নেক আমলের ফজিলত
ইসলাম ডেস্ক: যুগে যুগে আল্লাহ তায়ালা যত জাতিকে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন তাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি পবিত্র কোরআনের ভাষা অনুযায়ী আখেরি নবী (সা.)-এর উম্মতকেই মনোনীত করেছেন। আর এই শ্রেষ্ঠত্বের কারণ হল, এই উম্মত শুধু নিজের মুক্তির জন্যই নয়, বরং সব মানুষের মুক্তি আর কল্যাণের জন্য সৎকাজের আদেশ দেবে আর অসৎ কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখবে। মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘তোমরা সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মত, যে উম্মতকে বাহির করা হয়েছে মানুষের মঙ্গলের জন্য, তোমরা সৎ কাজের আদেশ কর, বরং অসৎ কাজের নিষেধ কর এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখ।’ (সূরাঃ আল ইমরান, আয়াতঃ ১১০)
আল্লাহর রাস্তায় বের হয়ে যারা নিজের জান এবং মালের কোরবানি করে, পথভোলা মানুষকে সঠিক পথের সন্ধান দেবে, মহান আল্লাহতায়ালা তাদের বহু ফজিলতের কথা পবিত্র কোরআনে এবং হুজুর (সাঃ)-এর হাদিস দ্বারা বর্ণনা করেছেন।
হজরত আনাস (রা.) বলেন, নবী করীম (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় এক সকাল অথবা এক বিকাল দুনিয়া এবং দুনিয়ার ভিতরে যা কিছু আছে তা অপেক্ষা উত্তম। অর্থাৎ যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় এক সকাল অথবা এক বিকাল মানুষের কল্যাণের জন্য ব্যয় করবে, তাকে সমগ্র দুনিয়া এবং এর ভিতরে যা কিছু আছে তা দান করার চেয়েই বেশি সওয়াব দান করা হবে।
হজরত হাসান এবং হজরত আলী (রা.)সহ ৮ সাহাবি থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি নিজ বাড়িতে বসে আল্লাহর রাস্তায় দান করে, সে এক টাকার বিনিময়ে ৭০০ টাকার ছদকা করার সওয়াব প্রাপ্ত হইবে। আর যে ব্যক্তি নিজে আল্লাহর রাস্তায় গিয়ে খরচ করে, সে এক টাকার বিনিময়ে ৭ লাখ টাকার ছদকা করার সওয়াব প্রাপ্ত হয়। অতঃপর নবী (সাঃ) কোরআনের আয়াত পাঠ করেন, যাহার অর্থঃ যাহাকে হোক ইচ্ছা আল্লাহপাক অগণিত সওয়াব দান করিবেন।’ (ইবনে মাযা)। এছাড়াও আল্লাহর পথে নামাজ, রোজা ও জিকিরের সওয়াবও অত্যধিক। প্রিয় নবী (সাঃ) ইরশাদ করেনঃ ‘আল্লাহর রাস্তায় নামাজ, রোজা ও জিকিরের সওয়াব আল্লাহর রাস্তায় খরচের তুলনায় সাতশত গুণ অধিক।’ (আবু দাউদ শরিফ)। বর্ণিত দুটি হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী বোঝা যায়, আল্লাহর রাস্তায় দানের সওয়াব ১-এর সাত লাখ আর ইবাদতের ফজিলত, খরচের তুলনায় সাতশত গুণ অধিক।
এছাড়াও হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বলেন, নবী করিম (সাঃ) ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় যাহার মাথাব্যথা হয় এবং সে উহার উপর সওয়াবের আশা রাখে, তাহার পূর্বের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।’
তাই সব মুমিন বান্দার উচিত হবে সময় এবং সুযোগমতো আল্লাহর রাস্তায় জান এবং মালের কোরবানি করে দ্বীনের শিক্ষা করা আর পথভোলা মানুষকে সত্য পথের সন্ধান দেয়া। সৃষ্টির সঙ্গে স্রষ্টার সুসম্পর্ক করে দেয়া। কল্যাণের পথে ডাকা আর অকল্যাণ বা মন্দ কাজ থেকে সবাইকে সাবধান করা। আর এতেই মানুষের প্রকৃত মুক্তি আর কামিয়াবী।
২৬ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ/ রাসেল/মাহমুদ