবে না।’ এই চুক্তি অনুসারে রাতের প্রথম অংশে আবদুল্লাহ ইবন বাশার রা. ঘুমালেন। আর পাহারায় বসলেন উমার ইবন ইয়াসির রা.। পাশে আবদুল্লাহ রা. ঘুমাচ্ছেন। ইয়াসির রা. বসে ছিলেন পাহারায়। শুধু শুধু বসে বসে আর কতক্ষণ সময় কাটানো যায়। অলসভাবে সময় কাটাতে ভালো লাগছিল না তাঁর। কাজেই ওযু করে নামাজে দাঁড়ালেন। এমন সময় পাহাড়ের ওপাশ থেকে আসা শত্রুদের মধ্যে একজনের নজরে পড়ে গেলেন তিনি। এক ব্যক্তিকে ওভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আর কেউ আছে কিনা তা পরখ করার জন্য সাহাবীকে লক্ষ্য করে তীর ছুড়লো। পরপর দু’টি তীর গিয়ে তাঁর পাশে পড়ল। কিন্তু ইয়াসির রা. অচল অবিচল রইলেন। তৃতীয় তীর গিয়ে ইয়াসির রা. এর পায়ে বিদ্ধ হলো। তিনি তবুও নড়লেন না। এভাবে কয়েকটি তীর পরপর তাঁর গায়ে গিয়ে বিঁধল। ইয়াসির রা. তীরগুলো গা থেকে খুলে ফেলে রুকু সিজদাহসহ নামাজ শেষ করলেন। তারপর আবদুল্লাহ রা. কে ডেকে তুললেন। ডাক শুনে দ্রুত উঠে দাঁড়ালেন তিনি। দূরে পাহাড়ে এ পাশে দাঁড়ানো শত্রু একজনের স্থলে দুজনকে দেখে মনে করল, নিশ্চয়ই আরও লোক পাহারায় আছে। এই ভেবে আর সামনে বাড়তে সাহস পেলো না। পালিয়ে গেল। আবদুল্লাহ রা. জেগে উঠে ইয়াসির রা. এর রক্তাক্ত দেহের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘কেন তুমি আমাকে আগেই জাগাওনি?’ উমার ইবনে ইয়াসির রা. বললেন, ‘আমি নামাজে সুরা কাহাফ পড়ছিলাম। সুরাটা শেষ না করে রুকু দিতে মন চাইছিল না। কিন্তু ভাবলাম যদি তীর খেয়ে মরে যাই, তাহলে আদিষ্ট পাহারার দায়িত্ব পালন করা হবে না। তাই তাড়াতাড়ি রুকু সিজদাহ করে নামায শেষ করেছি। এ ভয় না থাকলে মরে গেলেও সুরা খতম না করে আমি রুকুতে যেতাম না।’-আমাদের সময় ২৪ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ/ রাসেল/মাহমুদ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে